চট্টগ্রাম থেকে সেন্টমার্টিন সরাসরি প্রমোদতরী ‘বে ওয়ান’
বিশ্বের সোয়া তিনশ’ ক্রুজ শিপের একটি ‘বে ওয়ান’। ২ হাজার অতিথি ধারণক্ষমতার অত্যাধুনিক প্রমোদতরীটি ১০৫ কোটি টাকা খরচে বাংলাদেশে এনেছে কর্ণফুলী শিপইয়ার্ড।
বৃহস্পতিবার (১৪ জানুয়ারি) থেকে চট্টগ্রাম-সেন্টমার্টিন রুটে চলাচল করবে এটি। জনপ্রতি সর্বনিম্ন ভাড়া ৩ হাজার টাকা, সর্বোচ্চ ৫০ হাজার।
প্রাথমিকভাবে রাত ১১টায় চট্টগ্রাম থেকে প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনের উদ্দেশে ছেড়ে যাবে। পৌনে তিনশ’ কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে পরদিন সকাল ৭টায় সেন্টমার্টিন পৌঁছাবে।
সপ্তাহে তিন দিন এ রুটে চলবে জাহাজটি।
সরেজমিন দেখা গেছে, শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাছে কর্ণফুলী নদীর ওয়াটার বাস টার্মিনালে নোঙর করেছে ‘বে ওয়ান’।
৪৫০ ফুট লম্বা, ৫৫ ফুট প্রস্থের বিলাসবহুল জাহাজটিতে ১৭ জন ক্রু এবং যাত্রীসেবার জন্য দেড়শ’ স্টাফ আছেন। এখানে আছে তারকা হোটেলের মতো প্রেসিডেন্ট স্যুট, রয়েল স্যুট, বাংকার বেড কেবিন, টু ইন বেড কেবিন, অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য আরামদায়ক চেয়ারসহ আধুনিক ব্যবস্থা। জাপানের কোবে শহরের মিতসুবিশি হেডি ইন্ডাস্ট্রিজে নির্মিত জাহাজটির ইন্টেরিয়র ও আসবাবে নতুনত্ব এনেছে কর্তৃপক্ষ। বাইরে মেঝেতে বসানো হয়েছে কৃত্রিম ঘাসের গালিচা। দেশি-বিদেশি খাবার নিয়ে উন্নতমানের রেস্তোরাঁ, স্বয়ংক্রিয় ভেন্ডিং মেশিন, কয়েন পরিচালিত ঝর্না। করোনা সচেতনতায় মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজারও রয়েছে প্রতিটি ফ্লোরে।
কর্ণফুলী শিপ বিল্ডার্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমএ রশিদ গণমাধ্যমে বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে দেশের পর্যটন শিল্পের উন্নয়নে ‘বে ওয়ান’ জাহাজটি আনা হয়েছে। এটি পর্যটন শিল্পে নতুন মাত্রা যোগ করবে। দেশি-বিদেশি পর্যটকদের নজর কাড়তে সক্ষম হবে।
১৯৯৪ সালে আমাদের শিপ বিল্ডার্স যাত্রা শুরু করে। প্রথমে বন্দরের জন্য ৫টি টাগবোট তৈরি করেছি। ‘বাংলার সৌরভ’ জাহাজ মেরামত আমাদের বড় অর্জন। পৃথিবীর কেউ চিন্তাও করেনি জাহাজটি চলবে। পৌনে ২৯ কোটি টাকা জরিমানার ঝুঁকি নিয়ে জাহাজটির ১৫০ ফুট ফেলে দিয়ে নতুন ভাবে তৈরি করতে পেরেছি। ১৬ হাজার টনের জাহাজটি এখনো সচল রয়েছে।
এ পর্যন্ত ৪ হাজার কোটি টাকার ড্রেজার নির্মাণ করে সরকারকে দিয়েছি। এখনো ড্রেজার নির্মাণ করছি। আপনারা শুনে খুশি হবেন ‘কাটার সাকশন’ নির্মাণে বিশ্বে দ্বিতীয় অবস্থানে আছি আমরা। এটি আমাদের দেশের জন্য ভাগ্যের ব্যবহার। কাটার সাকশন বিদেশে রফতানির সক্ষমতা অর্জন করেছি ইনশাআল্লাহ। এ পর্যন্ত ১২শ’ জাহাজ তৈরি করেছি, ৭-৮শ’ জাহাজ রিপেয়ার করেছি গত ২৫-২৬ বছরে। জাহাজ চালানোর ব্যবসা আমাদের ছিল না। আমাদের তৈরি ‘কর্ণফুলী এক্সপ্রেস’ জাহাজ গত বছর জানুয়ারিতে কক্সবাজার-টেকনাফ রুটে চালু করেছি। এ রুটে জাহাজ জীবনেও চলাচল করেনি। মানুষ এত ভালোভাবে এটি নিয়েছে। এটি আমাকে দেশের জন্য ক্রুজ শিপ আনার প্রেরণা দিয়েছে। জাপান থেকে এ জাহাজটি নিয়ে এসেছি।
এক স্টার্টে জাহাজটি ৯ দিনে বাংলাদেশে চলে এসেছে। পৃথিবীর সব দেশে এ জাহাজটি চলাচল করতে পারবে। এটি অত্যাধুনিক প্রযুক্তির এ জাহাজ ঝড় তুফান কাত করতে পারে না। ২ হাজার যাত্রী নিয়ে এটি সৌদি আরব যেতে পারবে। গতিবেগ ঘণ্টায় ২৪ নটিক্যাল মাইল, প্রায় ৪৮ কিলোমিটার। সাড়ে ১১ হাজার হর্সপাওয়ারের ২টি ইঞ্জিন আছে। ৩ মেগাওয়াটের ৩টি জেনারেটর আছে। জাহাজটিতে ওয়েস্ট ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট আছে, জাহাজের কোনো পানি বা বর্জ্য সরাসরি সাগরে পড়বে না। নিরাপদে স্বাচ্ছন্দ্যে যাত্রীরা ভ্রমণ করতে পারবেন। এটি দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করবে।
তিনি জানান, জাহাজটিতে প্রতিদিন খরচ হচ্ছে ১৮-২০ লাখ টাকা। এ ধরনের জাহাজ দেশে আরও চললে পর্যটকদের কাছে ভাবমূর্তি বাড়বে। দেশের টাকা খরচ করে বিদেশে ক্রুজ শিপে চড়তে যেতে হবে না।
এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আবহাওয়া অধিদফতরের ১-৪ নম্বর সংকেত দেখালেও জাহাজটি নিরাপদে চলাচল করতে পারবে। তবে মহাবিপদ সংকেত দিলে অন্যান্য বড় জাহাজের মতো এটিও নিরাপত্তার জন্য বহির্নোঙরে বা গভীর সাগরে অবস্থান নেবে।
বাংলাদেশ সরকার আন্তর্জাতিক আদালতের মাধ্যমে সমুদ্রসীমা অর্জন করেছি। সমুদ্রভ্রমণের জন্য ‘কর্ণফুলী এক্সপ্রেস’ ছাড়া বড় প্যাসেঞ্জার জাহাজ দেশে নেই। ব্লু ইকোনমি, মেরিটাইম ট্যুরিজমকে এগিয়ে নিতে চাই আমরা। সরকার নিরলস কাজ করছে। কিন্তু সরকার একার পক্ষে সব করা সম্ভব নয়। বেসরকারি উদ্যোক্তাদের এগিয়ে আসতে হবে। আমরা দেশের মানুষের রিক্রিয়েশনের জন্য, দেশের উন্নয়নের স্বার্থে ‘বে ওয়ান’ ক্রুজ শিপটি এনেছি। সরকার টু সরকার চুক্তি থাকায় কলকাতা-আন্দামানসহ ভারতের বিভিন্ন জায়গায় আমরা যাত্রী নিয়ে যেতে পারবো। অনুমোদন পেলে ব্যাংকক, ফুকেট, ইন্দোনেশিয়া, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন দেশে সার্ভিস দেওয়ার চেষ্টা করবো আমরা।
যদি সরকার অনুমোদন দেয় প্রতিবছর ২০-৫০ হাজার হাজি জাহাজে নিতে মাত্র ৭ দিন লাগবে। দরকার হলে আরও ৪-৫টি প্যাসেঞ্জার জাহাজ চার্টার করে নিয়ে আসব।
গত ৯ সেপ্টেম্বর পূর্ব চীন সাগর পেরিয়ে ১৫ সেপ্টেম্বর সিঙ্গাপুর ছাড়ে ‘বে ওয়ান’। আন্দামান সাগরও বঙ্গোপসাগর পাড়ি দিয়ে ১৯ সেপ্টেম্বর জাহাজটি চট্টগ্রামে পৌঁছে।
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
চট্রগ্রামের সাতকানিয়ার সন্তান সাবেক ছাত্রলীগ নেতা সাইফুদ্দিন ইমনকে আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপ-কমিটিতে রাখায় খুশীর বণ্যা বইছে উত্তরা এলাকায়। ঢাকা উত্তরের মেয়র আতিকুল ইসলামের পিএস হিসাবে কাজ করার সুবাদে দীর্ঘদিন যাবত উত্তরা এলাকায় বসবাস করে বিভিন্ন স্তরের দলীয় নেতা কর্মী সহ সর্বসাধারণের সাথে মিশে সদাচরণের মাধ্যমে সবার মন জয় করে নেয়া মিশুক ইমনের এই পদপ্রাপ্তিকে নিজেদের বিজয় হিসেবে দেখে আত্মতৃপ্তিতে ভোগছে পুরো উত্তরাবাসী।
উল্লেখ্য, কমিটি ঘোষনার পরদিন থেকেই ইমনের উত্তরার বাসায় ভীড় করছে সাতকানিয়া ও ঢাকাস্থ বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত তার বন্ধু বান্ধব নেতা কর্মী সহ নানান স্তরের মানুষ । এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল সন্ধায় উত্তরা এলাকার বিভিন্ন স্তরের মানুষ সমবেত হয়ে সাইফুদ্দিন ইমকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানায়।
কক্সবাজার: কক্সবাজারের চকরিয়ার হারবাংয়ে গরু চুরির অভিযোগে বৃদ্ধ মা ও মেয়েকে কোমরে রশি বেঁধে মারতে মারতে এলাকায় ঘুরিয়েছে স্থানীয় লোকজন। পরে সেখান থেকে তাদের হারবাং ইউনিয়ন পরিষদে এনে পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়।
এদিকে মা-মেয়েকে কোমরে রশি বেঁধে প্রকাশ্যে এলাকা ঘোরানোর ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়। পাশাপাশি এ ঘটনা নিয়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে। ভিডিওতে মা-মেয়েকে রশি দিয়ে বেঁধে মারতে মারতে নিয়ে যেতে দেখা যায়। এ সময় ভিডিওতে ইউনিয়ন পরিষদের চৌকিদারকেও দেখা গেছে।
পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায়, গরু চোরদের আটক করে পেটানো এবং রঁশি দিয়ে বেঁধে প্রকাশ্যে ঘোরানোর খবর পাওয়ার পর হারবাং ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. মিরানুল হক গ্রাম্য চৌকিদার পাঠিয়ে জনতার রোষানল থেকে তাদের উদ্ধার করে পরিষদে নিয়ে আসেন। এর পর তাদের হারবাং ফাঁড়ির পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়। পরে গরুর মালিকের দায়ের করা মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে নেওয়া হয়। এ সময় আদালত তাদের জেলহাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেন।
ওই মামলার আসামিরা হলেন, কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার বারবাকিয়া ইউনিয়নের তিন নম্বর ওয়ার্ডের মোহাম্মদ ছুট্টু (২৭), চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার কুসুমপুর ইউনিয়নের এক নম্বর ওয়ার্ডের শান্তিরহাট এলাকার শহীদের কলোনীর পারভীন আক্তার (৪০), ছেলে মো. এমরান (২১), মেয়ে সেলিনা আক্তার শেলি (২৮) ও রোজি আক্তার (২৩)। প্রথমজন ছাড়া তিন নারী ও দুই পুরুষ একই পরিবারের সদস্য।
হারবাং পুলিশ ফাঁড়ির সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) পারসিত চাকমা বাংলানিউজকে বলেন, হারবাং পুলিশ ফাঁড়ি আর ইউনিয়ন পরিষদ ভবন পাশাপাশি। লোকজন ওই মা-মেয়েসহ সবাইকে ইউনিয়ন পরিষদে নিয়ে আসলে পুলিশ গিয়ে তাদের উদ্ধার করে। এসময় তাদের হেফাজত থেকে একটি স্প্রে’র বোতল, বাট ছাড়া একটি ছোরা, একটি কালো স্কচটেপ, একটি মোবাইল ও গাড়ির চাবি জব্দ করা হয়। এ ঘটনায় গরুর মালিক বাদী হয়ে চকরিয়া থানায় মামলা করলে পরে তাদের আদালতে প্রেরণ করা হয়। আদালত তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাবিবুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, গরু চুরির ঘটনা যেমন অপরাধ, তেমন আইনের দৃষ্টিতেও গর্হিত অপরাধ নারীর প্রতি অমানবিকতা। তাই কারা নারীদের ওপর এমন গর্হিত কাজ করেছে, তাদের শনাক্তের চেষ্টা চলছে। তাদের বিরুদ্ধেও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকে এ ঘটিনাকে হারবাং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিরানুল ইসলামের ষড়যন্ত্র বলে উল্লেখ করেন।
এ বিষয়ে বক্তব্য জানার জন্য চেয়ারম্যানের মোবাইলে একাধিকবার কল করা হলেও তার বন্ধ পাওয়া যায়।
ছবি বিকৃত করে ফেইসবুকে শিপ্রার ব্যক্তিগত ছবি পোস্টকারী পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কক্সবাজার মডেল থানায় মামলা করতে গেলেও মামলা নেয়নি পুলিশ। মঙ্গলবার রাত ১২টার দিকে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় মামলা করতে যান শিপ্রা।
এ সময়, কক্সবাজার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ঘটনাস্থল রামু থানা ও বিশেষ ট্রাইব্যুনালে মামলার পরামর্শ দিয়েছেন। পুলিশের মামলায় জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শিপ্রা দেবনাথের ব্যক্তিগত ছবি-ভিডিও ফেসবুকসহ নানা মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনায় জড়িতদের বিচার চেয়ে শিপ্রা প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। তাকে হেনস্তায় জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলা করারও ঘোষণা দেন তিনি।
এছাড়াও, এই বিষয়ে জনস্বার্থে রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মনোজ কুমার ভৌমিক। রিট আবেদনে শিপ্রাকে নিয়ে ফেসবুকে উসকানিমূলক পোস্ট করায় পুলিশের দুই কর্মকর্তা-সাতক্ষীরার পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান এবং ঢাকা মহানগর দক্ষিণের পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের এসপি মিজানুর রহমান শেলির বিষয়ে তদন্তেরও নির্দেশনা চাওয়া হয়।
এর আগে,ব্যক্তিগত ছবি ফেসবুকে পোস্টকারী পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করবেন বলে জানান শিপ্রা দেবনাথ। নিহত মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদের সহযোগী ও রাজধানীর স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শিপ্রা দেবনাথ নিজেই সোমবার বেসরকারি চ্যানেলে এক ভিডিও বার্তায় একথা বলেন।
শিপ্রা দেবনাথ বলেন, ‘আমি স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে অষ্টম সেমিস্টারে অধ্যয়নরত, এবং ফ্রিল্যান্সার মিডিয়া কর্মী। আজ একটি নৃশংস ঘটনা দেশবাসীর কাছে তুলে ধরতে চাই।’
তিনি বলেন, ‘পুলিশ বাহিনী আমাদের গর্ব। অথচ ৩১ জুলাই রাতে এই বাহিনীর কুখ্যাত ওসি প্রদীপ ও তার সহচর ইন্সপেক্টর লিয়াকত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদকে ঠাণ্ডা মাথায় গুলি করে হত্যা করে।’
পুলিশের বিরুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ডিভাইস নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ করে শিপ্রা বলেন, ‘মেজর সিনহা হত্যাকাণ্ডের পর রাতে এসে আমাদের কটেজ থেকে পুলিশ আমাদের দুটি মনিটর, ল্যাপটপ, ডেস্কটপ, ক্যামেরা, লেন্স, তিনটি হার্ডড্রাইভ এবং আমাদের ফোন ডিভাইস সব নিয়ে যায়। জব্দ তালিকায় যার কোনোটির কোনো উল্লেখ নেই। আমি জানি না, এখন কীভাবে বা কার কাছে সেসব ফেরত চাইব।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের পার্সোনাল প্রোফাইল ও ডিভাইস থেকে সে সব বিভিন্ন ছবি চুরি করে কিছু বিকৃত মস্তিষ্কের দায়িত্বশীল অফিসাররাই ফেসবুক ও সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করেছেন। আমার নামে খোলা হয়েছে ফেক ফেসবুক আইডি, ইনস্টাগ্রাম আইডি। আমার ব্যক্তি জীবনকে যারা অসহনীয় করে তুলেছেন বিভিন্ন ছবি ও ভিডিও তৈরির মাধ্যমে, তাদের প্রত্যেকের জন্য আমি তথ্য প্রযুক্তির ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করব, কথা দিলাম।’
‘আমাকে সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করে এভাবে আমার ব্যক্তিগত জীবনকে নিগৃহীত করার প্রচেষ্টা এ বাংলাদেশের আইনে কি শাস্তি যোগ্য অপরাধ নয়? আমি সমস্ত পুলিশ বাহিনীকে দায়ী করছি না। এখানে অনেক সৎ অফিসার রয়েছেন। কিন্তু এরূপ হত্যাকারী কর্মকর্তা এবং একজন নারীকে সামাজিক মাধ্যমে বিকৃতভাবে উপস্থাপনকারী অসুস্থ মানসিকতা সম্পন্ন কিছু পুলিশ সদস্যদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় না আনা হলে, এই কলঙ্কের দায়ভার জাতি সম্পন্ন বাহিনীর উপর ন্যস্ত করবে।’
শিপ্রা দেবনাথ আরো বলেন, ‘একজন মানুষ হত্যাকে ধামাচাপা দেওয়ার জন্য আমার টুঁটি চেপে ধরে আমাকে আত্মহননের দিকে ঠেলে দিলে লাখো তরুণ-তরুণী এর প্রতিশোধ নেয়া থেকে নিশ্চয়ই বিরত থাকবে না।’
নিউজ ডেস্কঃ” এসপির ত্রিমুখী নিশ্ছিদ্র ছকেই মেজর সিনহার নৃশংস হত্যাকান্ড”
সেনাবাহিনীর সাবেক মেজর সিনহা টানা কয়েকদিন ইয়াবা বাণিজ্যের নেপথ্য কাহিনী নিয়ে ডকুমেন্টারি তৈরিকালেও বিপদমুক্ত’ ছিলেন, কিন্তু শেষ মুহূর্তে টেকনাফের ওসি প্রদীপ কুমারের সাক্ষাৎকার রেকর্ড করাটাই তার জন্য কাল হয়ে দাঁড়ায়। ক্রসফায়ারের নামে নৃশংসভাবে খুন করা অসংখ্য মানুষের রক্তে রঞ্জিত প্রদীপ কুমারও ভিডিও সাক্ষাৎকার দেয়ার সময় বারবারই কেঁপে উঠেন। মেজর সিনহা’র তথ্যবহুল প্রশ্নের পর প্রশ্নে চরম অস্বস্তিতে পড়েন ওসি। নানা অজুহাতে ভিডিও সাক্ষাৎকার এড়ানোর সব কৌশল খাটিয়েও ব্যর্থ ওসি প্রদীপ বাধ্য হয়েই প্রশ্নবানে জর্জরিত হতে থাকেন, ভিডিওচিত্রে মেজরের উদঘাটন করা নানা তথ্যের সামনে সীমাহীন নাস্তানাবুদ হন তিনি।
মেজর সিনহা হত্যাকাণ্ডের দিন বিকেল চারটার দিকে টেকনাফের বহুল বিতর্কিত ওসি প্রদীপ কুমার দাস ওই ডকুমেন্টারি ভিডিও সাক্ষাৎকারের ফাঁদে পড়েন। প্রত্যক্ষদর্শী একাধিক সূত্র জানায়, ক্রসফায়ারে অতিমাত্রায় উৎসাহী ওসি প্রদীপ ও তার সহযোগিরা ইয়াবা বাজারজাত ও পাচারের ক্ষেত্রেও প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ ভূমিকার কথা স্বীকার করতেও বাধ্য হন। সফল সাক্ষাৎকারটি গ্রহণ করেই মেজর সিনহা আর একদণ্ড সময় ক্ষেপণ করেননি। ঝড়ের বেগে থানা থেকে বেরিয়ে এসে নিজের গাড়িতে উঠে বসেন। তার সঙ্গে ভিডিও রেকর্ডিংয়ে ব্যস্ত থাকা সাহেদুল ইসলাম সিফাতও ক্যামেরা, ট্রাইপড, ব্যাগ গোছাতে গোছাতেই ছুটে গিয়ে গাড়িতে উঠতেই টেকনাফ সদর ছেড়ে গাড়িটি ছুটতে থাকে উত্তর দিকে, বাহারছড়ার পথে। বাহারছড়া সংলগ্ন মারিসঘোণা এলাকাতেই বসবাস করেন চলচ্চিত্রের ফাইটিং গ্রুপ পরিচালনাকারী ইলিয়াস কোবরা। হঠাত তার টেলিফোনে করা আমন্ত্রণ পুরোপুরি এড়িয়ে যেতে পারেননি মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান।
এদিকে থানা থেকে মেজর সিনহা বেরিয়ে যেতেই ওসি প্রদীপ অচিরেই বড় রকমের বিপদের আশঙ্কায় তৎক্ষনাত কক্সবাজারের এসপি মাসুদকে ফোন করে বিস্তারিত জানিয়ে দেন। সব শুনে এসপি নিজেও উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। কয়েক মিনিটেই এসপির নির্দেশনায় তৈরি হয় মেজর সিনহা’র নৃশংস হত্যার নিশ্ছিদ্র পরিকল্পনা।
আলাপ আলোচনা শেষে এসপি-ওসি এমনভাবেই ত্রিমুখী মার্ডার মিশন সাজিয়েছিল- সেই ফাঁদ থেকে মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খানের প্রাণে বাঁচার কোন সুযোগই ছিল না।
পরিকল্পনার অংশ হিসেবে চলচ্চিত্রের ফাইটিং গ্রুপের পরিচালক ইলিয়াস কোবরএক দায়িত্ব দেওয়া হয়, আতিথেয়তার নামে নানা কৌশলে সন্ধ্যা পর্যন্ত মেজর সিনহাকে তার নিভৃত পাহাড়ি গ্রামে আট্কে রাখার। চলচ্চিত্রের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার পরিচিতি থাকলেও ইলিয়াস কোবরা ইদানিং ’ক্রসফায়ার মিট মিমাংসার দালালি’ কাজেই সক্রিয় হয়ে উঠেছিলেন। ক্রসফায়ারের তালিকায় নাম থাকার গুজব ছড়িয়ে অসংখ্য মানুষকে গোপনে ওসি প্রদীপের সঙ্গে সমঝোতা করিয়ে দিয়ে টেকনাফের শীর্ষ দালাল হিসেবে বেশ নামডাক ছড়িয়ে পড়েছে কোবরার। তবে ক্রসফায়ারের কবল থেকে জীবন বাঁচানোর সমঝোতায় ওসি প্রদীপ হাতিয়ে নিয়েছেন ১০ লাখ থেকে কোটি টাকা পর্যন্ত। অন্যদিকে দালালির কমিশন হিসেবে ইলিয়াস কোবরাকেও মাথাপিছু এক লাখ থেকে পাঁচ লাখ টাকা পাইয়ে দিয়েছেন প্রদীপ।
ওসিসহ পুলিশ প্রশাসনের কাছে পরীক্ষিত দালাল ইলিয়াস কোবরা ঠিকই তার উপর অর্পিত দায়িত্ব অক্ষরে অক্ষরে পালন করেছেন। মারিসঘোণায় নিজের বাগানবাড়ি ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেখার নামে ইলিয়াস কোবরা সেদিন বিকেল সাড়ে চারটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত নির্জন পাহাড়েই নিজ হেফাজতে রেখেছিলেন মেজর সিনহাকে। এ সময়ের মধ্যে মেজরের অবস্থান, কতক্ষণ পর কোন রাস্তায় কোথায় যাবেন সেসব তথ্য জানিয়ে কোবরা ৯টি এসএমএস পাঠান ওসিকে।
========
বিশেষ প্রতিবেদকঃঃ কডাউনকে কাজে লাগিয়ে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে বাল্যবিবাহ করাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে
বড়ঘোপের কাজী মোজাম্মেলের বিরুদ্ধে।ওই সব বাল্যবিবাহ বন্ধ করতে হিমসিম খাচ্ছেন খোদ থানা পুলিশ।
এলাকাবাসী জানান, লকডাউনে শুধু অমজাখালীতে ২০/২৫ টি বাল্যবিবাহ হয়েছে। মাইক বাজিয়ে কিংবা উৎসব মুখর পরিবেশে ধুমধাম করে বিবাহ অনুষ্টান করতে না পারলেও থেমে নেই বিবাহ বন্ধনের এই কাজ। লকডাউনের বাধ্যবাধকতায় আনুষ্টানিকতা গোপন থাকার সুযোগকে কাজে লাগিয়ে চলছে এসব বাল্যবিবাহ। এ সুযোগ লুপে নিচ্ছে স্বয়ং নিকাহ রেজিষ্টারগণ। এদের মধ্যে
অন্যতম বলে অভিযোগ উঠেছে
বড়ঘোপের কাজী রুহুল মান্নান হেলালীর সহকারী মোজাম্মেলের বিরুদ্ধে। বেশি টাকা হাতিয়ে নিয়ে অবৈধভাবে ডুপ্লিকেট খাতায় কাবিন করান এই মোজাম্মেল। পরে বয়স পুর্ণ হলে আসল নিকাহ-রেজিঃ বইতে লিপিবদ্ধ করেন বলে জানা গেছে।
পুলিশ সুত্রে জানা গেছে, কুতুবদিয়ার বড়ঘোপ ইউনিয়নের মগডেইল এলাকার জয়নাল আবেদিনের কন্যা কানিজ ফাতেমা জেকি (১৫) এর সাথে একই ইউনিয়নের মধ্যম অমজাখালী গ্রামের আবু তাহেরের ছেলে রফিকুল ইসলাম (২৫) বিবাহ অনুষ্ঠানের কাবিননামা সম্পাদন করেন অভিযুক্ত কাজী মান্নানের সহকারী মোজাম্মেল। বিবাহ অনুষ্ঠানের দিন বুধবার (১০জুন) রাত ১০টায় খবর পেয়ে বরের বাড়িতে গিয়ে বাল্যবিবাহটি পন্ড করেন ওসি মোঃ দিদারুল ফেরদাউসের নির্দেশে এসআই মোস্তাক। পুলিশ ফোর্স যাচ্ছে খবর পেয়ে কনের আত্মীয় স্বজন কনে কে নিয়ে পুলিশের চোখ ফাঁঁকি দিয়ে কনের বাড়িতে চলে যায়। বরের বাড়ির বিবাহ অনুষ্টান থেকে অন্যান্য আত্মীয়রা পালিয়ে গেলেও পুলিশ বিবাহ অনুষ্টান থেকে বরের পিতাকে আটক করে কনের বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখান থেকে রাত ১২ টার দিকে কনের পিতাকে আটক করে পুুুলিশ। পরে বর ও কনের দুই পিতা থেকে ১৮ বছরের আগে কনেকে বরের বাড়িতে নামাই না দিতে মুছলেখা নিয়ে তাদের ছেড়ে দেন বলে
জানান এসআই মোস্তাক।
অভিযুক্ত বড়ঘোপ ইউনিয়ের দায়িত্ব পালনকারী কাজীর সহকারী মোজাম্মেল
জানান, কাবিন করতে দুইপক্ষ আমার কাছে আসছিল। আমি কাগজপত্র দেখেছি। বয়স কম হওয়ায় বিয়েটি সম্পাদন করাইনি। কেননা, এটি আইন বিরোধী। কখনো বাল্যবিবাহ করতে কাউকে উৎসাহ দিইনি। টাকা নিয়ে বাল্যবিবাহ পড়ানোর কথা অস্বীকার করেন তিনি।
ওসি দিদারুল ফেরদাউস জানান, বর-কনে সহ তাদের অভিভাবককে ১৫জুন সকালে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে থানায় হাজির হতে বলা হয়। কাগজপত্রে বয়স কম হওয়ায় মুচলেকা আদায় করে প্রথম বারের মতো সতর্ক করে অভিভাবকের জিন্মায় তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। বয়স পুর্ণ না হওয়া পর্যন্ত কনেকে বিয়ের পিড়িতে না বসাতে অভিভাবকদের নিষেধ করা হয়েছে।
এদিকে, বাল্যবিবাহ পন্ড করার এক দিন পর ফের বরের বাড়িতে কনেকে নিয়ে যাওয়ায় ঘটনায় পুলিশের ভুমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে এলাকাবাসী। সেই সাথে বাল্যবিবাহ পড়ানো কাজী মোজাম্মেল ও আকদ পড়ানো মৌলবী মধ্যম অমজাখালী জামে মসজিদের ইমাম হাফেজ মাহমুদুল হক সহ বাল্যবিবাহে জড়িত বর রফিকুল ইসলাম এবং দুই পরিবারের অভিভাবকদের আইনের আওতায় আনার দাবী জানিয়েছে এলাকাবাসী। নতুবা বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে না বলে মত প্রকাশ করেন সচেতনমহল।
ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের আঘাতে প্রাথমিকভাবে গতকাল বুধবার পর্যন্ত ১০ জন মারা যাওয়ার তথ্য জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমাজের্ন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম। তবে এর মধ্যে ছয়জনের পরিচয় জানা গেছে।
আজ বৃহস্পতিবার এই তথ্য জানানো হয়েছে। হেলথ ইমাজের্ন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের সহকারী পরিচালক ডা. আয়শা আক্তার এই তথ্য জানান।
নিহতদের মধ্যে যাদের পরিচয় জানা গেছে তাদের মধ্যে পটুয়াখালীর কলপাড়ায় সৈয়দ শাহ আলম (৫৪) নামে এক স্বেচ্ছাসেবী নৌকাডুবে মারা যান। গাছচাপা পড়ে মারা গেছে একই জেলার গলাচিপার পানপট্টি এলাকার রাশেদ (৫) ও ভোলার চরফ্যাশনের মো.সিদ্দিক ফকির (৭২)। ট্রলারডুবে মারা গেছেন ভোলার বোরহানউদ্দিনের রফিকুল ইসলাম (৩৫)। এ ছাড়া দেয়াল চাপা পড়ে মারা গেছেন পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ার শাহজাহান মোল্লা (৫৫)। আর চট্টগ্রামের সন্দ্বীপে সালাউদ্দীন (১৬) নামে একজন মারা গেছেন।
এ ছাড়াও যশোর চৌগাছা উপজেলার চাঁদপুর গ্রামে ঘূর্ণিঝড় আম্পানের তাণ্ডবে ভেঙে পড়া গাছের নিচে চাপা পড়ে মা-মেয়ের মৃত্যু হয়েছে। তারা হলেন- ওই গ্রামের মৃত ওয়াজেদ আলীর স্ত্রী খ্যান্ত বেগম(৪৫) ও তার মেয়ে রাবেয়া(১৩)
সাতক্ষীরায় একজন ও ঝিনাইদহে একজন মারা গেছেন।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের ঊধ্বর্তন এক কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, প্রকৃত ক্ষয়ক্ষতির হিসেব পেতে একটু সময় লাগবে। সব জেলা প্রশাসনের কাছ থেকে তথ্য নিয়ে তারা পূর্ণাঙ্গ তথ্য জানাবেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার সারা রাত তাণ্ডব চালানোর পর ঘূর্ণিঝড় আম্পান এখন একেবারেই দুর্বল হয়ে গেছে। আজ বৃহস্পতিবার ভোরের দিকে ঘূর্ণিঝড় আম্পান স্থল নিম্নচাপে পরিণত হয়ে আরও উত্তর–পূর্ব দিকে সরে গেছে। আজ সকালে আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক সামছুদ্দীন আহমেদ প্রথম আলোকে এই তথ্য জানান।
কুমিল্লা ৬৫ বছর বয়সী নানার সাথে অষ্টম শ্রেণীতে পড়ুয়া নাতনীর বিয়ের খবরে পুরো এলাকা চাঞ্চল্যকর অবস্থা বিরাজ করছে। জানা যায়, ১০ মে রবিবার লালমাই উপজেলার পেরুল দক্ষিণ ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ড পেরুল গ্রামের দীঘির পাড় বাড়ির শামছুল হক শামু পশ্চিম পেরুল গ্রামের ইমাম হোসেন মেয়ে মরিয়ম আক্তার কে দীর্ঘদিন যাবত প্ররোচনা দেখিয়ে শেষ পর্যন্ত ভুলিয়ে ৫লক্ষ টাকা দেনমোহর ও ১লক্ষ টাকা উসুল দিয়ে বিয়ে করে।
নাতনী মরিয়ম আক্তার পেরুল উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রী। স্কুলে যাওয়া আসার সময় মরিয়ম শামছুল হক শামুর রিক্সায় করে যাতায়াত করতেন। তাছাড়া, বর শামছুল হক শামুর ছোট মেয়ে এবং বর্তমান স্ত্রী মোসা: মরিয়ম আক্তার একই ক্লাসের ছাত্রী।
বর শামছুল হক শামু বিয়ের ঘটনা সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন। মরিয়ম আক্তার সম্পর্কে আমার নাতনী। দীর্ঘ দিন দরে তাদের সাথে আমার পারিবারিক সম্পর্ক। তাদের বিপদে আপদে আমি সবসময় ছিলাম। আসা যাওয়ার মাধ্যমে আমরা একে অপরকে ভালোবাসি। মরিয়ম আমার রিক্সা করে স্কুলে আসা যাওয়া করত।
এই বুড়ো বয়সে আপনি কেন বিয়ে করছেন বলে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, আমার বউ অপারেশনের রোগী সংসারে কাজ করতে পারেনা তাই করেছি। তাছাড়া আমরা দুজনের সম্মতিতেই বিয়ে হয়েছে। তিনি আরো বলেন, ৫লক্ষ টাকা দেনমোহর ও ১ লক্ষ টাকা উসুলে তাকে আমি বিয়ে করি।
এক লক্ষ টাকা উসুলের মধ্য আমি তাকে ১০ হাজার টাকা দিয়ে একটি কানের জিনিস দেই এবং নগদ ১হাজার ৫০০ টাকা দেই। মরিয়ম তো আপনার মেয়ের বয়সী অষ্টম শ্রেণীতে পড়ে তার বয়স ১৪ বছর আপনি কিভাবে বিয়ে করলেন এমন প্রশ্ন করলে বড় শামসু বলেন, মরিয়মের বয়স ২০ বছর তিন মাস। আপনি চেয়ারম্যান অফিসে যান কম্পিউটারে গিয়ে দেখেন।
আপনি কোথায় কোন কাজী অফিসে বিয়ে করেছেন বলে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, কোটে বিয়ে করেছি। কোন কোটে বিয়ে করেছেন প্রশ্ন করলে তিনি বলেন আর কিছু বলতে পারব না। আমি মূর্খ মানুষ আপনি চেয়ারম্যানের কাছে যান উনি সব বিচার করেছে উনি সব জানে এই কথা বলে তিনি ফোন কেটে দেন। বর শামসুল হক শামুর ২ মেয়ে ৪ ছেলে। এর মধ্য ১ ছেলে ১ মেয়েকে বিয়ে দিয়েছে।
এবিষয়ে মরিয়মের বাবা ইমাম হোসেন জানান, শামসু আমার বাড়ির কজ করত। আমি ঢাকায় একটি প্রাইভেট কোম্পানিতে চাকরি করি। আমার পরিবারে বিভিন্ন কাজ সে করে দিত। তাকে আমি খুব বিশ্বাস করতাম। সে আমার মেয়েকে প্ররোচনা দিয়ে বিয়ে করে। সে একজন রিকশাচালক। তার ঘরে স্ত্রী সন্তান রয়েছে। এই বয়স্ক একটা লোকের সাথে আমার মেয়ে কিভাবে সংসার করবে। আমি গরিব বলে কারো কাছে বিচার পাচ্ছি না।
এবিষয়ে পেরুল দক্ষিণ ইউনিয়নে চেয়ারম্যান সফিকুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, বিয়েটি আইনগত ভাবে হয়েছে। এটি কোন বাল্যবিবাহ নয়। মেয়ের বয়স জন্ম সনদ অনুযায়ী ২০ বছর তিন মাস। আমি ইউনিয়ন পরিষদে তাদেরকে ডেকে সকল কাগজ পত্র দেখেছি। যা উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে অবগত করেছি।
এ বিষয় লালমাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইয়াসির আরাফাত বলেন, বিষয়টি আমি চেয়ারম্যানের কাছ থেকে শুনেছি। বিষয়টি আমরা তদন্ত করছি।
কক্সবাজারে করোনায় আক্রান্ত এক যুবকের বিরুদ্ধে পাওনা টাকা আদায়ের জন্য এক সুস্থ ব্যক্তিকে জড়িয়ে ধরার অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার জেলার লিংকরোড স্টেশনে এ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, লকডাউন অমান্যকারী করোনা আক্রান্ত ওই রোগী (৩২) কক্সবাজার সদর উপজেলার ঝিলংজা ইউনিয়নের পশ্চিম মুকতারকুল গ্রামের বাসিন্দা। পেশায় সিএনজি চালিত ট্যাক্সি ব্যবসায়ী। তিন দিন আগে তার করোনা পজিটিভ ধরা পড়ে।
ঝিলংজা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান টিপু সুলতান জানান, করোনা আক্রান্ত যুবক বেপরোয়া আচরণের সালিশ-বিচার নিয়ে আমরাও বিরক্ত হয়ে পড়েছি। তিনি লকডাউন না মেনে হরদম মোটরসাইকেল নিয়ে চলাচল করায় স্থানীয়রাও বিপাকে পড়েছেন।
ইউপি চেয়ারম্যান আরো জানান, করোনা পজিটিভ হওয়ার পর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) গত রবিবার তাকে নিজ ঘরে আইসোলেশনে থেকে চিকিৎসার পরামর্শ দেন। সেই সাথে পাড়াটিও লকডাউন ঘোষণা করা হয়। কিন্তু একদিন পরেই তিনি লকডাউন অমান্য করার কাজ শুরু করে দেন। সর্বশেষ লিংকরোড স্টেশনের এক দোকানির কাছে পাওনা টাকা আদায়ের জন্য হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন। পরে তাকে আজকে আইসোলেশনে পাঠানো হয়েছে।
জানা গেছে, পাওনা টাকা আদায়ের কৌশল হিসাবে ওই রোগী নিজেই উত্তেজিত হয়ে দোকানিকে ঝাপটে ধরে বলেন, করোনায় আমিও মরব-তুইও মর।
এলাকার ইউনিয়ন পরিষদ মেম্বার নাসির উদ্দিন জানান, করোনা রোগীর ‘করোনা হামলার’ খবর পেয়েই আমি এবং চেয়ারম্যান সাহেব দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে যাই। হামলার শিকার ওই ব্যক্তিকে আমরা দ্রুত সাবান নিয়ে গোসল করার ব্যবস্থা করি।
এ বিষয়ে কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহমুদ উল্লাহ মারুফ জানান, তিনি খবর পেয়েছেন স্টেশনে এক করোনা রোগী লকডাউন অমান্য করে লোকজনের সাথে ঝগড়াঝাটি করছেন।
অপরদিকে কক্সবাজার সদর মডেল থানার ওসি (তদন্ত) মোহাম্মদ খায়রুজ্জামান জানিয়েছেন, তিনি বিষয়টি শুনেছেন।
কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার তিনটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে শোকজ করেছেন কুমিল্লা জেলা প্রশাসক।
বর্তমানে করোনা ভাইরাস পরিস্থিতি মোকাবেলায় সরকারের ত্রাণ বিতরনের সময় নিজ নিজ ইউনিয়নে উপস্থিত না থাকার কারণে কুমিল্লার জেলা প্রশাসক আবুল ফজল মীর বুধবার (১ এপ্রিল) তিন ইউনিয়ন চেয়ারম্যানকে শোকজ নোটিশ দিয়েছেন।
শোকজ পাওয়া তিনজন চেয়ারম্যান হলেন আকুবপুর ইউপি’র বাবুল আহম্মেদ মোল্লা, রামচন্দ্রপুর উত্তরের সফু মিয়া সরকার ও বাবুটিপাড়ার জাকির হোসেন মুন্সী।তাদেরকে সাত দিনের মধ্যে জবাব দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ সংবাদ লেখা পর্যন্ত একজন ইউপি চেয়ারম্যানগণ এখনও ঢাকায় অবস্থান করছেন।
সরেজমিনে গিয়ে আকুবপুর, রামচন্দ্রপুর উত্তর ও বাবুটিপাড়া ইউনিয়নের বিভিন্ন লোকজনের সাথে কথা হলে তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, পাশের অন্যান্য ইউনিয়নে শ্রমজীবীদের তালিকা করে বিভিন্ন নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র বিতরণ করলেও আমাদের এলাকায় সরকারি বরাদ্দ এখনো পাইনি।
আকুবপুর ইউপি চেয়ারম্যান বাবুল আহম্মেদ মোল্লা বলেন, আমার হার্টের সমস্যার কারণে ঢাকায় চিকিৎসা নিতে যাই। পরে লকডাউনে গণপরিবহন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আটকা পরি।
রামচন্দ্রপুর উত্তর ইউপি চেয়ারম্যান সফু মিয়া সরকার মুঠো ফোনে তিনিও অসুস্থ্যতার কারণে ঢাকায় রয়েছেন বলে জানান।
বাবুটিপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান ও সাউথইষ্ট ব্যাংক কর্মকর্তা জাকির হোসেন মুন্সী বলেন, এতদিন ঢাকায় ছিলাম। শোকজ পেয়ে এলাকায় আসি। আজ শ্রমজীবীদের তালিকা মোতাবেক খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করছি।
উল্লেখ্য, মুরাদনগর উপজেলার ২২ ইউনিয়নে খাদ্যসামগ্রী বিতরণের সময় ওই তিন ইউপি চেয়ারম্যানকে এলাকায় না পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অভিষেক দাশ বিষয়টি গত ৩০ মার্চ জেলা প্রশাসককে লিখিত ভাবে অবহিত করেন।
এ বিষয়ে মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অভিষেক দাশের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, জনপ্রতিনিধি হয়েও তারা এলাকায় নেই। অথচ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন ও সুশীল সমাজের লোকজন কর্মজীবী মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। বৃহস্পতিবার আকুবপুর ইউপি চেয়ারম্যান বাবুল আহম্মেদ মোল্লা এসে তার এলাকার শ্রমজীবী মানুষের তালিকা দিয়েছে। অন্য দু’জন চেয়ারম্যান এখনো যোগাযোগ করেনি।