স্টাফ রিপোর্টার, ঝিনাইদহঃ ঝিনাইদহে লাইসেন্স ও ছাড়পত্রবিহীন ইটভাটায় অভিযান শুরু করেছে পরিবেশ অধিদপ্তর। বুধবার সকালে সদর উপজেলার গিলাবাড়ীয়া থেকে এ অভিযান শুরু করা হয়। এর নেতৃত্ব দিচ্ছেন পরিবেশ অধিদপ্তরের এনফোর্সমেন্ট টীমের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রোজিনা আক্তার ও যশোর পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সাঈদ আনোয়ার। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সদর ও হরিণাকুন্ডু উপজেলার ৪ টি ইটভাটা পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র না থাকাসহ নানা অভিযোগে গুড়িয়ে দেওয়া হয়। এছাড়াও ৪ টি ইটভাটায় ২৩ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। যশোর পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সাঈদ আনোয়ার বলেন, সকাল ১০ টা থেকে এ অভিযান শুরু হয়েছে চলবে বিকাল পর্যন্ত। দুপুর পর্যন্ত আমরা ৮ টি ইটভাটার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছি। আগামীকাল শুক্রবারও এ অভিযান চালানো হবে।
ফয়সাল হাওলাদার : দৈনিক ময়মনসিংহ প্রতিদিন পত্রিকার সম্পাদক খায়রুল আলম রফিককে ডিবি হেফাজতে নিয়ে অমানুষিক নির্যাতনের অভিযোগে তৎকালীন ময়মনসিংহ জেলা গোয়েন্দা সংস্থা ডিবি পুলিশের এসআই আক্রাম হোসেন ও জুয়েল নামের এক পুলিশ সদস্য সহ অজ্ঞাত আরো ৭/৮ জন নাম উল্লেখ করে জেলা ময়মনসিংহের বিজ্ঞ জেলা ও দায়রা জজ বাহাদুর আদালতে মামলা দায়ের করা হয়। মামলাটি গত বৃহস্পতিবার (১৪ জানুয়ারি) সাংবাদিক খায়রুল আলম রফিকের পক্ষে আইনজীবি এ্যাডভোকেট খায়ের আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। আজ ১৮ জানুয়ারী দুপুরে এক আদেশে বলেন, সাংবাদিক খায়রুল আলম রফিককে ২৪ ঘন্টার মধ্যে একজন রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের মাধ্যমে স্বাস্থ্য পরীক্ষার রিপোর্ট বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করার নির্দেশ প্রদান করেন। কেন্দ্রীয় কারাগারে চিকিৎসারত সকল কাগজপত্র তলব করেন। নির্যাতন এবং হেফাজতে মৃতু্ (নিবারন) আইন ২০১৩ এরে ১৩(১), ২(খ), ১৫ (১) ও ১৫ (৩) ধারায় এই মামলা করা হয়।
বিজ্ঞ আদালত অভিযোগ আমলে নিয়ে বাদী সাংবাদিক খায়রুল আলম রফিকের জবান বন্দী রেকর্ড করেছেন। বাদীপক্ষের আইনজীবী এ্যাডভোকেট খায়ের এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, এসআই আকরাম হোসেন তাকে আটক করে ডিবি হেফাজতে রাখার নামে অকথ্য নির্যাতন চালায় যা মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন। আক্রামের যোগসাজশে ষড়যন্ত্রমূলক ৩টি মামলায় গ্রেফতার হয়ে দীর্ঘ দুই মাস থাকতে হয় ময়মনসিংহ কেন্দ্রীয় কারাগারে । এরআগে তার চোখ বেঁধে অকথ্য নির্যাতন করে এসআই আকরাম হোসেন বলে অভিযোগ করেন তিনি । এসআই আকরামের বিরুদ্ধে সাংবাদিক রফিক ইতিমধ্যে পুলিশের ‘আইজিপি’স কমপ্লেইন মনিটরিং’ সেলে একটি অভিযোগ জমা দিয়েছেন। যার অভিযোগ নম্বর SL-17 এবং তারিখ ৫ই জানুয়ারি ২০২১। অভিযোগ পত্রে তিনি জানান, ২০১৮ সালের ২৯ নভেম্বর রাত ১১টার দিকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল গেইটের বিপরীত দিকে আমি অবস্থান করছিলাম । এসআই আকরামের নেতৃত্বে ডিবি পুলিশ আমার চোখ বেঁধে একটি কালো গাড়িতে করে আমার পত্রিকার কার্যালয়ে নিয়ে যায় । সেখানে থাকা আমার জমি ক্রয়ের দলিল, জনতান ব্যাংকের চেক ও কম্পিউটার জব্দ করে । দলিল ও ব্যাংক চেক,ভোটার আইডি কাড প্রতিপক্ষের কাছে তুলে দিয়ে জব্দ দেখানো হয় শুধু কম্পিউটার । সেখান থেকে আমাকে নেয়া হয় ময়মনসিংহের ব্রহ্মপুত্র পুরাতন গুদারাঘাটস্থ দুর্গম চর এলাকায় । দুচোখ বেঁধে দু হাত পেছনে বেঁধে নির্যাতন চালানো হয় । কিন্তু দুই বছর পরে কেন বিষয়টি সামনে এনেছেন এমন প্রশ্নে সাংবাদিক রফিক বিডি২৪লাইভকে জানান, তিনি ঘটনাটি চক্ষু লজ্জার কারনে সামনে আনতে পারেননি এতদিন। তিনি জানান গত বছরের ডিসেম্বরে ২২ তারিখে অজ্ঞাত কোন এক ব্যাক্তি তার ম্যাসেঞ্জারে চোঁখ বাঁধা ছবি প্রদান করেন। যা দেখে তিনি আতঁকে উঠেন এবং সেই সব নির্যাতনের দৃশ্যগুলো চোখের সামনে ভাসতে শুরু করে। এর পরপরই তার এই ছবি ফেসবুকে ভাইরাল হতে শুরু করে। একারনেই দুইবছর পর মুখ খুললেন বলে জানান তিনি। এস আই আকরাম হোসেন জানান, আমি সাংবাদিক রফিককে আটক করেনি। কে আটক করেছে আমি জানিনা। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তিনি বলতে পারবেন।
নিজস্ব প্রতিবেদক: ফেসবুকে সংবাদ শেয়ার করায় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ঢাকা জেলায় কর্মরত সাব ইন্সপেক্টর সালেহ ইমরান ও সাংবাদিকদের হাতের কবজি কেটে নেয়ার হুমকি দিয়েছেন ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার কাচিনা ইউনিয়নের ৪,৫,৬ নং ওয়ার্ডের নারী ইউপি সদস্যা হাজেরা খাতুন পারুল। এ বিষয়ে ভালুকা মডেল থানায় পৃথক দুটি সাধারন ডায়েরি করেছেন উক্ত পুলিশ সদস্য ও মামলার একজন স্বাক্ষী রইজ খান। এ বিষয়ে আজ শনিবার (১৬ জানুয়ারি) বিকাল পৌনে ৫টার দিকে ভালুকা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মাইন উদ্দিন নিউজনাউ টুয়েন্টিফোরকে জানিয়েছেন, এ ব্যাপারে থানায় দুটি সাধারণ ডায়েরি হয়েছে। শুক্রবার (১৫ জানুয়ারি) পুলিশের কর্মকর্তা মো. সালেহ ইমরান নিজে বাদী হয়ে ভালুকা মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি নং- ৬৯৭) করেন এবং ১৪ জানুয়ারি রইজ খান বাদী হয়ে সাধারন ডায়েরি (জিডি নং-৬৫৯) করেছেন। থানায় লিখিত সাধারণ ডায়েরি বিবরণে জানা যায়, উপজেলার কাচিনা ইউনিয়ন সংরক্ষিত মহিলা আসনের ৪, ৫ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোছা. হাজেরা খাতুন পারুল তার প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় ১০-১৫ জন লোক সালেহ ইমরানের গ্রামের অসহায় দরিদ্র কৃষকের ৯ একর জমি ১৬ বছর আগে মৃত ব্যক্তিকে জীবিত দেখিয়ে জাল-জালিয়াতির দলিল করার মাধ্যমে ঢাকা দিলকুশা শাখা অগ্রণী ব্যাংক থেকে ১৭ কোটি টাকার লোন অনুমোদন করে নেয়। পরে জালিয়াতির বিষয়টি নিয়ে এলাকার সাধারণ মানুষ সালেহ ইমরানের স্মরণাপন্ন হয়। তিনি বিষয়টি নিয়ে সামাজিক দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে মিডিয়া এবং প্রশাসনের সহযোগিতা চাইলে তাদের সহযোগিতায় ওই লোনটি অনুমোদন হওয়ার পরও ব্যাংক কর্তৃপক্ষ তা স্থগিত করে দেন। পরবর্তীতে ওই জালিয়াতি এবং দুর্নীতি নিয়ে কাদিগড় গ্রামের মো. সমর আলী এবং হাবিজুল ইসলাম বাদী হয়ে ময়মনসিংহ বিজ্ঞ আদালতে দুটি মামলা দায়ের করেন। মামলার নম্বর যথাক্রমে ভালুকা সিআর ৪২০/২০১৯ এবং ৫৩০/২০১৯। মামলা দুটি পিবিআই তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পেয়ে মোছা. হাজেরা খাতুন পারুলসহ ১০ জনের নামে একটি প্রতিবেদন দাখিল করে। ওই প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে বিজ্ঞ আদালত চলতি বছরের ৬ জানুয়ারি মোছা. হাজেরা খাতুন পারুলসহ আসামিদের নামে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে।
লোন বাতিল, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি এবং এসব খবর পত্রিকায় আসার জের ধরে সাব-ইন্সপেক্টর মো. সালেহ ইমরানের প্রতি মারাত্মকভাবে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন ইউপি নারী সদস্য মোছা. হাজেরা খাতুন পারুল। এরপর চলতি মাসের শুক্রবার (৮ জানুয়ারি) দুপুর ২টার দিকে কাচিনা বাজারে কবিরের চায়ের দোকানে কাচিনা ইউনিয়ন পরিষদের কাদিগড় গ্রামের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. আবু বক্কর সিদ্দিক, কাদিগর গ্রামের মোজাম্মেল ও হানিফসহ আনুমানিক ১৫ জন মানুষের সামনে প্রকাশ্যে সাব-ইন্সপেক্টর মো. সালেহ ইমরানের হাতের কব্জি কেটে ফেলার হুমকি দেন সংরক্ষিত ইউপি মহিলা সদস্য মোছা. হাজেরা খাতুন পারুল। তিনি উপস্থিত মানুষের সামনে এও বলেন, ‘ডরাইলেই ডরে খায় ঠেইল্লা দিলে কিছুই না।’ এ বিষয়ে সাব-ইন্সপেক্টর মো. সালেহ ইমরান বলেন, একজন জনপ্রতিনিধি যেখানে দুর্নীতির বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ার কথা সেখানে তিনি তা না করে বরং দুর্নীতির বিরুদ্ধে এলাকার সাধারণ মানুষের পাশে দাড়ানোয় প্রকাশ্যে যেভাবে আমাকে হুমকি দিয়েছেন, তাতে তার সহযোগী আসামিদের যোগসাজশে আমি এবং আমার পরিবারের যেকোনো ক্ষতি হতে পারে বলে আমি আশঙ্কা করছি। পুলিশ কর্মকর্তার হাতের কব্জি কাটার ব্যাপারে জানতে অভিযুক্ত হাজেরা খাতুন পারুল মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
ময়মনসিংহের তারাকান্দা উপজেলায় তিনদিন আগে ‘অপহৃত’ এক শিশুর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
জেলা গোয়েন্দা শাখার ওসি শাহ কামাল আকন্দ জানান, শুক্রবার সকালে সানজিদা আক্তার (৭) নামের ওই শিশুর লাশ জঙ্গল থেকে উদ্ধার করা হয়।
সানজিদার বাবা শাজাহান আকন্দ বলেন, মঙ্গলবার দুপুরে বাড়ির উঠান থেকে তার মেয়েকে অপহরণ করা হয়। অপহরণকারীরা একটি চিরকুটে লিখে যাওয়া নাম্বারে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলে। কিন্তু পরে ওই নম্বারে ফোন করলে বন্ধ পাওয়া যায়।
বুধবার অপহরণকারীরা ফোন দিয়ে তাদের বিকাশ নাম্বারে ২০ হাজার টাকা পাঠাতে বলে। এ বিষয়ে বুধবার থানায় সাধারণ ডায়েরি করি।সকালে জঙ্গলে লাশ পাওয়া গেল।
এ বিষয়ে ওসি বলেন, “নাম্বার ট্র্যাকিং করে অপহরণকারীদের শনাক্ত করার চেষ্টা করছিল পুলিশ। এর মধ্যেই মেয়েটির লাশ পাওয়া গেল। ঘটনাটি তদন্ত করা হচ্ছে।
ভালুকা (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধিঃ ময়মনসিংহের ভালুকায় ভূঁইয়া পেপার মিলের মেশিনে পিষ্ট হয়ে মেহেদি হাসান (১৫) নামে এক কিশোর শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার (১১ জানুয়ারি) ভোররাতে উপজেলার ছোট কাঁশর এলাকায়। ফ্যাক্টরির অব্যবস্থাপনার কারণে একইভাবে মেশিনে পিষ্ট হয়ে এর আগেও মাসুদ রানা (২৪) নামে এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছিল।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানাযায়, উপজেলার পাড়াগাঁও গ্রামের রফিকুল ইসলামের কিশোর ছেলে স্থানীয় নবদিগন্ত হাই স্কুলের নবম শ্রেণীর ছাত্র মেহেদী হাসান (১৫) চলতি বছরের ৭ জানুয়ারি ভূঁইয়া পেপার মিলে শ্রমিক হিসেবে কাজে যোগদান করেন। গত রোববার প্রতিদিনের মতো নাইট শিফটে কাজ শুরু করেন। রাতের কোন এক সময় তিনি হাইকন পালপাড় ও কনবেয়ার বেল্ট মেশিনের সাথে পিষ্ট হয়ে মারা যান। সোমবার সকালে সহকর্মিরা মেহেদির লাশ দেখতে পেয়ে মিল কর্তৃপক্ষকে খবর দেয়। পরে থানায় বিষয়টি জানানো হলে ভালুকা মডেল থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়।
নিহতের মা হামিদা খাতুন বলেন, তার ছেলে ১০ পারা কুরআনের হাফেজ। এবছর সে অষ্টম শ্রেণী থেকে নবম শ্রেণীতে উত্তীর্ণ হয়ে পাড়াগাঁও নবদিগন্ত স্কুল থেকে নতুন বই নিয়েছে। তার বাবা নেই, পড়া লেখার টাকা যোগারের জন্য তিনদিন আগে এই ফ্যাক্টরীতে চাকরী নিয়েছে।
এ সময় ফ্যাক্টরীর বাইরে উপস্থিত স্থানীয় লোকজন জানান, কারখানাটি লাউতি খাল দখল করে গড়ে উঠেছে। ইটিপি প্লান ব্যবহার না করেই শিশু শ্রমিকদের দিয়ে তাদের ইচ্ছেমতো উৎপাদন কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। কারখানার উচ্ছিষ্ট ময়লা কাগজ প্রকাশ্যে আগুন দিয়ে পুঁড়িয়ে এলাকার পরিবেশ মারাত্মক ক্ষতি করছে। শিল্পআইনের তোয়াক্কা করছেনা ফ্যাক্টরিটি। গত ২০১৯ সালের ২১ অক্টোবর রাতে ফ্যাক্টরির অব্যবস্থাপনার কারণে মেশিনে পিষ্ট হয়ে মাসুদ রানা নামে আরো এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছিল।
ভুঁইয়া পেপার মিলের অ্যাডমিন ম্যানেজার আব্দুর রহিম বলেন, ভোরের দিকে পেপার কাটিং নেবার সময় নিহত মেহেদীর লাশ দেখতে পেয়ে ভালুকা মডেল থানাসহ ফ্যাক্টরীর উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়। পরে মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ মাইন উদ্দিন কারখানায় আসেন। কিশোর শ্রমিক দিয়ে কাজ করানোর বিষয়টি অস্বীকার করে তিনি আরো বলেন, স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ থেকে প্রাপ্ত জন্ম নিবন্ধন দেখে শ্রমিকদেরকে নিয়োগ দেয়া হয়ে থাকে।
ভালুকা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ মাঈন উদ্দিন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, পরিবার থেকে অভিযোগ করলে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে। লাশের বিষয়ে এখানো সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি। থানায় অপমৃত্যু মামলা দায়েরের প্রস্তুতি প্রক্রিয়াধীন।
স্টাফ রিপোর্টারঃ ময়মনসিংহের ত্রিশাল কাঁঠাল ইউনিয়নের নলচিড়া গ্রামের হিন্দু সম্প্রদায়ের দুই পরিবারের মাঝে জমি নিয়ে বিরোধ দেখা দিয়েছে, গাছ কর্তন ও টিন দিয়ে বেড়া নির্মাণ করেছে এক পক্ষ। ১১নভেম্বর বুধবার এই ঘটনাটি ঘটেছে।
এলাকাবাসী সূত্রে জানাযায়, স্থানীয় মৃত হরেন্দ্র চন্দ্র বর্মনের সন্তান মানিক চন্দ্র বর্মন ও তার ভাইয়েরা দীর্ঘদিন যাবৎ তাদের পৈতৃক সম্পতিতে বসবাস করে আসছিল। সাম্প্রতিক সময়ে ওয়ারিশ সূত্রে হরিরাথ বর্মনের সন্তান প্রফোল্ল গংরা তাদের ওয়ারিশ জমি দাবী করে টিন দিয়ে বেড়া নির্মাণ করে কিছু গাছের চারা কর্তন করে একটি ঘর তুলে নিয়েছেন। এমতাবস্থায় উভয় পক্ষের লোকজন জায়গাটির দাবীদার বলে বড় আকারের কোন্দল সৃষ্টি করে চলছেন।
এবিষয়ে মানিক বর্মনের সাথে কথা বললে তিনি জানান, প্রফোল্ল গংরা বহিরাগত কিছু লোক নিয়ে তাদের দখলীয় জায়গাতে গাছ ও একটি ঘর ভেঙ্গে দিয়ে টিন দিয়ে বেড়া দিয়ে একটি ঘর তুলে ফেলেছেন। পরে দখল নেওয়া প্রফোল্ল ও তাদের লোকজনের সাথে কথা বললে তারা জানান, তাদের নামজারীকৃত জায়গাতেই তারা টিনের বেড়া ও ঘর তুলেছেন।
জাহিদুর রহমান তারিক, ঝিনাইদহ প্রতিনিধিঃ
ঝিনাইদহে ল্যাকটেটিং ও মাতৃত্বকালীন ভাতা নিয়ে নয় ছয়ের অভিযোগ উঠেছে। হতদরিদ্র মহিলাদের পরিবর্তে মাতৃত্বকালীন ভাতার সুবিধা নিচ্ছেন বড়লোকের স্ত্রীরা। লাজ লজ্জা আর শরম ত্যাগ করে অগ্রনী ব্যাংক থেকে ছয় মাস পর পর এই ভাতা উঠয়ে নিচ্ছেন তারা। ব্যাংকের কর্মকর্তারা এ সব নারীদের সাজগোজ দেখে অনেক সময় অবাক হন। মাতৃত্বকালীন ভাতা যাদের পাওয়ার কথা তারাই থাকছেন উপেক্ষিত।
অভিযোগ পাওয়া গেছে, মহিলা বিষয়ক অফিসের এক শ্রেণির অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যোগসাজসে মাতৃত্বকালীন ভাতা বড়লোকের স্ত্রীদের আঁচলে বাধা পড়ছে। অফিসের লোকজন টাকার বিনিময়ে দরিদ্র মহিলাদের বাইরে রেখে অর্থ বিত্তশালী পরিবারের স্ত্রীদের সুযোগ করে দিচ্ছেন ।
যে কারণে চরম ভাবে বঞ্চিত জেলার হতদরিদ্র নারীরা। মাতৃত্বকালীন ভাতা প্রদানের ক্ষেত্রে কোন নীতিমালা মানা হচ্ছে না। নামকাওয়াস্তে আইন মেনে অবস্থাশালীদের স্ত্রীদের দেওয়া হচ্ছে। মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের একটি সুত্র জানায়, সরকার দেশেরে হতদরিদ্র গর্ভবতি মায়ের চিকিৎসা ও প্রসব পরবর্তী কোলের শিশু সন্তান যাতে মায়ের বুকের দুধ পান সে জন্য এ ভাতা দিয়ে থাকে।
কিন্তু জেলায় ২৪৩০ জনের যে মাতৃত্বকালীন ভাতা দেওয়া হয় তাদের মধ্যে অনেকেই আইন বহির্ভুত ভাবে এ ভাতা নিচ্ছেন। জেলা মহিলা বিষয়ক অফিস সূত্রে জানা যায়, জেলার ৬টি উপজেলায় ও পৌরসভায় দরিদ্র পরিবারের নারীদের সুবিধার্থে এ ভাতা দেওয়া হয়। দুই বছর মেয়াদী এ ভাতার টাকা প্রতি মাসে ৫০০ টাকা করে ৬ মাস পর পর দেওয়া হয়।
এর মধ্যে কর্মজীবি ল্যাকটেটিং মাদার সহয়তা তহবিলের (ল্যাকটেটিং) আওতায় জেলাতে ২৪৩০ জনকে ল্যাকটেটিং ও ৭৩০৮ জনকে মাতৃত্বকালীন ভাতা দেওয়া হচ্ছে। এর মধ্যে ল্যাকটেটিং ভাতা সদর পৌরসভায় ৮০০ জন, কালীগঞ্জে ৩৬০, কোটচাঁদপুরে ৩৬০, মহেশপুরে ৩০০, শৈলকূপায় ৩৬০ ও হরিণাকুন্ডুতে ২৫০ জনকে দেওয়া হয়। অন্যদিকে দরিদ্র মায়েদের জন্য মাতৃত্বকালীন ভাতা হিসেবে সদর উপজেলায় ১৮৫৩ জন, কালীগঞ্জে ১১৯৯, কোটচাঁদপুরে ৫৫০, মহেশপুরে ১৩০৮, শৈলকূপায় ১৫২৬ ও হরিণাকুন্ডুতে ৮৭২ জনকে দেওয়া হয়। এ ভাতার টাকা পেতে হলে ভাতা প্রত্যাশীদের নিজ নিজ ইউনিয়ন ও পৌরসভার মাধ্যমে আবেদন করতে হয়।
আবেদন পত্র পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদ প্রাথমিক বাছাই প্রক্রিয়া শেষ করে জেলা মহিলা বিষয়ক অফিসে পাঠায়। সেখান থেকে বাছাই হয়ে পরবর্তীতে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে চুড়ান্ত বাছাই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়। কিন্তু ঝিনাইদহ মহিলা বিষয়ক অফিসের এক শ্রেণির কর্মকর্তা-কর্মচারী প্রশাসনের কর্মকর্তাদের অন্ধকারে রেখে দরিদ্র নারীদের বাদ দিয়ে বড়লোকের স্ত্রীদের তালিকা ভুক্ত করে দেন বলে অভিযোগ রয়েছে। যে কারণে সরকারের লক্ষ্য পূরণ করতে ব্যার্থ হচ্ছে এই প্রকল্পটি। এজন্য বঞ্চিত হতদরিদ্র নারীরা তদন্ত সাপেক্ষে ব্যববস্থা নেওয়ার জন্য আহ্বান জনান।
ঝিনাইদহ অগ্রনী ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপক সদর উদ্দীন জানান, ব্যাংকে যে সব মেয়েরা সাজগোজ করে এই ভাতা তুলতে আসেন তাতে সঠিক ভাবে তালিকা করা হয় না বলেই ধরে নেওয়া যায়। তবে ঝিনাইদহ মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা জানান, রাজনৈতিক ভাবে প্রভাব থাকায় আমরা সচ্ছ ভাবে এই তালিকা করতে পারি না। এ বিষয়ে জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা নিলুফার রহমানের মোবাইল ০১৭১২৫৫৫১৪৭ নাম্বারে ফোন করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেনি।
স্টাফ রিপোর্টার, ঝিনাইদহঃ ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার ১ নং সুন্দরপুর দুর্গাপুর ইউনিয়নের কাদিরকোল গ্রামের একটি পুকুর থেকে রূপকুমার (৫০) ও সদর উপজেলার চন্ডিপুর গ্রাম থেকে আমির হোসেন (৫০) নামে দুই ব্যক্তির মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। মঙ্গলবার সকালে লাশ দুইটি উদ্ধার করা হয়। রূপকুমার দত্ত পাশ্ববর্তী কোটচাদপুর উপজেলার ফাজিলপুর বাজারপাড়া এলাকার কেষ্ট দত্তের ছেলে। অন্যদিকে আমির হোসেন চন্ডিপুর গ্রামের মশকত আলীর ছেলে। কোটটাঁদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ মাহাবুবুল আলম জানান গত রোববার রাত থেকে রূপকুমার দত্ত নিখোজ ছিল। মঙ্গলবার সকালে কাদিরকোল গ্রামের ইজ্জত আলী বিশ্বাসের পুকুরে তার মৃতদেহ দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দেয়। খবর পেয়ে কোটচাঁদপুর থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার করে। ময়না তদন্ত শেষে রুপকুমারের মৃত্যুর কারন জানা যাবে বলে ওসি জানান। এদিকে ঝিনাইদহ সদরের বেতাই পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ এসআই সিরাজুল আলম জানান, মঙ্গলবার সকালে চন্ডিপুরের জালাল মুন্সির ঝাল ক্ষেত থেকে আমির হোসেনের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। তিনি পারিবারিক ঝামেলার কারণে আত্মহত্যা করতে পারেন বলে পুলিশ প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে। তবে গ্রামবাসির একটি সুত্র জানায় দুই দিন আগে আমিরের ছেলে ও এলাকার কিছু মানুষ তাকে লাঞ্চিত করে। এ বিষয়ে তিনি ঝিনাইদহ সদর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার আবুল বাশারের কাছে মৌখিক অভিযোগ করেন। পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করাকালে আমিরের মৃত্যু রহস্যজনক বলে গ্রামবাসি মরেন করছেন।
স্টাফ রিপোর্টার, ঝিনাইদহঃ ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলার সাফদারপুর রেল স্টেশন এলাকায় ২টি মালবাহি ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনার পর দীর্ঘ সাড়ে ৬ ঘন্টার উদ্ধার কাছ শেষে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে। বরখাস্ত করা হয়েছে একটি ট্রেনের চালককে। স্থানীয়রা জানায়, সোমবার রাত দুইটার দিকে কোটচাঁদপুর ট্রেন স্টেশনে খুলনা থেকে পার্বতীপুর তেলবাহি ট্রেন ও দর্শনা থেকে যশোরের নওয়াপাড়া গামি পাথরকুচি বোঁঝায় ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ৪ টি তেলের ট্যাংকার ও একটি ইঞ্জিন লাইচ্যুত হয়। এরপর থেকেই খুলনা থেকে সারাদেশের ট্রেন যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। খবর পেয়ে ঈশ্বরদি থেকে একটি রিলিফ ট্রেন এসে সকাল ৬ টার দিকে উদ্ধার কাজ শুরু করে। বেলা ১২ টার দিকে স্টেশনের ২ নং লাইন থেকে ট্যাংকার সরিয়ে ও লাইন মেরামত করে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক করা হয়। রেলের পশ্চিমাঞ্চলের প্রধান পরিবহণ কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম জানান, খুলনা থেকে পার্বতীপুর গামী কেপি ২১ আর ট্রেনের চালক আনিছুর রহমানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
ঘটনা করা হয়েছে ৫ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি। আগামী ৩ দিনের মধ্যে তদন্ত কমিটি দুর্ঘটনার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিবেন। তিনি আরও জানান, ৪ টি তেলের ট্যাংকারের মধ্যে ৩ টি ট্যাংকারের তেল পড়ে গেছে। প্রতিটি ট্যাংকারে ৪২ টন ডিজেল ছিল। এ ঘটনার পর স্থানীয় সংসদ সদস্য এ্যাড. শফিকুল আজম খান চঞ্চল, কোটচাঁদপুর উপজেলা চেয়ারম্যান শরিফুন্নেছা মিকিসহ রেলের উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শণ করেছেন। এদিকে প্রতি কন্টেইনারে (বিটিও) ডিজেল ছিলো ৮৬৬৬ লিটার প্রায়। তাহলে লাইনচ্যুত তিন কন্টেইনারে প্রায় ২৬ হাজার লিটারের মতো ডিজেল হয়। বর্তমান ডিজেলের বাজার মূল্য অনুযায়ী প্রতি লিটারে ৬৫ টাকা ধরলে মোট টাকার পরিমাণ দাড়ায় ১৬ লক্ষ ৯০০০০ হাজার বা প্রায় ১৭ লক্ষ। আর দুই লোকো (ইঞ্জিন) এবং এর বাকি কোচ বা বগি গুলোর ক্ষয়ক্ষতির হিসেব না হয় পরেই করলাম! সাথে লাইনের ক্ষয়ক্ষতি তো আছেই। ২০২০ সালে এসেও যদি রেলের এরকম দূর্ঘটনা দেখতে হয় তাহলে কি বলার থাকে? স্টেশনের ১ নাম্বার লাইনে দুই ট্রেনের ই ঢুকে পড়াকে লোকো মাস্টারের ভুল ধরবো নাকি রেলের কন্ট্রোলিং সিস্টেমকে ? মান্দাতের আমলের যুগেই পড়ে রইলো রেল। রেলস্টেশন মাষ্টার গোলাম মোস্তফা জানান, প্রায় ১৭ লাখ টাকার তেল ক্ষতি হয়েছে। এটা কর্তৃপক্ষ দেখবেন বলে জানান।


