ইবাদতের সবচেয়ে সোনালি সময় যৌবনকাল
মোফাজ্জল হোসেন ইলিয়াছ/খাগড়াছড়িঃ
ইবাদতের সব চেয়ে সোনালি সময় যৌবনকাল। স্বপ্ন-আকাঙ্ক্ষা, শক্তি-সামর্থ্য ও শৌর্য-বীর্যে ভরপুর এ সময়টিই ইবাদতের শ্রেষ্ঠ সময়।
ইবাদতে মগ্ন যুবকের জন্য আল্লাহ তাআলা মহা পুরস্কারের ঘোষণা দিয়েছেন।
আল্লাহর কোরআন ও নবীজির সুন্নাহর নির্দেশনা মেনে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের উদ্দেশ্যে কাজ করলে ব্যক্তির সকল কাজই ইবাদতে পরিণত হয়। আর ইবাদতে পূর্ণতা অর্জন যৌবনেই সম্ভব। তাই যৌবনে ইবাদতের গুরুত্ব সব চাইতে অপরিসীম।
রাসুলুল্লাহ (সাঃ) যৌবনকে মূল্যায়ন করার অনুপ্রেরণা দিয়েছেন, বার্ধক্যেরের আগেই যৌবনের কদর করতে বলেছেন।
মহানবী (সাঃ) বলেন, পাঁচ সময় আসার পূর্বেই পাঁচ সময়কে মূল্যায়ন করো।
১। বার্ধক্যে উপনীত হওয়ার আগে যৌবনকে।
২। অসুস্থ হওয়ার আগে সুস্থতাকে।
৩। দারিদ্র্য গ্রাস করার আগে স্বনির্ভরতাকে।
৪। কর্মব্যস্ততার আগে অবসরকে।
৫। মৃত্যুর আগে জীবনকে (হাদিস-৩৩১৯)
সুস্থ-সবল যুবকই পারে রাঁত জেগে দীর্ঘসময় ইবাদতে মগ্ন থাকতে। মানুষের কল্যাণে আত্মোৎসর্গের মানস তরুণেরাই সাহসের সঙ্গে লালন করতে জানে।
তাই রাসুলুল্লাহ (সাঃ) ইবাদতে মগ্ন যুবকের জন্য মহা পুরস্কারের ঘোষণা দিয়েছেন। যে সাত প্রকারের মানুষ কেয়ামতের দিন আল্লাহর আরশের নিচে ছায়া পাবেন, তাদের অন্যতম আল্লাহর ইবাদতে নিমগ্ন যুব সম্প্রদায়। (বুখারি, হাদিস: ৬৮০৬)
ইবাদতে মগ্ন একদল যুবকের কথা আল্লাহ পবিত্র কোরআনে আলোচনা করেছেন। তাদের সম্মানে নাজিল করেছেন স্বতন্ত্র সুরা—সুরা কাহফ।
তাদের প্রসঙ্গে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আমি তোমাকে তাদের সংবাদ সঠিকভাবে বর্ণনা করছি। নিশ্চয়ই তারা কয়েকজন যুবক, যারা তাদের রবের প্রতি ইমান এনেছিল এবং আমি তাদের হেদায়েত বাড়িয়ে দিয়েছিলাম।’ (সুরা-১৮: কাহাফ, আয়াত: ১৩)
গুনাহ মুক্ত জীবন গড়াই যৌবনের সেরা ইবাদত। এ জন্য যুবকদের আত্মা পরিশুদ্ধ করতে হবে।
মহানবী (সাঃ)। যুবকদের বিয়ে করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, হে যুব সম্প্রদায়, তোমাদের মধ্যে যারা বিয়ে করার সামর্থ্য রাখে, তারা যেন বিয়ে করে।
কারণ বিয়ে তার দৃষ্টি সংযত রাখে এবং লজ্জাস্থান হেফাজত করে। আর যার বিয়ে করার সামর্থ্য নেই, সে যেন রোজা রাখে। কারণ রোজা তার যৌনতা দমন করবে। (বুখারি, হাদিস: ৫০৬৫)
কেয়ামতের ময়দানে আল্লাহর সামনে সবাইকে দাঁড়াতে হবে। সেদিন পাঁচটি প্রশ্নের উত্তর না দিতে পারলে কারও মুক্তি মিলবে না। তার মধ্যে অন্যতম প্রশ্ন হলো তোমার যৌবনকাল কী কাজে ব্যয় করেছ?
সুতরাং যারা জীবন-যৌবনের সঠিক ব্যবহার করবে এবং আল্লাহর নির্দেশিত পথে জীবন করবে, তারাই সেদিন সফল হবে। আর যারা আল্লাহর অবাধ্যতা ও অন্যায় কাজে জীবন বিনাশ করবে, তারা আল্লাহর শাস্তির মুখোমুখি হবে।
