দেশে করোনাভাইরাস ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। করোনার ২য় ঢেউয়ে প্রতিদিনই ভাঙছে আক্রান্তের রেকর্ড। এমন একটি ভাইরাস যা ভিআইপি, এমপি, মন্ত্রী, ধনী, গরীব, যুবক, বৃদ্ধ কাউকে চিনছে না। কে কিভাবে আক্রান্ত হচ্ছেন তা নিজেও জানতে পারেন না। সর্বোচ্চ সতর্ক থেকেও রক্ষা পাচ্ছেন না মরণঘাতি এই ভাইরাসের হাত থেকে। করোনায় মারা যাচ্ছেন ধার্মিক, অধার্মিক, গরীব, ধনী থেকে ভিআইপি, এমপি, মন্ত্রীরা। ভিআইপিরা যে যার মতো সাবধানতা অবলম্বন করে চলার চেষ্টা করছেন। আক্রান্ত হলেও সর্বোচ্চ ভাল চিকিৎসা নিচ্ছেন তবুও শেষ রক্ষা হচ্ছে না।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতিটি অনুষ্ঠানেই বক্তব্য রাখার সময় সবাইকে সাবধান থাকতে বলছেন, মাস্ক ব্যবহার, বেশি বেশি সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার কথা মনে করিয়ে দিচ্ছেন। করোনার প্রকোপ বাড়াতে লকডাউনও দিয়েছে সরকার। কিন্তু জনগণ যে যার মতো স্বাস্থ্যবিধি না মেনেই চলছেন। তাই বেড়েই চলেছে করোনা। করোনার এই নতুন ঢেউয়ে সরকারের প্রতিমন্ত্রী, জাতীয় সংসদের হুইপসহ অন্তত ৩০ জন সংসদ সদস্য আক্রান্ত হয়েছেন। নতুন করে আক্রান্ত হওয়াদের মধ্যে রয়েছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর ২ জন সদস্য ও সম্পাদকমন্ডলীর ২ জন সদস্য। জাতীয় সংসদ ও আওয়ামী লীগ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
তথ্য অনুযায়ী, আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও কুমিল্লা-৫ আসনের এমপি অ্যাডভোকেট আবদুল মতিন খসরু, চট্টগ্রাম-১ আসনের এমপি ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, জামালপুর-৪ আসনের সংসদ সদস্য ও তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান, চট্টগ্রাম-১২ আসনের এমপি ও সরকার দলীয় হুইপ শামসুল হক চৌধুরী, আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক সম্পাদক ও নেত্রকোণা-৩ আসনের এমপি অসীম কুমার উকিল, আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক ও গাজীপুর-৫ আসনের এমপি মেহের আফরোজ চুমকি, গাজীপুর-৪ আসনের এমপি বঙ্গতাজ কন্যা সিমিন হোসেন রিমি, রাজবাড়ী-১ আসনের এমপি ও সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী কাজী কেরামত আলী করোনা আক্রান্ত।
এছাড়া কক্সবাজার-১ আসনের এমপি জাফর আলম, কক্সবাজার-২ আসনের এমপি আশেক উল্লাহ রফিক ও কক্সবাজার-৪ আসনের এমপি শাহীন আক্তার (সাবেক এমপি আব্দুর রহমান বদির স্ত্রী ), কুমিল্লা-৪ আসনের এমপি রাজী মোহাম্মদ ফখরুল, ফেনী-২ আসনের এমপি নিজাম উদ্দিন হাজারী, নোয়াখালী-৩ আসনের এমপি মামুনুর রশিদ কিরণ, হবিগঞ্জ-১ আসনের এমপি গাজী মোহাম্মদ শাহনওয়াজ, হবিগঞ্জ-২ আসনের এমপি আব্দুল মজিদ খান, রাজশাহী-১ আসনের এমপি ওমর ফারুক চৌধুরী, বরিশাল-৪ আসনের এমপি পঙ্কজ দেবনাথ, ঢাকা-২০ আসনের এমপি বেনজির আহমেদ, পাবনা জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও পাবনা-২ আসনের সংসদ সদস্য আহমেদ ফিরোজ কবির, সিরাজগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য তানভীর ইমাম, টাঙ্গাইল-২ আসনের এমপি তানভীর হাসান ছোট মনির, ঢাকা-৭ আসনের এমপি হাজী মো. সেলিম, বগুড়া-৭ আসনের এমপি রেজাউল করিম বাবলু করোনাভাইরাতে আক্রান্ত। সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্যদের মধ্যে নাহিদ ইজহার খান, শিরীন আহমেদ, জান্নাতুল বাকিয়া, অ্যারোমা দত্ত, রওশন আরা মান্নান, অ্যাডভোকেট খোদেজা নাসরিন আক্তার হোসেন আক্রান্ত। সাবেক এমপি সারাহ বেগম কবরী করোনা আক্রান্ত। ঢাকা-১৭ আসনের এমপি আকবর হোসেন পাঠান ফারুক (নায়ক ফারুক) করোনা নেগেটিভ হয়ে চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে গিয়ে অসুস্থ্য হয়ে আইসিইউতে রয়েছেন।
করোনা নেগেটিভ এলেও সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের আইসিইউতে রয়েছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও কুমিল্লা-৫ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট আবদুল মতিন খসরু। গত ১৫ মার্চ আব্দুল মতিন খসরু সংসদ সচিবালয়ে করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা দেন। ১৬ মার্চ সকালে তার রিপোর্টে করোনা পজিটিভ আসে। ওইদিনই তাকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) ভর্তি করা হয়। গত ২৮ মার্চ রাত ১২টার দিকে আব্দুল মতিন খসরুকে আইসিইউতে নেওয়া হয়। পরে ১ এপ্রিল করোনা পরীক্ষায় নেগেটিভ আসে। গত ৩ এপ্রিল মতিন খসরুকে সিএমএইচের আইসিইউ থেকে সাধারণ কেবিনে স্থানান্তর করা হলেও ৬ এপ্রিল রাতে পুনরায় আইসিইউতে নেওয়া হয়।
৬ এপ্রিল করোনা আক্রান্ত হয়ে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছেন আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক সম্পাদক ও নেত্রকোণা-৩ আসনের সংসদ সদস্য অসীম কুমার উকিল। এর আগে করোনা পজিটিভ আসায় ঢাকায় নিজ বাসায় আইসোলেশনে আছেন আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক ও গাজীপুর-৫ আসনের সংসদ সদস্য মেহের আফরোজ চুমকি।
গত ৩১ মার্চ সিরাজগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য তানভীর ইমাম জাতীয় সংসদ ভবন সংলগ্ন বুথে কোভিড-১৯ পরীক্ষার জন্য নমুনা দেন। সন্ধ্যায় তার নমুনা পরীক্ষায় করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। বর্তমানে তিনি রাজধানীর বাসায় আইসোলেশনে রয়েছেন। মঙ্গলবার তার শারীরিক কিছু পরীক্ষা করা হয়েছে। এতে তিনি এখন মোটামুটি সুস্থ ও ভালো আছেন।
করোনা আক্রান্ত হয়ে রাজধানীর হেলথ অ্যান্ড হোপ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন সংরক্ষিত আসনের এমপি খোদেজা নাসরিন আক্তার হোসেন। জাতীয় সংসদ অধিবেশনে যোগদানের আগে ২ এপ্রিল করোনা পরীক্ষার নমুনা দেন তিনি। ৩ এপ্রিল সকালে রিপোর্টে করোনা পজিটিভ আসে। ওইদিন রাতে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। বর্তমানে তার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে।
টিকা নেওয়ার প্রায় দুই মাস পরে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন পাবনা জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও পাবনা-২ আসনের সংসদ সদস্য আহমেদ ফিরোজ কবির। গত ৩০ মার্চ জাতীয় সংসদ সচিবালয়ে নমুনা দিয়ে আসার পর ৩১ মার্চ দুপুরে তিনি করোনা পজিটিভ রিপোর্ট পান। বর্তমানে বাসায় আইসোলেশনে আছেন।
গত ৩ এপ্রিল জাতীয় সংসদ সচিবালয়ে করোনার নমুনা দিলে ৪ এপ্রিল পজিটিভ রিপোর্ট আসে টাঙ্গাইল-২ আসনের সংসদ সদস্য তানভীর হাসান ছোট মনির। বর্তমানে ঢাকায় তার বাসায় আইসোলেশনে রয়েছে। টিকা নেওয়ার দেড় মাস পর করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন রাজবাড়ী-১ আসনের সংসদ সদস্য ও সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী কাজী কেরামত আলী। গত ২৫ মার্চ করোনা রিপোর্ট পজিটিভ আসায় রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি।
করোনা আক্রান্ত হয়ে গত ৩০ মার্চ থেকে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন গাজীপুর-৪ আসনের সংসদ সদস্য বঙ্গতাজ কন্যা সিমিন হোসেন রিমি। এর আগে গত ২৩ মার্চ করোনা আক্রান্ত হয়ে রাজধানীর ল্যাব এইড হাসপাতালে ভর্তি হন ঢাকা-৭ আসনের সংসদ সদস্য এবং মদিনা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হাজী মো. সেলিম। করোনায় আক্রান্ত হয়ে ৫ এপ্রিল রাতে সাবেক এমপি সারাহ বেগম কবরী রাজধানীর কুর্মিটোলা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। চলতি সপ্তাহেই জ্বর আসে কবরীর। শরীরে ব্যথাও ছিলো। করোনা নমুনা পরীক্ষা হলে রিপোর্টে করোনা পজিটিভ এসেছে।
এদিকে সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অভিনেতা ও সংসদ সদস্য আকবর হোসেন পাঠান ফারুক জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে রয়েছেন। গত ২১ মার্চ থেকে তিনি হাসপাতালটির আইসিইউতে অজ্ঞান অবস্থায় রয়েছেন। পাকস্থলীতে রক্তক্ষরণের কারণে তার অবস্থা বেশ গুরুতর বলে জানিয়ে তার ছেলে শরৎ বলেন, বাবার রক্তে ব্যাক্টেরিয়াজনিত সংক্রমণ ভয়াবহভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। পাকস্থলীতে ইন্টারনাল রক্তক্ষরণ হয়েছে। গত ৪ মার্চ নিয়মিত চেকআপের জন্য সিঙ্গাপুর যান ফারুক। সেখানে গিয়ে আরও বেশি অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। এর আগে রক্তে সংক্রমণ ও টিবি ধরা পড়ার কারণে তাকে সিঙ্গাপুরেই প্রায় ৪৭ দিন হাসপাতালে কাটাতে হয়েছিল। কিছুটা সুস্থ হয়ে দেশে ফেরার পর করোনায় আক্রান্ত হন। এরপর সুস্থ হয়ে সিঙ্গাপুরে নিয়মিত চেকআপের জন্য গেলে সেখানে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন।
এদিকে করোনায় মারা গেছেন বেশ বর্তমান সংসদের বেশ কয়েকজন এমপি এবং সাবেক এমপি। এর মধ্যে রয়েছেন, ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ আব্দুল্লাহ, সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র বদরউদ্দিন আহমদ কামরান, এটর্নী জেনারেল মাহবুবে আলম, ঢাকার সাবেক এমপি হাজী মকবুল হোসেন, নওগা-৬ আসনের এমপি ইসরাফিল আলম, সিলেট-৩ আসনের সংসদ সদস্য মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী, মৌলভীবাজার জেলার সাবেক এমপি তোয়াবুর রহিম, মানিকগঞ্জ-২ আসনের সাবেক স্বতন্ত্র এমপি শামসুদ্দিন আহমেদ, সাবেক প্রতিমন্ত্রী আ খ ম জাহাঙ্গীর, সাবেক মন্ত্রী ও বিএনপি নেতা চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ, সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী মোশাররফ হোসেন, সাবেক প্রতিমন্ত্রী মেজর জেনারেল (অব) আনোয়ারুল কবির তালুকদার, সাবেক এমপি আবু হেনা, সাবেক এমপি ও কেন্দ্রীয় বিএনপি নেতা আমজাদ হোসেন, কুমিল্লা-১০ আসনের সাবেক এমপি ও জাতীয় পার্টি নেতা এটিএম আলমগীর।
দেশের সুশীল সমাজ, ব্যবসায়ীদের মধ্যেও করোনায় মারা গেছেন অনেকে। তাদের মধ্যে রয়েছেন, শিক্ষাবিদ, লেখক ও জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান, যমুনা গ্রুপের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম বাবুল, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও অ্যাপেক্স গ্রুপের চেয়ারম্যান সৈয়দ মঞ্জুর এলাহীর স্ত্রী সানবিমস স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা প্রিন্সিপাল নিলুফার মঞ্জুর, এস আলম গ্রুপের পরিচালক মোরশেদুল আলম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ও ফারইস্ট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ভিসি, ইসলামী উন্নয়ন ব্যাংকের সাবেক কর্মকর্তা ড. নাজমুল করিম, শান্ত-মারিয়াম ইউনিভার্সিটি অব ক্রিয়েটিভ টেকনোলজির ও সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিস (প্রা.) লিমিটেডের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ইমামুল কবীর শান্ত, খ্যাতিমান প্রকৌশলী জাতীয় অধ্যাপক ড. জামিলুর রেজা চৌধুরী, রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যান বজলুল করিম চৌধুরী, টিভি ব্যাক্তিত্ব প্রযোজক, নাট্য নির্দেশক, অভিনেতা, আবৃত্তিকার মোস্তফা কামাল সৈয়দ, প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদের ছোট ভাই বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক আবদুল হাই, এনটিভির সাবেক বার্তা সম্পাদক সুমন মাহমুদ, দৈনিক সময়ের আলোর নগর সম্পাদক হুমায়ুন কবীর খোকন, ভোরের কাগজের ক্রাইম রিপোর্টার গীতিকার আসলাম রহমান, দৈনিক সময়ের আলোর মাহমুদুল হাকিম অপু।
এদিকে করোনায় আক্রান্ত হয়ে সুস্থ্য হয়েছেন অনেকে। তাদের মধ্যে রয়েছেন, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এবং মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মোজাম্মেল হক, পরিকল্পনা মন্ত্রী এমএ মান্নান, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ, ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ও জামালপুর-২ ফরিদুল হক খান দুলাল, সাবেক স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন, আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য অ্যাড. জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও কুষ্টিয়া-৩ আসনের এমপি মাহবুবউল আলম হানিফ, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাবেক চীফ হুইপ উপাধ্যক্ষ আবদুস শহীদ, সাবেক হুইপ নওগাঁ-২ আসনের শহিদুজ্জামান সরকার, রেল মন্ত্রণালয় বিষয়ক কমিটির সভাপতি এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরী এমপি, যশোর-৪ আসনের এমপি রণজিত কুমার রায়, চট্টগ্রাম-৮ আসনের এমপি মোসলেম উদ্দিন, চট্টগ্রাম-১৬ আসনের এমপি মোস্তাফিজুর রহমান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫ আসনের সংসদ সদস্য মোহাম্মদ এবাদুল করিম বুলবুল এবং গণফোরাম দলীয় সংসদ সদস্য মোকাব্বির খান
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও জয়পুরহাটের এমপি আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন ও শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক আবদুস সবুর, দফতর সম্পাদক বিপ্লব বড়–য়া, যুবলীগের চেয়ারম্যান ফজলে শামস পরশ, সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি নির্মল রঞ্জন গুহ, সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান বাবু, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান, ঢাকা দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির, যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ, সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি নির্মল রঞ্জন গুহ।
করোনা সংক্রমণ রোধে জোনভিত্তিক লকডাউন বাস্তবায়নে কাজ শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন। স্বাস্থ্য অধিদফতর ইতোমধ্যে রেড, ইয়েলো ও গ্রিন জোনে কীভাবে কাজ হবে সেজন্য একটি গাইডলাইন প্রণয়ন করেছে। রবিবার (১৪ জুন) এই গাইডলাইন প্রকাশ করে স্বাস্থ্য অধিদফতর।
রেড জোন- উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা
১। স্বাস্থ্যবিধি মেনে বর্ধিত শিফটে কৃষিকাজ করা যাবে
২। স্বাস্থ্যবিধি মেনে গ্রামাঞ্চলে কলকারখানা ও কৃষিপণ্য উৎপাদন কারখানায় কাজ করা যাবে, তবে শহরাঞ্চলে সব বন্ধ থাকবে।
৩। বাসা থেকেই অফিসের কাজ করবে।
৪। কোনও ধরনের জনসমাবেশ করা যাবে না। কেবল অসুস্থ ব্যক্তি হাসপাতালে যেতে পারবে।
৫। স্বাস্থ্যবিধি মেনে শুধু জরুরি প্রয়োজনে বাসা থেকে বের হতে পারবে, রিকশা, ভ্যান, সিএনজি, ট্যাক্সিতে বা নিজস্ব গাড়ি চলাচল করবে না।
৬। সড়ক পথ, নদী পথ ও রেল পথে জোনের ভেতরে কোনও যান চলাচল করবে না।
৭। জোনের ভেতর ও বাইরে মালবাহী জাহাজ কেবল রাতে চলাচল করতে পারবে।
৮। এই জোনের অন্তর্গত মুদি দোকান, ওষুধের দোকান খোলা থাকবে। রেস্টুরেন্ট ও খাবার দোকানে কেবল হোম ডেলিভারি সার্ভিস চালু থাকবে এবং বাজারে শুধু প্রয়োজনে যাওয়া যাবে। তবে শপিং মল সিনেমা হল, জিম/স্পোর্টস কমপ্লেক্স, বিনোদন কেন্দ্র বন্ধ থাকবে।
৯। আর্থিক লেনদেন বিষয়ক কার্যক্রম, যেমন- টাকা জমাদান, উত্তোলন স্বাস্থ্যবিধি মেনে কেবল এটিএম-এর মাধ্যমে করা যাবে।
১০। উক্ত এলাকার রোগীদের পর্যাপ্ত পরিমাণ নমুনা পরীক্ষার করতে হবে, শনাক্ত রোগীরা আইসোলেশনে (বাড়িতে আইসোলেশন সেন্টারে) থাকবে।
১১। মসজিদ উপাসনালয়ে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ইবাদত করা যাবে।
ইয়েলো জোন- মাঝারি ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা
১। স্বাস্থ্যবিধি মেনে কৃষিকাজ করা যাবে।
২। স্বাস্থ্যবিধি মেনে কলকারখানা ও কৃষিপণ্য উৎপাদন কারখানায় ৫০ শতাংশ কর্মী কাজ করবে এবং জনসংকীর্ণ কারখানায় ৩৩ শতাংশ কর্মী বর্ধিত শিফটে কাজ করতে পারবে।
৩। স্বাস্থ্যবিধি মেনে অফিসে ৫০ শতাংশ কর্মী কাজ করবে। বাকিরা বাসা থেকেই কাজ করবে।
৪। ৩০ জনের বেশি জনসমাবেশ করা যাবে না।
৫। স্বাস্থ্যবিধি মেনে শুধু প্রয়োজনে বাসা থেকে বের হতে পারবে, রিকশা, ভ্যান, সিএনজি বা ট্যাক্সিতে একজন করে চলাচল করবে, ট্যাক্সি বা নিজস্ব গাড়িতে চলাচল করা যাবে।
৬। সড়ক পথ, নদী পথ ও রেল পথে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাচল করা যাবে।
৭। জোনের ভিতরে ও বাইরে মালবাহী জাহাজ চলাচল করতে পারবে।
৮। এই জোনের অন্তর্গত মুদি দোকান, ওষুধের দোকান খোলা থাকবে, রেস্টুরেন্ট ও খাবার দোকানে কেবল হোম ডেলিভারি সার্ভিস চালু থাকবে এবং বাজারে শুধু নিত্যপ্রয়োজনে যাওয়া যাবে। তবে শপিং মল, সিনেমা হল, জিম, স্পোর্টস কমপ্লেক্স, বিনোদন কেন্দ্র বন্ধ থাকবে।
৯। আর্থিক লেনদেন বিষয়ক কার্যক্রম, যেমন- টাকা জমাদান-উত্তোলন স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত আকারে করা যাবে।
১০। উক্ত এলাকার রোগীদের পর্যাপ্ত পরিমাণ নমুনা পরীক্ষা করতে হবে, শনাক্ত রোগীরা আইসোলেশনে (বাড়িতে বা আইসোলেশন সেন্টারে) থাকবে। স্থানীয়ভাবে পর্যাপ্ত আইসোলেশনের ব্যবস্থা থাকবে।
১১। মসজিদ, উপাসনালয়ে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ইবাদত করা যাবে।
সবুজ জোন, নিম্ন ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা
১। স্বাস্থ্যবিধি মেনে কৃষিকাজ করা যাবে।
২। স্বাস্থ্যবিধি মেনে কলকারখানা ও কৃষি পণ্য উৎপাদন কাজ করা যাবে।
৩। স্বাস্থ্যবিধি মেনে অফিস খোলা থাকবে।
৪। ৩০ জনের বেশি জনসমাবেশ করা যাবে না।
৫। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাচল করা যাবে, তবে প্রয়োজন ছাড়া কিংবা আড্ডা দেওয়ার জন্য বের হওয়া যাবে না।
৬। সড়ক পথ, নদী পথ ও রেল পথে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাচল করা যাবে।
৭। জোনের ভেতরে ও বাইরে মালবাহী জাহাজ চলাচল করতে পারবে।
৮। এই জোনের অন্তর্গত মুদি দোকান, ওষুধের দোকান, রেস্টুরেন্ট, চায়ের দোকান, সেলুন, বাজার ইত্যাদি স্বাস্থ্যবিধি মেনে খোলা রাখা যাবে। তবে শপিং মল, সিনেমা হল, জিম, স্পোর্টস কমপ্লেক্স, বিনোদন কেন্দ্র বন্ধ থাকবে।
৯। আর্থিক লেনদেন বিষয়ক কার্যক্রম, যেমন টাকা জমাদান-উত্তোলন স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত আকারে করা যাবে।
১০। উক্ত এলাকার রোগীর নমুনা পরীক্ষার সহজগম্যতা থাকতে হবে, শনাক্ত রোগীরা আইসোলেশনে (বাড়িতে বা আইসোলেশন সেন্টারে) থাকবে।
১১। মসজিদ-উপাসনালয়ে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ইবাদত করা যাবে।
এছাড়া সব জোনের জন্য পালনীয় সাধারণ নিয়মাবলিতে বলা হয়েছে-
১। এলাকার সবাইকে বাধ্যতামূলক মাস্ক পরতে হবে, হাত ধোয়া, জীবাণুমুক্তকরণ ও পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।
২। করোনা রোগ/সংক্রমণ শনাক্তকরণ, তাদের আইসোলেশন ও চিকিৎসা প্রদানের ব্যবস্থা করতে হবে।
৩। কন্টাক্ট ট্রেসিং ও তাদের কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করতে হবে।
৪। স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র, হাসপাতাল, জরুরি সেবামূলক প্রতিষ্ঠান খোলা থাকবে, অসুস্থ ব্যক্তি পরিবহনকারী যান, ব্যক্তিগত গাড়ি ও অ্যাম্বুলেন্স কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে চলাচল করবে।
৫। সকল প্রকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান- স্কুল, কলেজ, কোচিং সেন্টার বন্ধ থাকবে।
৬। স্থানীয় প্রশাসনের অনুমতি ছাড়া জনগণ এক জোন থেকে অন্য জোনে যাতায়াত করতে পারবে না। প্রত্যেক এলাকায় সীমিত পরিমাণে প্রবেশ ও বহিরাগমন পয়েন্ট নির্ধারণ করে কঠোরভাবে জনগণের যাতায়াত নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
৭। এসব কার্যক্রম তদারকির জন্য কার্যকরী সামাজিক সম্পৃক্ততা এবং মাঠকর্মীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে।
কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিঃ
করোনার দুর্যোগে বাংলাদেশের মহামান্য রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত না হয় এবং তাদের দীর্ঘায়ু কামনা করে ১১টি খাঁসি জবাই দিয়ে বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন কুড়িগ্রামের প্রত্যন্ত এলাকার এক যুবক।
ব্যতিক্রমী ঘটনাটি ঘটেছে জেলা নাগেশ্বরী উপজেলার রায়গঞ্জ ইউনিয়নের সোনাইর খামার গ্রামে। এই গ্রামের বাসিন্দা ফজলুল হকের সন্তান খাইরুল ইসলাম(৪০)। নিজ অর্থায়নে এসব খাঁসি জবাই দিয়ে মাংস বিলিয়ে দেন দু:স্থ অসহায়দের মাঝে।
খাইরুল ইসলাম জানান, আমার বাবার কোন সম্পত্তি ছিল না। অন্যের দেয়া জমিতেই আমরা থাকতাম। অভাব অনটনের জন্য ২০০৬সালে এক প্রতিবেশীর সহযোগিতায় আমি ৮/৯বছর বয়সে আমি সেনাবাহিনীর ব্যক্তিগত গৃহপরিচারক হিসেবে কাজ শুরু করি। ঐ স্যারদের সাথে পোস্তগোলা ক্যান্টনমেন্টের ৫আরই ব্যাটালিয়নের ইঞ্জিনিয়ার কোরসহ যমুনা,কাপ্তাই এবং নাটোরের ব্যাটালিয়নে কাজ করেছি দীর্ঘদিন। সেনাবাহিনীর মানবিকতায় আজ আমার অভাব নেই । পরিবার পরিজন নিয়ে বেশ সুখেই আছি সকলের দোয়ায়। দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে গত সোমবার নিজ উদ্যোগে মাননীয় রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ,প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা,সড়ক ও পরিবহন মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ,সেনাবাহিনীর উচ্চপদস্থ কয়েকজন কর্মকর্তার নামে আল্লাহর দরবারে জানের বদলে জান কোরবানি দেই। যেন তারা দীর্ঘায়ু লাভ করেন এবং করোনাসহ যেন কোন মহামারীতে সহিসালামতে থাকেন।
এছাড়াও তিনি আরও বলেন, সেখানে কয়েকজন উচ্চ পদস্থ কয়েকজন সেনা কর্মকর্তার ভালবাসা এবং সাহচার্যে তার জীবনের অনেক পরিবর্তন এসেছে।
গ্রামের বাসিন্দা শাহীন কবির মন্ডল, শাহানুর রহমান, রেজাউল কবীরসহ বেশ কয়েকজন জানান,দেশের কর্ণধারদের দীর্ঘায়ু কামনা করে যে মানত করেছে সেটা নি:সন্দেহে ভালো উদ্যোগ। স্থানীয়দের সহযোগিতায় জনসমাগম রক্ষা করে এসব খাঁসির মাংস গুলো বিতরণ করেছেন। দেশবাসী ও বিশ্ব করোনা ভাইরাস মুক্তির জন্য মাংস বিলি করার আগে বিশেষ মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এই বিষয়ে নাগেশ্বরী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুর আহম্মেদ মাছুম বলেন,ঘটনাটি আমি শুনতে পেরেছি। খাঁসি জবাই দেবার বিষয়টি আমাকে অবগত করেনি। এমন ব্যতিক্রমী কর্মকাণ্ড সত্যি প্রশংসনীয়। তিনি বলেন,দেশের এই ক্রান্তিকালে সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসারও আহবান জানান।
করোনা মহামারিতে চাল কান্ডের শেষ যেন হচ্ছেই না দেশে। এই কার্ড গরীব ও দুস্থ মানুষের পাওয়ার কথা থাকলেও দিনাজপুর পৌরসভার ১০,১১,১২ নাম্বার ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর মাজতুরা বেগমের ছেলে মিরেজ হোসেনের নামেও এসেছে।
আর ছেলের কার্ড পাওয়ার বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকায় চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। অনেকে প্রকাশ্যে সমালোচনাও করে যাচ্ছেন।
জানা যায়, দিনাজপুর পৌরসভার সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর মারতুজা বেগম ও ১২ নং ওয়ার্ডের খাইরুল ইসলামের ছেলে মিরেজ হোসেনকে যে কার্ড দেয়া হয়েছে সেখানে তার পেশা দেখানো হয়েছে একজন কৃষক হিসাবে।
কিন্তু আসলে তিনি একজন ব্যবসায়ী। ৫৬১০ নাম্বার কার্ডধারী মিরেজের পেশা সম্পর্কে তার মা মারতুজার দাবি, তার ছেলে একজন ব্যাবসায়ী।
কাউন্সিলর মারতুজা বেগম জানান, আমার ছেলে বিয়ে করে আলাদা সংসার করছে। ব্যবসাকরে সংসার চালাতে ওর কষ্ট হয় বলে আমার কাছে একটা কার্ড চেয়েছিল।
তাই দিয়েছি। সবাইতো আর ধনী হয়না। তবে এত কথা যখন হচ্ছে তখন কার্ডটি বাদ দিয়ে দেন। এ বিষয়ে দিনাজপুরের জেলা প্রশাসক মো. মাহমুদুল আলম বলেন, ‘আমরা এরকম অভিযোগ আরও কিছু পেয়েছি।
যার প্রেক্ষিতে এখন দিনাজপুর পৌরসভার ১২টি ওয়ার্ডের ৬ হাজার বিশেষ ওএমএস-এর কার্ড জেলার ১২টি সরকারি অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দিয়ে পুনরায় যাচাইবাছাই করা শুরু করেছি।’
সুন্দরগঞ্জ উপজেলা প্রতিনিধি: জাতীয় পার্টির মাননীয় চেয়ারম্যান জি এম কাদের এমপি মহোদয়ের কৃষকের পাশে থাকার নির্দেশনার প্রেক্ষিতে জাতীয় পার্টির অতিরিক্ত মহাসচিব (রংপুর বিভাগ) ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী এমপির নির্দেশে গরীব কৃষকের পাশে দাঁড়িয়েছে সুন্দরগঞ্জ উপজেলা জাতীয় কৃষক পার্টি।
সুন্দরগঞ্জ উপজেলা জাতীয় কৃষক পার্টির সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক এর নেতৃত্বে ৭ নং রামজীবন ইউনিয়নের নিজপাড়া গ্রামের দরিদ্র কৃষক সাইদুল ইসলামের ২ বিঘা জমির ধান কেটে দিয়ে সহায়তা করলো সুন্দরগঞ্জ উপজেলা কৃষক পার্টি। আজ বুধবার সকাল ৯ টায় সুন্দরগঞ্জ উপজেলা কৃষক পার্টির সভাপতি গোলাম মোস্তফা,সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম,পৌর কৃষক পার্টির সভাপতি রিপন সরকার এই ধান কাটা কার্যক্রম শুভ উদ্বোধন করেন। ধান কাটা বিষয়ে কথা হলে সুন্দরগঞ্জ উপজেলা কৃষক পার্টির সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম জানান- সুন্দরগঞ্জের মাটি ও মানুষের নেতা ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী এম,পি’র নির্দেশে বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনা করে ধান কেটে দিচ্ছে কৃষক পার্টি।
তিনি আরও বলেন- সুন্দরগঞ্জ উপজেলার ১৫ টি ইউনিয়ন ও ১ টি পৌরসভায় ধান কাটার কার্যক্রম চলবে পর্যায়ক্রমে।তাদের কে এই ধান কাটার ব্যাপারে বিশেষ উৎসাহ প্রদান করেন স্থানীয় সাংসদ এবং জাতীয় পার্টির অতিরিক্ত মহাসচিব( রংপুর বিভাগ) ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী এম,পি। ধান কাটা কার্যক্রমে উপজেলা কৃষক পার্টির নেতৃবৃন্দ সহ বিভিন্ন ইউনিয়নের কৃষক পার্টির নেতাকর্মী অংশগ্রহণ করে।

নীলফামারী ডিমলায় করোনা ভাইরাস সংক্রমন প্রতিরোধে মধ্যরাতে বাড়ি বাড়ি গিয়ে খাদ্য সামগ্রী ও স্বাস্থ্য উপকরণ বিতরণ করেছেন নীলফামারী পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোখলেছুর রহমান(বিপিএম পিপিএম)।
বৃহস্পতিবার(২এপ্রিল)দিনগত মধ্যরাতে জেলা পুলিশের উদ্যোগে ডিমলা উপজেলার দুই শতাধিক অতি দরিদ্র,দিনমজুর,হরিজন সম্প্রদায়,প্রতিবন্ধী ও কর্মহীন হয়ে পড়া অসহায় স্বল্প আয়ের মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে এ সব খাদ্য সামগ্রী ও স্বাস্থ্য উপকরণের প্যাকেট বিতরণ করা হয়।
সরেজমিনে দেখা যায়,বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে বিতরণের সময় পুলিশ সুপার সরেজমিনে পায়ে হেটে উপজেলার বাবুর হাট সদরের সরকারি মহিলা কলেজ পাড়া,টিএন্ডটি মোড়,পোস্ট অফিস মোড় ও দাখিল মাদ্রাসা সংলগ্ন এলাকা ঘুরে ঘুরে নি¤œ আয়ের কর্মহীন হয়ে পড়া অতি দরিদ্র ওইসব স্বল্প আয়ের অর্ধশতাধিক বাড়িতে গিয়ে তাদের বিভিন্ন সমস্যার কথা শুনে তাদের হাতে খাদ্য সামগ্রী ও স্বাস্থ্য উপকরণ তুলে দেন এবং মাস্ক পড়িয়ে দিয়ে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে সকল নাগরিকদের দায়িত্বের বিষয়ে সচেতনতামূলক আলোচনা করেন।এ সময়ে উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল বাশার মোহাম্মদ আতিকুর রহমান,সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার(ডোমার-ডিমলা সার্কেল)জয়ব্রত পাল,ডিমলা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি)মফিজ উদ্দিন শেখ,ওসি(তদন্ত)সোহেল রানা জনি, থানায় কর্মরত বেশকিছু এসআই,এ এসআই, পুলিশ সদস্য,ডিমলা প্রেসক্লাবের সভাপতি মাজহারুল ইসলাম লিটন,সাংবাদিক মহিনুল ইসলাম সুজন, গোলাম রব্বানী প্রমুখ।পরে ডিমলা থানা পুলিশ ডিমলা সদরের এক শতাধিকের মধ্যে অবশিষ্ট অর্ধশতাধিক,উপজেলার বালাপাড়া ইউনিয়নে অর্ধশতাধিক ও খগাখড়িবাড়ী ইউনিয়নে অর্ধশতাধিক পরিবারকে পুলিশ সুপারের নির্দেশে বাড়ি বাড়ি গিয়ে খাদ্য সামগ্রী ও স্বাস্থ্য উপকরণের একই প্যাকেট পৌছে দেন।
খাদ্য সামগ্রী ও স্বাস্থ্য উপকরণ হিসেবে এতে ছিলো, ৫ কেজি চাল,২কেজি আলু,১কেজি মসুর ডাল,১লিটার ভোজ্য তৈল, পেঁয়াজ,মরিচ,লবন, ১টি কাপড় কাছা সাবান,১টি গোসল করা সাবান।

ডেস্ক: প্রথমবারের মতো দিনাজপুরের হাকিমপুর উপজেলার ইসবপুর গ্রামে উন্নত মানের লোহার আকরিকের (ম্যাগনেটাইট) খনি আবিষ্কার করা হয়েছে। খনিটির ব্যাপ্তি ছয় থেকে ১০ বর্গকিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত। এখানে সোনার অস্তিত্বের পাশাপাশি কপার, নিকেল ও ক্রোমিয়ামেরও উপস্থিতি রয়েছে। এক হাজার ১৫০ ফুট গভীরতায় চুনাপাথরের সন্ধানও মিলেছে।
বাংলাদেশ ভূ-তাত্ত্বিক জরিপ অধিদপ্তরের (জিএসবি) কর্মকর্তারা দুই মাস ধরে কূপ খনন করে অধিকতর পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে মঙ্গলবার এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
জিএসবির উপপরিচালক (ড্রিলিং ইঞ্জিনিয়ার) মো. মাসুদ রানা বলেন, ‘গত ১৯ এপ্রিল থেকে ইসবপুর গ্রামে কূপ খনন শুরু করা হয়। ৩০ সদস্যের বিশেষজ্ঞ একটি দল তিন ধাপে এই কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। অবশেষে আমরা কাঙ্ক্ষিত সেই সাফল্য পেয়েছি। এর ফলে এই অঞ্চলের প্রেক্ষাপট পাল্টে যাবে।’
খনন কাজে নিয়োজিত জিএসবির উপপরিচালক মোহাম্মদ মাসুম আজ সকালে সাংবাদিকদের জানান, এর আগে ২০১৩ সালে ভূ-তাত্ত্বিক জরিপ অধিদপ্তর এই গ্রামের তিন কিলোমিটার পূর্বে মুশিদপুর এলাকায় কূপ খনন করে খনিজ পদার্থের সন্ধান পেয়েছিল। সেই গবেষণার সূত্র ধরে দীর্ঘ ছয় বছর পর চলতি বছরের ১৯ এপ্রিল থেকে ইসবপুর গ্রামে কূপ খনন শুরু করা হয়।
এরপর এক হাজার ৩৮০ থেকে এক হাজার ৫০০ ফুট গভীরতা পর্যন্ত খননকালে সেখানে লোহা থাকার সম্ভাবনা দেখা যায়। এই খবর পেয়ে ২৬ মে জিএসবির মহাপরিচালক জিল্লুর রহমান চৌধুরীসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এখানে পরিদর্শনে আসেন। ওই সময় মহাপরিচালক সাংবাদিকদের সুখবর না দিলেও লোহার খনি আবিষ্কার হতে চলেছে এমন ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। অবশেষে দীর্ঘ চেষ্টার ফলে এক হাজার ৭৫০ ফুট গভীরতা খনন করে লোহার খনি আবিষ্কার করা হয়েছে। এখানে প্রায় ৪০০ ফুট পুরুত্বের লোহার আকরিকের মজুদের একটি স্তর পাওয়া গেছে। এই অঞ্চলে ৬০ কোটি বছর আগে সমুদ্র ছিল। সেই কারণে এখানে জমাট বাঁধা আদি শিলার ভেতরে লোহার আকরিকের এই সন্ধান পাওয়া গেছে।
মোহাম্মদ মাসুম জানান, বিশ্বের যে কয়েকটি দেশে লোহার খনি আবিষ্কার করা হয়েছে তার মধ্যে বাংলাদেশের আকরিকে লোহার শতাংশ ৬৫-এর ওপরে। কানাডা, চীন, ব্রাজিল, সুইডেন ও অস্ট্রেলিয়ার খনি থেকে উত্তোলিত লোহার মান ৫০ শতাংশের নিচে। জয়পুরহাটে বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদের (বিসিএসআইআর) পরীক্ষাগার থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে। ‘খনিটির ব্যাপ্তি ৬-১০ বর্গ কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত। এখানে স্বর্ণের অস্তিত্বের পাশাপাশি কপার, নিকেল ও ক্রোমিয়ামেরও উপস্থিতি রয়েছে।
রংপুর-৩ উপনির্বাচনে বিকেল ৫টায় ভোটগ্রহণ শেষে জাতীয় পার্টি ও মহাজোট প্রার্থী হিসেবে প্রয়াত সাবেক প্রেসিডেন্ট হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের ছেলে রাহগির আলমাহি সাদ এরশাদ (সাদ এরশাদ)-কে বেসরকারি ভাবে সংসদ সদস্য ঘোষণা করা হয়েছে। মোট ১৭৫টি কেন্দ্রের মধ্যে ১৫২টি কেন্দ্রে সাদ এরশাদ পেয়েছেন ৪৯০০৩ ভোট। তার নিকটতম প্রতিধন্ধি ধানের শীষ- ১৩৭১০ ও মটর গাড়ি- ১৩২৮৯ ভোট পেয়েছে।
এ আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী রিটা রহমান ধানের শীষ প্রতীক, স্বতন্ত্র প্রার্থী এরশাদের ভাতিজা হোসেন মকবুল শাহরিয়ার আসিফ মোটরগাড়ি, এনপিপির শফিউল আলম আম প্রতীক, গণফ্রন্টের কাজী শহীদুল্লাহ মাছ প্রতীক এবং খেলাফত মজলিসের তৌহিদুর রহমান মণ্ডল দেয়াল ঘড়ি প্রতীক নিয়ে লড়ছেন।
রংপুর কমিউনিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বোরকা পরা নিষিদ্ধের জেরে অবশেষে পদত্যাগ করেছেন ওই হাসপাতালেরই পরিচালক ডা. মো. রফিকুল ইসলাম। রোববার তিনি এ পদত্যাগপত্র দিয়েছেন।
জানা গেছে, পরিচালক ডা. রফিকুল ইসলামের অনিচ্ছা সত্ত্বেও তাকে দিয়ে বোরকা ও হিজাব নিষিদ্ধের আদেশ দেয়া হয়েছিল। এ নিয়ে তিনি মালিকপক্ষের সঙ্গে কথা বলতে গেলে মালিকপক্ষ হাসপাতালের তার সঙ্গে অসদাচরণ করে। কর্তৃপক্ষের অন্যায় আচরণে আহত হয়ে পরিচালক ডা. রফিকুল ইসলাম পদত্যাগ করেন।
জানা যায়, গত ২৩ সেপ্টেম্বর রংপুর কমিউনিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ‘ড্রেসকোড সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি’ নামে একটি নোটিশ জারি করে। এতে ছেলেদের ক্ষেত্রে হাফহাতা শার্ট, গেঞ্জি,পাঞ্জাবি,জিন্স প্যান্ট, সেন্ডেল ও ময়লাযুক্ত/তিলা পরা পোশাক এবং মেয়েদের ক্ষেত্রে বোরকা, হিজাব, শাড়ির ওড়না, প্লাজু, স্কাট পরিধান করা সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ করা হয়।
বিতর্কিত এ ড্রেসকোড সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়লে সমালোচনার ঝড় ওঠে। বিশেষত মেয়েদের বোরকা ও হিজাব নিষিদ্ধের ব্যাপারটি মেনে নিতে পারেননি খোদ হাসপাতালের পরিচালকই।
মুসলিম যুবক হিন্দু প্রেমিকাকেই ৪ বার বিয়ে করলেন
জানা গেছে, ভারতের আইআইএম ইন্দোরের ছাত্র ফইজ রহমান ও অঙ্কিতা আগারওয়াল প্রথম দেখাতেই একে অপরের প্রেমে পড়েন। এ সময় ধর্মকে পাত্তা দেননি এই যুগল। যে দেশে ধর্মকে ঘিরে বিদ্বেষ দিন দিন বেড়েই চলেছে, সে দেশেই ভালোবাসাকে পাথেয় করে এগিয়েছিলেন ফইজ ও অঙ্কিতা।
জানা যায়, ফইজ প্রগতিশীল মুসলিম পরিবারের ছেলে হলেও, অঙ্কিতা রক্ষণশীল হিন্দু পরিবারের মেয়ে। ফইজ ও অঙ্কিতার সম্পর্কের কথা শোনা মাত্রই অঙ্কিতার পরিবার জানিয়ে দিয়েছিল, তারা এই সম্পর্ক মেনে নেবে না।
পরিবারের কথা মানতে গিয়ে তখন দুজনেই ভেবেছিলেন সম্পর্কের ইতি টানবেন। কিন্তু সম্পর্কের ইতি টেনে দিলেও ৩-৪ দিন পরই তারা বুঝে গিয়েছিলেন যে, একে অপরকে ছেড়ে বেঁচে থাকা অসম্ভব। তাই বিয়ে করে ফেলেন তারা।
এদিকে, অঙ্কিতার পরিবার এই বিয়ে মানতে চাইছিল না; কারণ তাদের ধারণা ছিল বিয়ের পর নিজের ধর্ম-জাতি সংস্কৃতি-নাম সবই বদলে ফেলতে হবে অঙ্কিতাকে। সাধারণত এমনই হয়ে থাকে।
কিন্তু ফইজ এমন নন, এ কথা পরিবারকে জানিয়ে দেন অঙ্কিতা। ধর্মের রীতি অনুসারে ফইজ চারবার বিয়ে করতে পারেন। এতে তাদের মেয়ে কষ্ট পাবেন এটা ভেবেও বারবার এ সম্পর্ক থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয় অঙ্কিতার পরিবার।
হঠাৎই একদিন বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে অঙ্কিতার বাড়িতে হাজির হন ফইজ। তিনি অঙ্কিতার বাবাকে বুঝিয়ে বলেন যে, তাদের আদরের মেয়েকে ততটাই আদরে রাখবেন যতটা তারা রেখেছিলেন। কখনওই নিজের সংস্কৃতিকে ছাড়তে হবেনা। ধর্মও পরিবর্তন করতে হবে না এবং আমিষ খেতে হবে না।
ধর্মে যেহেতু চারবার বিয়ে করার অনুমতি দেওয়া হয় পুরুষদের তাই চার বারই অঙ্কিতাকেই বিয়ে করবেন তিনি। এমন আশ্বাসও সেদিন দিয়েছিলেন ফইজ। কিন্তু তাও মেনে নেয়নি অঙ্কিতার পরিবার।সম্প্রতি দু’বছর পূর্ণ হয়েছে ফইজ-অঙ্কিতার বিয়ের বয়স। কিন্তু দুজনের কাউকেই নিজের ধর্ম ও সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসতে হয়নি। এর মধ্যে অঙ্কিতার পরিবারও ফইজকে আপন করে নিয়েছে। তাই এখন একই বাড়িতে ঈদ আর দিপাবলী একসঙ্গে পালিত হয়।
এরপর একটি রাম মন্দিরে গিয়ে বিয়ে করেন ফইজ ও অঙ্কিতা। আইনি মতেও দুজন বিয়ে করেন। তারপর নিকাহ। বন্ধুদের সঙ্গে এই আনন্দ ভাগ করে নেবেন বলে দু’জন গোয়ার সমুদ্র সৈকতে বন্ধুদের নিয়ে যান। আর ফইজ তার কথা রেখে অঙ্কিতাকেই চার বার বিয়ে করেন।