ময়মনসিংহের মুক্তাগাছায় পিতার হাতে শরীফ নামে ০৫ মাসের শিশু পুত্র খুন হয়েছে। শিশু পুত্রকে খুনের পর স্ত্রীকে হত্যার চেষ্টা এবং সে নিজেও আত্নহত্যার চেষ্টা করে।১২ আগস্ট বৃহস্পতিবার রাত আনুমানিক ১০ টার দিকে উপজেলার দাওগাঁও ইউনিয়নের চন্দনীআটা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ঘাতক পিতা শাজাহান চন্দনীআটা গ্রামের মৃত তমেজ আলীর পুত্র। স্হানীয় লোকজন ও ঘাতক শাজাহানের মা জানায়, বৃহস্পতিবার বিকাল ৫ টা থেকে শাজাহান অস্বাভাবিক আচরণ করতে থাকে এবং তার মা, স্ত্রী, শিশু পুত্র, ভাগিনা শিমুল, শালিকা আকলিমাসহ সবাইকে নিয়ে ঘরে প্রবেশ করে দরজা বন্ধ করে রেখে বলতে থাকে তাকে কেউ মেরে ফেলবে। শাজাহান একটি ধারালো ছুরি হাতে নিয়ে বসে থাকে এবং কাউকে বাহিরে বের হতে দিচ্ছিলনা বলেও জানান তার মা জমেলা বেগম। এমতাবস্থায় রাত আনুমানিক ১০ টার দিকে তার স্ত্রীর কাছ থেকে ০৫ মাসের শিশু পুত্র শরীফকে কেড়ে নিয়ে হাতে থাকা ধারালো ছুরি দিয়ে শিশু বাচ্চার গলায় আঘাত করলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। শিশুটিকে বাঁচাতে চেষ্টা করলে তার স্ত্রী জেসমিন বেগমকেও কুপিয়ে জখম করে শাজাহান।এরপর শাজাহান নিজেও আত্নহত্যার চেষ্টা করে। ঘাতক শাজাহানের মা আরো বলেন, ঈদের পর থেকে অস্বাভাবিক আচরণ করে আসছিল শাজাহান। সে বার বার বলতো কেউ তাকে মেরে ফেলবে। স্হানীয়রা আরো জানান, শাজাহান এমন অস্বাভাবিক আচরণ অনেক আগে থেকেই করে আসছিল । তার বাবা পঙ্গু অবস্থায় থাকাকালীন সময়ে সে তার বাবাকে নিয়ে ভ্যান গাড়ি দিয়ে ভিক্ষাবৃত্তি করে সংসার ও তার পিতার চিকিৎসা করাত। তার বাবার মৃত্যুর পর থেকে তার এমন অস্বাভাবিক আচরণ বেড়ে যায় বলেও স্থানীয়রা জানান। এমতাবস্থায় বৃহস্পতিবার রাত আনুমানিক ১০ টার দিকে তার শিশু পুত্রকে হত্যার চেষ্টা কালে তার মা জমেলা বেগম ও ভাগিনা শিমুল ঘরের দরজা খুলে বাহিরে এসে প্রতিবেশীদের ডাকাডাকি করতে থাকে। স্হানীয় লোকজন ঘটনাস্থলে উপস্থিত হওয়ার পূর্বেই তার শিশু পুত্রকে হত্যা করে ও তার স্ত্রীকে হত্যার চেষ্টা এবং নিজেও আত্নহত্যা করার জন্য নিজের গলায় ছুড়ি দিয়ে আঘাত করে। স্থানীয় লোকজন ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে এমন ঘটনা দেখে পুলিশকে সংবাদ দেয়। সংবাদ পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে মুক্তাগাছা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাহমুদুল হাসান, ওসি (তদন্ত) জাহাঙ্গীর আলম, সাব ইন্সপেক্টর আমিনুল ইসলাম ঘটনা স্থলে গিয়ে শাজাহান ও তার স্ত্রীকে চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায় এবং শিশুর মরদেহ উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করে। মুক্তাগাছা থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) জাহাঙ্গীর আলম বলেন, সংবাদ পেয়ে আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে শিশু বাচ্চার লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয় এবং ঘাতক শাজাহান ও তার স্ত্রীর অবস্থা আশংকা জনক হওয়ায় তাদেরকে চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষে বিস্তারিত জানা যাবে এবং প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
কমেন্টে আপনার মতামত জানান: নিউজটি ভাল লাগলে শেয়ার করুন
