ইমরান হোসাইন আশু : তখন আমি ঢাকা ওয়ারীর বনগ্রাম একটি মেয়েকে প্রাইভেট পড়াই । মেয়েটার নাম ছিল মনি । মেয়েটা তখন ক্লাস নাইনে পড়ে । তাদের বাবা বিদেশ থাকে । বিকাল ৫ টা থেকে রাত ৮ পর্যন্ত মেয়েটাকে আমি পড়াই ।
আমি তখন কাপ্তান বাজার বি সি সি রোড আমার ছোট মামা বাসায় থাকি । আমার চাকুরী নাই । বেকার মানুষ ।
মনির মা ছিলেন খুবেই বিরক্ত কর একজন মহিলা । আমি যতক্ষণ পড়াব সে আমার পিছনে সোফায় বসে সুই সুতা দিয়ে হাতের কাজ করবে । ভদ্র মহিলা খুবেই আধুনিক । তবে গত এক মাসে আমার সাথে কোন বিষয়ে কোন কথা বলে নাই – বাসার কাজের মেয়ে রুটিন করে প্রতিদিন চা বিস্কুত দিয়ে যায় ।
মনি খুবেই আধুনিক মেয়ে ছিল । তার কোন কথা বলার থাকলে বা দুষ্টুমি করার ইচ্ছা থাকলে সে খাতায় লিখে দিত ।
খুব মজার মজার কথা সে লেখত । যেমন লেখত স্যার আপনাকে দেখে কিন্তু মনে হচ্ছে বিবাহিত । ভাবি কি আপনাকে এত রাত পর্যন্ত পড়ান ? কিছু বলে না স্যার ।
স্যার আপনি আজ দেখতে খুব মিষ্টি কিন্তু জামা কাপড়ের কোন ম্যাচিং নেই । স্যার মধুমিতায় সিনেমা দেখবেন ।
মনির মা লেখা পড়া জানত না। আমি পড়ার টেবিলে আসার পড়ে আগে মা আসবে তার পর মেয়ে ।
আমি তখন অবিবাহিত আর বেকার । ভাল টাকাই পাই । একটা প্রাইভেট দিয়েই মাস চলে যায় ।
আমার সাথে মনির সকল কথা হয় কাগজে কলমে ।।
মনির ছেলে মানুষী আমাকে মুগ্ধ করে ।
একদিন মনি আমাকে লেখলো –
—- স্যার আপনার একেই জামা বার বার পড়েন তা আমার ভাল লাগে না- আপনার জন্য তিনটা সার্ট আর চারটা টি সার্ট অমুক দোকানে কিনে রেখেছি । দয়া করে কাল থেকে ঐ গুলো পড়ে আসবেন । আবার ভাববেন না আপনার প্রেমে পড়েছি ।
আপনাকে আমার ভাল লাগে না । আমার বড় বোন আপনাকে এই গুলো কিনে দিয়েছে । মাকে বলে চাকুরী টা হারাবেন না। টাকা দিয়ে শিক্ষক পাওয়া যায় কিন্তু নায়ক স্যার পাওয়া যায় না। আর আপনাকে বেশী পছন্দ করে আমার বোন সাহিন ।।
আমি সেই দিন জানতে পাড়লাম তার আরো একটা বোন আছে । কারন মনির মা সব সময় পিছনে বসে থাকে ব্যক্তিগত কোন কথা বলা একে বারে নিষেধ ।। মনি কে পড়ার আগে থেকেই মনির মা আমাকে বলে দিয়েছে পড়া ছাড়া অন্য কোন বিষয় নিয়ে কথা বলা যাবে না। আমি চুপ চাপ থাকি । টাই মনির মা আমাকে মনে হয় কিছুটা বিশ্বাস করে ।
আমি কিন্তু একদিন ও সাহিন কে দেখতে পাই নাই ।। আর সাহিন কে নিয়ে আমার কোন আগ্রহ নেই । কারন এত ভাল প্রাইভেট আমি হাত ছাড়া করতে চাই না।
মাস ছয়েক পড়ে কথা – আমি মনির খাতায় একটা কবিতা লেখি কিন্তু ছিরে আনতে মনে নাই ।
কবিতাটা ছিল এমন – অন্ধকারে কেউ রুপ বদলে নয়ন চিরে দেখে –
আমি তার নিশ্বাসে বাদলা দিনের মেঘ হয়ে ঝরে যাই অজান্তে ।
শাহিন খুব কবিতা পছন্দ করে ।
আমি আসলেই মনি বলত স্যার সাহিনের জন্য কবিতা কিন্তু চাই । আমার কবিতা তার খুবেই পছন্দ ।
আমি মাঝে মাঝে তাকে কবিতা লেখে দেই । একদিন মনি খাতায় লিখে দিল অমুক দোকান থেকে আপনি একটা অডিও ক্যাসেট নিয়ে যাবেন । আমি এই প্রথম তার হাতের লেখা দেখলাম । যেন শিল্পীর হাতের ছুয়া । আমি পড়ানো শেষ করে ক্যাসেট নিয়ে বাসায় যাই । সাহিন তার নিজের কণ্ঠে অডিও রেকট করেছে আমার কবিতা দিয়ে ।
আমার যে বিশ্বাস হচ্ছে না।
কিন্তু শাহিন দেখতে কেমন । মনির মতো নাকি অন্য রকম
আমার তার পর থেকেই জানার খুব ইচ্ছা হচ্ছে –
মনির মা আমাকে একদিন কি জানি কি মনে করে বলল – ইমরান আজ রাতে খেয়ে যাবেন । আমি বললাম আন্টি আজ আমার দাওয়াত আছে ।
কোথায় দাওয়াত জানতে চাইলে বললাম আমার আরেক মামা আছেন তার বাসায় । কেমন মামা জানতে চাইলে আমি বলি – ঐ মামা আমাদের গ্রামে বাড়িতেই তাদের বাড়ী ।
মামার নাম গলি আসাদ । ঐ মামার স্ত্রী আমাকে খুব আদর করেন , নিজের ছেলের মতো । মামার কাপ্তান বাজারে দোকান আছে ।
মনির মা বলল তার তো অনেক কয়জন মেয়ে । আমি হেসে বললাম – হ্যা তারা সবাই আমার বোন ।
ও তুমি ঐ বাসায় যাও তাহলে তুমি অনেক ভালছেলে ।। তাদের আমি ভাল করে চিনি ।। এই সাত মাস পর ভদ্র মহিলা আজ প্রথম পড়ার কাছ থেকে উঠে চিলে গেলেন অন্য রুমে ।
চা হাতে আজ অন্য একটা মেয়ে এলো ।
সাদা লাল পারের শাড়ী পরে । আমার হাতে চা তুলে দিয়ে বলল
আমি শাহিন আপনার কবিতা । আমি মুগ্ধ হয়ে চেয়ে দেখলাম তার কপালের কালো টিপ ।
আমি সালাম দিয়ে বসতে বললাম কবিতার কি কড়া হয় ?
মেয়েটা বলল চার বার এস এস সি ফেইল । তবে আপনার মতো স্যার পেলে হয়ত একবারেই পাশ করে যেতাম ।
— আচ্ছা আজ আপনার মা চলে গেল যে ।
— কারন আপনি যার পরিচয় দিয়েছেন তাদের মা ভাল করে চিনে । তারা খুবেই ভাল মানুষ । আমি ঝুমার সাথেই প্রাইমারি স্কুলে পড়েছি । আপনি যেহেতু তাদের গোলকি আসাদ আঙ্কেলের বাসায় যান তাহলে আপনি ভাল মানুষ। কারন তারা ভাল মানুষ ।
—- তা আপনি কি লেখা পড়া করবেন না ?
—- না , মা পাত্র দেখছে তবে ভাল পাত্র পেলে বিয়ে দিবে । আমি তো খুব হালকা পাতালা মানুষ । মা চায় আর একটু মোটা হই । আমি সেই চেষ্টা করছি ।
আমি গত এক বছরে তাদের কাছে খুবেই আপন হয়ে গেলাম । সেই বছর শাহিন কে আমি নিয়ে গেলাম শরতের কাশ ফুল দেখাতে । শাহিন সব সময় শাড়ী পড়তো । একটা আলাদা আর্ট ছিল তার শাড়ী পরার মাঝে । আমি কিছুদিন পর প্রাইভেট পড়ানো ছেরে দিলাম । তখন আমি একটা চাকুরিতে জয়েন্ট করেছি ।। মাঝে মাঝে যাই । সাহিনের সাথে দেখা করতে । আমাদের মাঝে বেশী কথা হত গল্পের বই নিয়ে । সাহিনের কারনে আমার অনেক বই পড়া হয়ে গেল । কড়ি দিয়ে কিনলাম আমারা এক সাথে শেষ করেছি পড়ে পড়ে এক টেবিলে ।
একদিন খবর এল শাহিন হাসপাতালে – আমি গেলাম দেখতে । বেশ কিছুদিন যাবত তার জ্বর – আগে মাঝে মাঝে জ্বর হতো । শাহিনের বিয়ে ঠিক হয়েছে । ছেলে ইতালি থাকে- সামনের মাসে আসলে বিয়ে হবে । বিয়ে হবে তাদের গ্রামে দোহার এ । আমাকে সাথে যেতে হবে ঐ বিয়েতে । আমি হেসে বলাম – তুমি যদি বিয়ের দিন বল ইমরান আমি তোমাকে ভালবাসি তখন কিন্তু আমি তোমাকে নিয়ে পালাতে পারব না। শাহিন হেসে বলে আরে এই কপাল ইমরানের নাই । আমাকে নিয়ে পালতে কিন্তু কপাল লাগে ।। আমি হেসে বললাম অভাগার কপাল আমার , সাহিন বলল না তোমার কপাল আমার চেয়ে অনেক বড় , যদি আর কোন জন্ম থাকে সেই জন্মে আমি তোমাকে চাইব রাখাল বন্ধু হিসাবে তোমাকে । তোমার বাঁশী শুনে আমি কাজল চোখে হিজল গাছের নিচে অপেক্ষা করব ।
আমি আর সাহিন মনের অজান্তেই ভাল বন্ধু হয়ে গেলাম । তার ভাল লাগা মন্দ লাগা গুলো আমার কাছে খুব সুন্দর করে বলে যেত ।
তখন শরত কাল ছিল । চার দিক কাশ ফুল । শাহিন জ্বরের মধ্যে বলছে ইমরান আমি কাশফুল দেখতে যাব । বনশ্রীতে কাশ ফুল আছে । শাহিনের মা বলল বাবা সাহিন একটু নিয়ে যাও তো । আমি খুবেই অবাক হলাম । অ্যান্টি আমাকে নিয়ে যেতে বলছে । আসলে মানুষের বিশ্বাস জন্ম নিলে সেই বিশ্বাসের সম্মান করতে হয় ।
আমি বিকালে শাহিন কে নিয়ে কাশফুল দেখাতে গেলাম । আফতার নগর আর বনশ্রী চার পাশে কাশফুল বন ।
সাহিন আমাকে বলছে
—ইমরান এই কাশফুল গুলো মেঘেদের বিদায় জানাতে মেঘের রূপে সেজেছে ।
— তাই সাহিন ।
— তোমার কি মনেও হয় ।
— না আমার চিন্তায় আসে না ।
— ইমরান ভালো করে দেখ ঐ দুরের কাশফুল আকাশের পেজা মেঘ যেন আজন্মের বন্ধু তোমার আমার মতো ।
— সাহিন তুমি চমৎকার করে কথা বল । তোমার প্রতিটা কথাই কবিতা ।
— ইমরান তুমি লেখবে আমাকে নিয়ে । আমি তোমার কোন এক গল্পের নায়িকা হব । সেই গল্পে কাশফুল থাকবে । আর গল্পের নায়িকা তার বন্ধু কে ভালবাসবে কিন্তু বন্ধুত্বের সন্মানে কেউ কাউকে বলবে না – ভালবাসার কথা । আচ্ছা ইমরান তুমি কি আমাকে ভাল বাস । মিথ্যা বলবে না।
— সাহিন আমি তোমাকে ভালবাসি দূর আকাশের মতো , ভোরের পাখিদের কলরবের মতো । আর ঘুমন্ত শিশুর পবিত্র মুখের মতো ।
—- ওহ ইমরান এই জন্যই তুমি আমার মনের প্রিয় বন্ধু । তোমাকে ভালবাসি মধ্যে রাত্রের শুখ তারার মতো । যে তারা পথ হারালে নাবিক কে পথ দেখায় । ইমরান আমার বিয়ে গেলে আমি তোমাকে খুব মিস করব । কারন তুমি আমাকে যে একুশটি কবিতা দিয়েছে প্রতিটা কবিতা আমার জন্য বসন্ত । তুমি আমাকে চাইলেও ভুলতে পারবে না। অনেক কথার মাঝে সময় কেটে যায় । পশ্চিমের লাল সূর্য বিদায় নিচ্ছে । কিছু পড়েই এই ধারা অন্ধাকার হবে। ইটপাথরের শহর লাল নীল বাতিতে তার রুপ তুলে ধরবে । সাহিন কে নিয়ে রিক্সায় উঠি বন গ্রাম যাওয়ার জন্য ।
। সেই দিন আর আমার অফিস যাওয়া হয় নেই ।
রাতের বেলা শাহিনের পাশে বসে কথা বলছি । আমাকে বলল ঐ ইমরান তোমার বোন বিউটির মতো করে আমার মাথায় তেল দাও একটু আর চুল গুলো আচরে দাও । অনেক কথার মাঝে একদিন বলেছি যে আমার বোনের মাথায় আমি তেল দিয়ে দেই । আমি তাই করলাম । শাহিন বলে ইমরান মেয়েদের মতো এত সুন্দর করে মাথার চুল কি করে আচরে দিস ? আমি বলাম শাহিন আমার মায়ের মাথা ব্যথা হলে আমি তো মায়ের মাথায় তেল দিতাম । সংসারের বড় ছেলে হলে অনেক কিছু জানতে হয় ।। আমাকে বলল ইমরান আমি ইটালি গেলে তোমাকে নিয়ে যাব শুধু মাথায় তেল দিতে ।
আমি বলাম জামাই পাইলে ইমরান ইতিহাস হয়ে যাবে । তখন বলবে হাই ইমরান ভাই ।
শাহিন বলল ইমরান সত্য আমি ইতিহাস হব তোমার গল্পের কবিতার । আমি হেসে বললাম তোমার নাম কোন গল্পে থাকবে না । সাহিন বলল সময় কথা বলবে ।
পরের দিন আমি একটা বিশেষ কাজে সিলেট চলে আসি । সাগর নাল ট্রি স্টেট এ । তিন মাস চা গাবানে কাটিয়ে দেই । ১৯৯৫ সাল খুব শীত । আমি হাতে করে মনি পুরী একটা চাদর শাহিনের জন্য কিনে নিয়ে আসি । শাহিন মানে আমার ভাল বন্ধু । মেয়েরা এত আধুনিক মনের হয় তাকে না দেখলে কোন দিন কাউকে বুঝানো যাবে না। তার বুদ্ধি ব্যবহার মায়া আর আদর্শ আমাকে কখন জানি তার বন্ধু বানিয়ে দিয়েছিল ।
সকাল ১১ টায় শাহিনের বাসায় যাই । আমাকে দেখে মনি একটা চিৎকার দিয়ে বলে ভাইয়া আপু নেই । আমি কিছুই বুঝতে পাড়ি না। সবাই আমাকে দেখে কান্না শুরু করে দেয় ।। অ্যান্টি বলে বাবা ইমরান আমার শাহিন মারা গেছে ।। শাহিন নাই ।। কি বলে অ্যান্টি ? আমার নিজের কানে কি শুনছি ।
আমার বিশ্বাস হচ্ছে না।
সাহিন নাই
সাহিন মারা গেছে
না এ হতে পারে না –
আমি নিজেই কান্না করতে লাগলাম ।।
জানতে পারলাম সাহিনের ক্যন্সার হয়েছিল ।
সাহিন না ফেরা দেশে চলে গেল । সাহিন সত্য ইতিহাস হল ।
মনি বলল সাহিন আপা আপনাকে খুব মিস করেছে । আমাকে বলেছে ইমরান যেন আমার জন্য কবিতা লিখে । তার কোন এক গল্পের নায়িকা হবার ইচ্ছা। যেন কাশফুল থাকে নদী থাকে সেই গল্পে ।
তার পর আর কোন দিন আমি শাহিনের বাসা সেই বনগ্রাম আর যাই না। আমি আজো ঐ পথে যায় না। মনে হয় সাহিন সেই কবিতা রেকট করছে ।
শাহিন যেন ইতিহাস হয়ে গেল আমার মনের মনি কুটিরে ।।
পরপারে ভাল থেক বন্ধু শাহিন ।। আমিও আজো কোন গল্পের নায়িকা বানাতে পারলাম না তোমাকে । কারন তুমি গল্পের চেয়ে বেশী পবিত্র আমার মনে ।।
১৯৯০ ।
— সেলিনা জাহান প্রিয়া ।।
প্রিয় অরণ্য চলো আবার ফিরে যাই ১৯৯০ সনে
ঐ নস্টালজিয়া মতো স্বচ্ছ এখন আর কিছুই নাই !
তুমি ১৯৯০ এর দশকের প্রেমিক পুরুষ আর
আমি অষ্টাদশী প্রেমিকা,
হতে পারবে কি!
অরণ্য ? চল ১৯৯০ ফিরে যাই ।
সপ্তহে এক বার কিংবা মাসে একবার হটাৎ বৃষ্টির মতো
এক পলক দেখা কিংবা দেখার জন্য কত অপেক্ষা !!
নীরব চোখ , নীরব কথা চিন্তা
চার পাশে কত চোখ
কত পাহারা
কত নিয়মের দেয়াল ঘেরা ।
চার পাশ নীরবতার মাঝে
মুখ ফিরিয়ে লাজুক হাসি
কত গল্প , কত অভিমান
সব ভুলে আবার চিঠি !!
একবার চিঠি দিয়ে অপেক্ষার রাত্রি
কথা হবে দু-জনের কেমন আআছি, এই প্রযন্ত।
টেলিফোন,ফেইসবুক,
টুইটার সব কিছু তখন কল্পনা অতীত ।
সাদা কালো টেলিভিশনে কত কল্পনা
তখন যে মনে মনে রঙ্গিন!
ইশারা দিয়ে ঐ কত কথা নীরব চোখ-
ডাক ঘরে তোমার বেনামে বেয়ারিং চিঠি
মনের আঙ্গিনায় থাকা কথা গুলো
নীল খামে করে রেখে আসার কি দারুন অনুভুতি!
তুমি বছরের পর বছর আমার দেখা না পেলেও
আমার জন্য ভালোবাসা গুলো জমিয়ে রাখতে
পারবে ঐ১৯ ৯০ দশকের প্রেমের মতো!
বছরে একবার দু বার সিনেমা দেখা
দুই ঈদে কিছুটা সময় স্বাধীন হয়ে যাওয়া
ফুসকার দুকানে চটপটি ঝালে লাল হয়ে যাওয়া
ফানটা সেভেন আপে সে কি দারুন মজা ।
এক মুঠো চুড়ি কিনে দিলে আনন্দে চোখের জল
তোমার ঐ ১৯৯০ দশকের প্রেম এই বিশ্বাসের ছায়া –
কোন দিন সন্দেহ করবে না ভালোবাসা নিয়ে।
আমার সাথে দেখা করার দিন লাল শাড়ি, নীল চুড়ি
আর কালো ছোট একটা টিপ
তুমি ঐ ১৯৯০ দশকের মতো হবে কি !
শত ঝড়,শত দুঃখ কষ্টে দু-জন একসাথে \
প্রিয় তম তুমি কি ১৯৯০ দশকের প্রেমিক হতে পারবে!
আমার জন্য রাস্থার মোরে অপেক্ষা ক্রতে করতে
আমায় হটাত দেখে সেই মিস্তি হাসি দিবে ?
বল তুমি সেই আমার অরণ্য হবে কি ?
১৯৯০ সনের ।।
আজহারুল ইসলাম (ফাহিম) :- ময়মনসিংহ জেলার ভালুকা উপজেলার ১ নং উথুরা ইউনিয়নের হাতিবেড় গ্রামে সম্ভান্ত মুসলিম পরিবারে জন্ম। পরিবারের ভাই বোনরে মধ্যে সর্বকনিষ্ঠ বোন শাহনাজ (শানু)। পরিবারের সবাই আদর করে ডাকে শানু বলে। এই শানু ছোট বেলা থেকেই গানেসাথে ছিল গভীর প্রেম ও দ্যান ধারণা। তিনি ছোট বেলায় বিভিন্ন স্কুল,কলেজে বার্ষিক ক্রিড়া, প্রতিযোগিতা গান গেয়ে অনেক গুনি ব্যক্তিদের হাত হতে পুরুষ্কার গ্রহন করেছেন।গায়িকা শানুর শিশুকাল মধুর কন্ঠের পরিচিতি র” শিক্ষা গুরুজন হলেন আসাদ খান (চন্দন)।
তার স্বপ্ন দেশের এক জন গুনি শিল্পী হয়ে আজীবন মানুষের মনের মণি কুঠায় বেঁচে থাকা। বর্তমান প্রজন্মের এক প্রতিশ্রুতি শীল: সংঙ্গীত শিল্পী (শানু)। ইতি মধ্যে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় হতে সংগীতে অনাস এবং মাষ্টাস্ করেন নজরুল সংগীতে। গায়িকা শাহনাজ শানু বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের শিক্ষাগুরুজন ছিলেন, রশিদুন নবী , আলিফ লায়লা আহম্মেদ শাকিল হাস্ মী, এছাড়া ও অনেক গুনী শিক্ষকমন্ডলী।
লেখাপড়া শেষে বিভিন্ন মিডিয়া জগতের আলোড়লন সৃষ্টকারী মধুর কন্ঠের গায়িকা ( শানু)। বাংলাদেশ বেতার, বাংলাদেশ টেলিভিশন, বিভিন্ন রেড়িও, প্রাইভেট টেলিভিশন চ্যানেল, এবং স্টেজ শো’ তে গান গেয়ে প্রশংসিত হচ্ছেন প্রতিনিয়ত। তার জীবনের ব্যস্ততা শুধু গান আর গান।চর্চাও করেন নিয়মিত। শিল্পী শাহনাজ শানু বড় হয়ে উঠার একমাত্র প্রিয় ব্যক্তি বাংলাদেশের জনপ্রিয় লোক সংগীত শিল্পী আবুবকর সিদ্দিক। শিল্পি শাহনাজ শানু শিশু কালে গানের হাতেখড়ি খালামনি কাছে। শিল্পী শাহনাজ শানু পাশাপাশি একটি স্বনাম ধন্য মীরপুরে গানের স্কুলে শিক্ষকতা করেন।তার কয়েকটি মৌলিক গান প্রকাশের অপেক্ষায়। শিল্পী শানুর একটি ব্যান্ডের নাম বাংলার ডুগডুগি, শিল্প শানুর মৌলিক গান প্রেমের বদনাম, এবং কি ইন্ডিয়া হতে প্রকাশ হতে যাচ্ছে প্রিয় এ্যালবাম। শিল্পী শাহনাজ শানু দেশ বাসিও প্রবাসীদের কাছে দোয়া চান, এবং বলেন আমি যেন বড় সংগীত শিল্পী হয়ে আপনাদের মাঝে বেঁচে থাকতে পারি।বাংলাদেশের অনেক গুনি সংগীত শিল্পীদের কাছে গিয়ে গান শিখতে পেরে আমি নিজে কে ধন্য মনে করি। সংগীত শিল্পি শানুর অভিপ্রায়, তবেই জীবন স্বার্থক হবে, যে দিন হব আমি একজন গুনি সংগীত শিল্পী।।
ইমরান হোসাইনঃঃ রজব আলি সারা রাত খুক খুক করে কাশে । কিন্তু তার স্ত্রী সেই কাশির মধ্যে আরামে ঘুমিয়ে যায় । মাঝে মাঝে এমন কাশি কাশে কেউ মনে করবে রাত জেগে চোর পাহারা দিচ্ছে । শীতের দিনের গ্রামে পালা করে চোর পাহারা দেয় । সবার হাতে থাকে লাঠি আর লাইট । রজব আলির বাড়ির সামনে আসলেই সবাই দাত বের করে হাসি দেয় । মিনিট মিনিট বাদেই খুক খুক করে কাশি দেয় ।
কাশি আর গেল না । দিনের বেলায় এই কাশি কই যায় কেউ বলতে পাড়ে না। শুধু রাতের এই কাশির জন্য কোথাও রজব আলি বেরাতে যায় না। মানুষের বাড়িতে এত কাশি দিলে কেউ ভাল চোখে দেখবে না। রজব আলির বঊয়ের নাম ললিতা । শাশুড়ি আদর করে ললি ডাকে । স্বামী অবশ্য খুব মিষ্টি করে বলে লতা ।
ললিতা মাদ্রসা থেকে কামিল পাস । গায়ের রঙ কালো বলে ভাল পাত্র পাই নাই । অন্য তিন বোনের ভাল জায়গা বিয়ে হয়েছে তাদের বাবা জামাইদের জমি বেচে মোটর সাইকেল কিনে দিয়েছে । সেই বোন গুলো খুবেই সুন্দর । বিয়ে সময় জানতো না। যে রাতের বেলা আদানি উঠে । আমাদের গ্রামে শ্বাস কষ্ট কে আদানি বলে । ললিতা বিয়ের পড়ে কিছু দিন সমস্যা হয়েছিল । এখন আর সমস্যা নাই । মানুষ মাত্র ধীরে ধীরে সব কিছুর সাথে মানিয়ে নেয় নিজেকে । ললিতা মানিয়ে নিয়েছে নিজেকে ।
মাধ্যে রাতে জাউতলার বাজার থেকে গফুর মিয়া বাড়িতে যায় । লোকটা আগে ডাকাত ছিল । স্বাধীনতার পড়ে রক্ষী বাহিনী অনেক ডাকাত কে মেরে ফেলেছে । এই গফুর মিয়া খুবেই রহস্যময় মানুষ । মুক্তিবাহিনীর নাম শুনলে আগে নাকি ভয়ে পা কাপত ।
কেউ কেউ মনে করে ডাকাতি ছেরে রাজাকার যোগ দিয়েছিল । মুক্তি বাহিনী এমন পেঁদানি দিয়েছে সেই ভয়টা যায় নাই । অনেক বছর দেশে ছিল না । এরশাদ ক্ষমতায় আসার পর বাড়ি ঘরে ফিরে এসে জাউতলা বাজারে কেরাসিনের দোকান দিছে । তার বউ খুব সুন্দরী কচি ডাবের মতো । গ্রামের তরুন ছেলেরা তার বউ কে নাম দিয়েছে রুপবান কন্যা । মেয়েটা আগে নরসিংদী যাত্রাতে অভিনয় করত ।
গফুরের সাথে লাইন মেরে চলে আসছে । গ্রামের সবাই জানে কিন্তু গফুর মিয়া কে সামনে কেউ বলে না।
মধ্যে রাতে সাইকেল চালিয়ে সে বাড়িতে ফিরে । সাইকে একটা টেন্ডেস্টার আছে । ছয় বল্ডের ব্যাটারি দিয়ে চালায় সাইকেলের সাথে । আব্বাস উদ্দিনের গান গুলো বেশী বাঁজায় ।
ললিতার স্বামীর কাশিতে ঘুম না ভাংলেও মাঝ রাতের ক্যাসেটে জন্য তার প্রায় ঘুম ভেঙে যায় । আর তখন ললিতা নিজেই বলে – বুড়া বেডা সখ কত । আল্লার খোদার ভয় নাই । তখন রজব আলি বলে আরে ঘুমাও মানুষ একটা কিছু নিয়ে বাচে । ললিতা তখন বলে
— ঘরে কি সুন্দর বঊ । কিন্তু মানুষের দিকে যে ভাবে তাকায় মনে হয় ডাহাইত !
রজব আলি বলে হ ঠিকেই কইছ । আমার বাবা কইছে সে আগে ভিন্ন দেশে ডাহাতি করত । প্রায় থানা পুলিশ তাকে খুজতে আসত । সে এখন লোক এখন ভাল হয়ে গেছে
— তুমি থাম । তোমার কাছে জগতের সবাই ভাল । মানুষ কোন দিন তার চরিত্র বদলাতে পাড়ে না। নামাজ রোজা করলে আমি বিশ্বাস করতাম । কিন্ত গফুর মিয়ার চোখ ভাল না । আমার নানী জান বলেছে যে পুরুষ মানুষ মেয়েদের শরীর দেখলে মিচকি হাসি দেয় সে হইল শয়তান । লজ্জা না পেয়ে সে আমারে দেখে একদিন চেয়ে চেয়ে সেই মিছকি হাসি দিয়েছে ।আমি হলাম তার মেয়ের বয়সী সে কিনা আমারে বলে ললিতা বানু ।
রজব আলি বলে – প্রতিদিন আমাদের এই গফুর মিয়া রে নিয়া সমস্যা হয় । তারে বহুদিন বলছি আমার বাড়ির সামনে আসলে গান বাজনা বন্ধ করে দিতে। আমার বউ নামাজ কালাম পড়ে । কিন্তু সে মাঝে মাঝে ভুলে যায় ।
শীত গিয়ে বর্ষা কাল রজব আলী আর ললিতার সুখের সংসার ।
রাতের বেলা গফুর সাইকেল চালিয়ে যাচ্ছে । গফুর ভাল করে খেয়াল করল রজব আলির কাশের কোন শব্দ নাই । সাইকেল থেকে নামলো । ক্যাসেট প্লেয়ার বন্ধু করে কিছু ক্ষণ চুপ করে রইল । তার পর টিপ টিপ পায়ে গায়ের চাদর টা মাথায় দিয়ে রজব আলির বাড়িতে আসলো । সুনসান উঠান । গয়াল ঘর দেখল গরু শুয়ে আছে । চিন্তায় পড়ে গেল । গত দুই বছরে কোন দিন রজব আলির কাশি বন্ধ হয় নাই । মিনিটে মিনিটে কাশি দেয় । বাঁশের বেরার ফাক দিয়ে চুকি দিয়ে দেখে ললিতা ঘুমাইতেছে । তবে পরনে শুধু ছায়া আর ব্লাউজ ।
গফুরের চোখ থেকে আর পলক পড়ে না। কি মায়া ভরা মুখ । গালের মধ্যে চুল গুলো এসে পড়েছে । মনে হচ্ছে কবুতরের বাচ্চা একা একা শুয়ে আছে ।
ভাল করে বাড়ির চার দিক দেখে । না কেউ কোথাও নেই । রজব আলী নাই তার মা নাই । বাড়িটা একদম খালি । চারপাশে শুধু গাছ আর গাছ ।
গফুর ধীরে ধীরে বাঁশের বেড়ার গুনার তারের বাঁধ গুলো খুলতে থাকে । আকাশের মেঘের গর্জন শুরু হয় , বিজলী চমকাতে থাকে । গফুর বেরা ফাক করে খুব ধীরে ঘরে ডুকে যায় । কুপি বাতির সলতাটা হাতে নিয়ে ললিতার মুখ টা ভাল করে দেখে । ললিতার শরীর টা দেখে । একটা তৃপ্তির হাসি দেয় গফুর মিয়া । যেন একটা ঘুমন্ত হরিন আজ জঙ্গলে বাঘ একা পেয়েছে । খুব ধীরে ঘরের গামছা দিয়ে ললিতার হাতটা বাধে ।
মুখ টা বাধতে নিলেই ললিতা চোখ মেলে তাকিয়ে চিৎকার দিতে চায় । তখন কিন্তু গফুর তার বুকের উপরে উঠে বসেছে । কিছুতেই আর ললিতা শব্দ করতে পাড়ে না।
ললিতার হাত বাঁধা মুখ বাঁধা । কুপি দাউ দাউ করে জলছে । আকাশ ভেঙে বৃষ্টি পড়ছে । বর্ষার আকাশ যেন বন্যা বয়ে দিবে । ললিতার শরীর থেকে কাপড় খুলে নিয়ে হায়েনার মতো ঝাপিয়ে পড়ে গফুর তার উপর । কোন দোয়া মায়া নেই যেন একটা হায়েনা শরীর থেকে মাংস ছিরে ছিরে খাচ্ছে । ধর্ষণ শেষ করে মাটির কলসি থেকে পানি ঢেলে গফুর মিয়া পানি খায় । ললিতা ঠোঁট থেকে রক্ত পড়তে থাকে ।
ললিতার পড়ার কাপড় টা বিছানায় ছিল । গফুর হাতে নিয়ে ললিতার গলায় খুব জুড়ে একটা প্যাচ দেয় । চোখ গুলো চেয়ে থাকে গফুরের দিকে । ললিতা শেষ নিঃশ্বাস বের হয়ে যায় । ডাকাত গফুর বুকের মধ্যে হাত দিয়ে নিশ্চিন্ত হয় ললিতা মারা গেছে । ললিতার কানের হাতের গলার জিনিস গুলো খুলে । কাঠের আলমারি খুলে কিছু টাকা পায় সেই গুলো নেয় । ললিতার হাতের গামছ টা খুলে বেরারে ফাক দিয়ে গফুর বের হয় । মাথায় গামছটা দেয় যাতে বৃষ্টির পানি না পড়ে ।
ললিতার মরা দেহ টা চকীর উপর পড়ে থাকে । সাইকেল চালাতে চালাতে গফুর ডাকাত বাড়ির দিকে যায় ।
ললিতার স্বামী রজব আলী তার মাকে নিয়ে বোনের বাড়ি গিয়েছিল । বোনের বাচ্চা হবে তাই । মাকে রেখেই চলে আসতো । কিন্তু বোনের আবস্তা ভাল না । তাই তাকে নিয়ে হাসপাতালে যেতে হয় । ভোর বেলায় তার বোনের একটা মেয়ে জন্ম হয় । ভাগ্নী কুলে নিয়ে রজিব আলী বলে মা দেখ ভাগ্নি তো আমাদের ললিতার মতো হইছে ……………………………………… ।। চলমান ।।
ফকরুদ্দীন আহম্মেদ, নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
চলমান সমস্যায় বাংলাদেশে নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণ বিস্তার বৃদ্ধি পাওয়ায় সভা সমাবেশ নিষেধ থাকায় সকল শ্রমিক সংগঠনকে নিরাপদে থাকার পরামর্শ ও সচেতনতা করে মহান মে দিবস২০২০ এর শুভেচ্ছা জানালেন,ত্রিশাল পৌরসভার মেয়র সাবেক ছাত্রনেতা ও সাবেক সফল যুবনেতা আলহাজ্ব এবিএম আনিছুজ্জামান আনিছ। প্রহেলা মে সকালে দেশের জনপ্রিয় অনলাইন দৈনিক পল্লী সংবাদের সাথে মুঠোফোনে এই শুভেচ্ছা বার্তা প্রকাশ করেন।
তিনি আরো বলেন, ১৮৮৬ খ্রিস্টাব্দে আমেরিকার শিকাগো শহরের হে মার্কেটের ম্যাসাকার শহিদদের আত্মত্যাগকে স্মরণ করে পালিত হয় দিবসটি। সেদিন দৈনিক আটঘণ্টার কাজের দাবিতে শ্রমিকরা হে মার্কেটে জমায়েত হয়েছিল। তাদেরকে ঘিরে থাকা পুলিশের প্রতি এক অজ্ঞাতনামার বোমা নিক্ষেপের পর পুলিশ শ্রমিকদের ওপর গুলিবর্ষণ শুরু করে। ফলে প্রায় ১০-১২ জন শ্রমিক ও পুলিশ নিহত হয়।১৮৮৯ খ্রিস্টাব্দে ফরাসি বিপ্লবের শতবার্ষিকীতে প্যারিসে দ্বিতীয় আন্তর্জাতিকের প্রথম কংগ্রেস অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে ১৮৯০ খ্রিস্টাব্দে থেকে শিকাগো প্রতিবাদের বার্ষিকী আন্তর্জাতিকভাবে বিভিন্ন দেশে পালনের প্রস্তাব করেন রেমন্ড লাভিনে।
১৮৯১ খ্রিস্টাব্দে আন্তর্জাতিকে দ্বিতীয় কংগ্রেসে এই প্রস্তাব আনুষ্ঠানিক ভাবে গৃহীত হয়। এর পরপরই
১৮৯৪ খ্রিস্টাব্দে মে দিবসের দাঙ্গার ঘটনা ঘটে। পরে, ১৯০৪ খ্রিস্টাব্দে
আমস্টারডাম শহরে অনুষ্ঠিত সমাজতন্ত্রীদের আন্তর্জাতিক সম্মেলনে এই উপলক্ষ্যে একটি প্রস্তাব গৃহীত হয়। প্রস্তাবে দৈনিক আটঘণ্টা কাজের সময় নির্ধারণের দাবি আদায়ের জন্য এবং শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য বিশ্বজুড়ে ১ মে তারিখে মিছিল ও শোভাযাত্রা আয়োজন করতে সকল সমাজবাদী গণতান্ত্রিক দল এবং শ্রমিক সংঘের ট্রেড ইউনিয়নের প্রতি আহ্বান জানানো হয়। সেই সম্মেলনে “শ্রমিকদের হতাহতের সম্ভাবনা না-থাকলে বিশ্বজুড়ে সকল শ্রমিক সংগঠন মে মাসের ১ তারিখে ‘বাধ্যতামূলকভাবে কাজ না-করার’ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। অনেক দেশে শ্রমজীবী জনতা মে মাসের ১ তারিখকে সরকারি ছুটির দিন হিসেবে পালনের দাবি জানায় এবং অনেক দেশেই এটা কার্যকর হয়। দীর্ঘদিন ধরে সমাজতান্ত্রিক, কমিউনিস্ট এবং কিছু কট্টর সংগঠন তাদের দাবি জানানোর জন্য মে দিবসকে মুখ্য দিন হিসাবে বেছে নেয়। কোনো কোনো স্থানে শিকাগোর হে মার্কেটের আত্মত্যাগী শ্রমিকদের স্মরণে আগুনও জ্বালানো হয়ে থাকে। পূর্বতন সোভিয়েত রাষ্ট্র, চিন, কিউবাসহ বিশ্বের অনেক দেশেই মে দিবস একটি তাৎপর্যপূর্ণ দিন। সেসব দেশে এমনকি এ উপলক্ষ্যে সামরিক কুচকাওয়াজের আয়োজন করা হয়। বাংলাদেশ ও এই দিনটি যথাযথভাবে পালিত হয়ে আসছে। তাই সকল শ্রমিক তাদের কর্ম বিরতি দিয়ে ১মে দিবসটি পালন করেন। চলমান সমস্যা করোনার তান্ডবে সারাবিশ্ব স্তব্ধ লাখ লাখ মানুষ মৃত্যুতে শোকাহত পৃথিবীর সব রাষ্ট্র। মে দিবস পালন করতে না পারলেও ত্রিশালের সকল
শ্রমিক সংগঠন ও শ্রমিক ভাইদের প্রতি রইলো শুভেচ্ছা। সবশেষে মেয়র বলেন, চলমান করোনা সমস্যায় কর্মহীন দিন রুজি করা শ্রমিকদের পাশে বৃত্তবান শ্রমিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দরা যেন এগিয়ে আসেন। অসহায় শ্রমিকরা তারা যেন, না খেয়ে না থাকেন।
এতো ক্ষমতার পরেও যদি
অসহায় হয় নারী,
নিরবে শোষণ করছে পুরুষ
অসহায়া নাম ধারী।
নিভৃতে আজ নিপীড়িত পুরুষ
নির্যাতনের শিকার,
নারীনির্যাতন রয়েছে আইন
নেই পুরুষের আধির।
বেপর্দা আর বেপরোয়া তারা
ফ্যাশানে অশ্লিলতা,
মেনেনিতে তারাও চায়না যে আজ
অসহায়েত্বের কথা।
ক্ষমতার দম্ভে কত নারী আজ
ভুলেছে সকল লাজ,
কেহ হয়েছে মিস পাপিয়া
কেউ বা মমতাজ।
তাদের তেজে এই বাংলায়
চলা বড় দায়,
কিভাবে তারা বলে আজো
নারীরা অসহায়?
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর পৃথিবীর সামনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে এসেছে মহামারী করোনা ভাইরাস। দেশে দেশে চলছে লকডাউন, ঘরে বন্দি মানুষ। তারপরেও প্রতিদিনই মৃত্যুর মিছিলে যোগ হচ্ছেন হাজার হাজার মানুষ। আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে হু হু করে। এরই মধ্যে বিশ্বজুড়ে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় সাড়ে ১৬ লাখেরও বেশি মানুষ। মৃত্যুর সংখ্যা প্রায় লাখ ছুঁই ছুঁই। কার্যকর কোন ওষুধ নেই, নেই কোন প্রতিষেধক।
তবে গবেষকরা দাবি করলেন, করোনাকে কাবু করার সবচেয়ে কার্যকরী অস্ত্র তৈরি করে ফেলেছেন তারা। করোনা থেকে রক্ষা পেতে ওষুধ আবিষ্কারের দাবি করেছেন জাপানের বিজ্ঞানীরা। আশার কথা হলো- এটি এখন বাংলাদেশেও তৈরি হচ্ছে।
জাপানের ফুজিফিল্ম তয়োমা ফার্মাসিউটিক্যালস লি. তৈরি করেছে ফ্যাভিপিরাভির ‘অ্যাভিগান’ নামে ট্যাবলেট। যা কিনা করোনা ভাইরাসকে কার্যকরভাবে মেরে ফেলতে সক্ষম। এরই মধ্যে অন্তত ডজনখানেক ওষুধ যেমন- ফ্যাভিপিরাভির, রেমডেসিভির, ইন্টারফেরন আলফা টুবি, রিবাভিরিন, ক্লোরোনকুইনিন, লোপিনাভির এবং আরবিডল কভিড-১৯ চিকিৎসার সারিতে জমা হয়েছে। সরাসরি নভেল করোনাভাইরাসের জন্য তৈরি না হলেও অন্য ভাইরাসের বিরুদ্ধে কাজ করা ড্রাগ করোনাভাইরাস ঠেকাতে পরীক্ষামূলকভাবে ব্যবহার শুরু হয়েছে।
করোনা ভাইরাসের চিকিৎসায় ট্যাবলেট অ্যাভিগান তৈরি করছে জাপানের ফুজি ফিল্ম কোম্পানির সাবসিডিয়ারি ওষুধ কোম্পানি তয়োমা কেমিক্যাল। ট্যাবলেটটির জেনেরিক নাম ফ্লাভিপাইরাভির। ওষুধটি এখন বাংলাদেশের বেক্সিমকো ও বিকন ফার্মাসিউটিক্যালস তৈরি শুরু করছে বলে দেশের একটি জাতীয় পত্রিকার অনলাইনের খবরে বলা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিকন ফার্মাসিউটিক্যালস আগামী রোববার (১২ এপ্রিল) ওষুধটি স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও ঔষধ প্রশাসনে হস্তান্তর করবে। ওষুধটি সরকারকে সরবরাহ করার পাশাপাশি যে সমস্ত হাসপাতালে করোনা রোগী আছে সেখানেও সরবরাহ করা হবে। তবে এখনই ফার্মেসিতে সরবরাহ করা হবে না। ম্যাটেরিয়াল স্বল্পতার কারণে মাত্র ১০০ রোগীর জন্য ওষুধটি তৈরি হবে, তবে এ মাসের মধ্যেই ওষুধটি উৎপাদন বাড়াতে পারবে বলে কোম্পানির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস যে সমস্ত হাসপাতালে করোনা রোগী ভর্তি আছে সেখানে ওষুধটি পৌঁছে দেবে। প্রতিটি ট্যাবলেটের দাম ৪০০ টাকা হলেও এখন এটি বিনামূল্যে আক্রান্ত রোগীদের সরবরাহ করা হবে।
ওষুধটি প্রস্তুতের পেটেন্ট জাপানের হলেও অনুন্নত দেশ হিসেবে তারা বাংলাদেশকে ২০৩৩ সাল পর্যন্ত ওষুধটি প্রস্তুতের অনুমোদন দিয়েছে।
ফ্লাভিপাইরাভির ওষুধটি কভিভ-১৯ রোগের সুনিশ্চিত চিকিৎসা নয়, তবে ১২০ জন রোগীর ওপরে পরীক্ষা করে সাফল্য পাওয়া গেছে। আক্রান্ত তরুণ রোগীদের ওপর ওষুধটি ব্যবহার করে সাত দিনে এবং বয়স্কদের ওপর ব্যবহার করে নয় দিনে কোভিড-১৯ নেগেটিভ হয়েছে। ফ্লাভিপাইরাভির ওষুধটির সাথে ওরভেসকো নামক আরও একটি ওষুধ মিলিয়ে ট্রায়ালগুলো করা হয়েছে।
জাপান, তুরস্ক এবং চায়না ওষুধটি ব্যবহার করছে। কোভিড-১৯ রোগে আক্রান্তের তিনটি পর্যায়- সাধারণ, মাঝারি ও মারাত্মক। এই তিন ক্ষেত্রেই ওষুধটি কার্যকর। গর্ভস্থ শিশুর ওপর ওষুধটির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে।
প্রসঙ্গত, গত ৮ এপ্রিল অসম্পাদিত ‘মেডিকেল আর্কাইভ’ নামে এক প্রি-প্রিন্ট জার্নালে প্রকাশিত চীনের উহান বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জিংহুয়ান ওয়াং-এর নেতৃত্বে এক গবেষণা প্রবন্ধে বলা হয়, ক্লিনিকাল ট্রায়ালে অ্যাভিগান জ্বর, কাশি এবং শ্বাসকষ্ট আর এক ওষুধ আরবিডলের সাথে তুলনায় কার্যকরী যা করোনাভাইসের চিকিৎসা হিসেবে ব্যবহার করা যাবে।
তাদের গবেষণা বলছে, অ্যাভিগান ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের জন্য গত ২০ ফেব্রুয়ারি থেকে ১২ মার্চ পর্যন্ত চীনের উহান বিশ্ববিদ্যালয়ের জংগান হাসপাতাল উহান লেসেশান হাসপাতাল এবং হুবেই প্রদেশের আর একটি হাসপাতালে ২৩৬ জন কোভিড-১৯ আক্রান্ত মাত্র সাত দিনের মধ্যে অন্তত ৬১ শতাংশ রোগী ৭ দিনে জ্বর, কাশি থেকে মুক্ত হোন। এছাড়া এইসব রোগীদের জন্য শ্বাস-প্রশ্বাসের জন্য কৃত্রিম অক্সিজেন সরবরাহ করার প্রয়োজন পড়েনি।
এন্টিভাইরাল ওষুধের মধ্যে অন্যতম জাপানের ফুজিফিল্ম তয়োমা ফার্মাসিউটিক্যালস লি.-এর তৈরি ফ্যাভিপিরাভির অ্যাভিগান। যেটি ২০১৪ সাল থেকে ইনফ্লুয়েঞ্জার চিকিৎসার জন্য তৈরি করা হয়। চীন উহানে কোভিড-১৯ ব্যাপক প্রাণহানির পর সেই দেশের সরকার গত মার্চে দাবি করে, এভিগান ওষুধ ‘কোভিড-১৯’ প্রতিরোধে ভাল কাজ দিয়েছে। চীনের দাবির এক মাসের মধ্যে জাপানের স্বাস্থ্য, শ্রম ও কল্যাণ মন্ত্রী কাতসুনোবু কাতো ইঙ্গিত দেন যে ‘এভিগান’ কোভিড -১৯-এর বিরুদ্ধে পরীক্ষা করার পরিকল্পনা করছে।
আর এরপরই মূলত কোভিড-১৯ জন্য অ্যাভিগানকে প্রস্তুত করতে উঠে পড়ে লাগে জাপান। এর মধ্যে গত ৩১ মার্চ ফুজিফিল্মর প্রেসিডেন্ট জুনিজি ওকাদা এক বিবৃতিতে, ফ্যাভিপিরাভিরের জেনরিকের অ্যাভিগান তৃতীয় ধাপে ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শুরু করেছে দাবি করেন। কোভিড-১৯ মহামারি রুখতে বিশ্বের অন্যন্য দেশের চাহিদা অনুযায়ী জাপান সরকারের পরামর্শক্রমে তারা এই ওষুধ সরবরাহ করবে জানান।