মোমিন তালুকদার,ময়মনসিংহ প্রতিনিধি: ঈদুল আযহা’র আর মাত্র কয়েকদিন বাকি। সময় যতই ঘনিয়ে আসছে ময়মনসিংহে কামার শিল্পীদের ব্যস্ততা ততই বেড়েই চলছে। কোরবানীর আনুসাঙ্গিক হাতিয়ার দা, বটি, ছুরি, চাপাতিসহ ধারালো জিনিস বানাতে দম ফেলার সময় নেই ময়মনসিংহে কামার শিল্পীদের। দিনরাত সমান তালে টুং টাং শব্দে মুখর ময়মনসিংহের কামার পল্লী। বছরের অন্যান্য সময়ের চেয়ে কুরবানীর সময়টা এ এলাকার কামার শিল্পীদের কাজের চাপ অনেকটা বেড়ে যায়। সেই সঙ্গে বেড়ে যায় তাদের আয় রোজগারও।জেলার উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে কামার শিল্পীদের তৈরি হাতিয়ারের ভাল কদর। ঈদের কয়েকদিন বাকি থাকলেও জেলার বিভিন্ন উপজেলার হাট-বাজারগুলোতে ইতিমধ্যে দা, বটি, ছুরি, চাকুসহ বিভিন্ন সামগ্রী উঠতে শুরু করেছে। তবে এখনো এসব জিনিস কেনার খুব একটা সারা নেই। সময় যতই ঘনিয়ে আসবে এসব হাতিয়ারের বেচা-কেনা তত বেড়ে যাবে বলে ব্যবসায়ীদের আশা। জেলার বিভিন্ন উপজেলার বিভিন্ন হাট ঘুরে দেখা গেছে কোরবানীর একটি ছুরি ৩শত ৫০টাকা থেকে ৪শত টাকা পর্যন্ত দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়াও বিভিন্ন সাইজের চাকু ৩০ টাকা থেকে ১শত টাকা, বটি ১শত ৫০ টাকা থেকে ৩শত টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা জানান, ঈদের আর মাত্র কয়েকদিন বাকি থাকলেও এখনও এসব হাতিয়ার কেনা-বেচা খুব একটা জমে উঠেনি। ক্রেতা কম হওয়ায় লাভ কম রেখে কিছু জিনিস বিক্রি করছেন তারা। তবে সময় ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে বেশি দামে এসব হাতিয়ার বিক্রি করতে পারবেন বলে ব্যবসায়ীরা আশা প্রকাশ করেছেন। কামার শিল্পীরা জানান, সারাবছর যত পন্য বিক্রি হয় এই ঈদেই বিক্রি হয় তার চেয়ে বেশি। কারন পশু জবাই করার জন্য ধারালো অস্ত্রের প্রয়োজন। আর পুরাতন এইসব অস্ত্র অনেকেই রাখেন না। সেই জন্য প্রতি বছর নতুন নতুন অস্ত্রের প্রয়োজন পরে।কয়েকজন কামারের সাথে কথা বললে তারা এই শিল্পকে টিকিয়ে রাখা নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেন। তারা জানান, কামার শিল্পের অতি প্রয়োজনীয় জ্বালানী কয়লা অপ্রতুলতায় দাম বেড়ে গেছে, বেড়েছে লোহার দামও। লোহা ও কয়লার দাম বাড়লেও সে তুলনায় কামার শিল্পীর উৎপাদিত পন্যের দাম বাড়েনি। ফলে কামার শিল্পীরা আর্থিকভাবে পিছিয়ে যাচ্ছে। অনেকে বাধ্য হয়ে পৈত্রিক পেশা পরিবর্ততন করছে। সন্তানরা যেন, এ পেশার সঙ্গে যুক্ত না হন সেই জন্য অনেকে তাদের সন্তানদের লেখাপড়া শেখাচ্ছেন।