চট্টগ্রাম থেকে সেন্টমার্টিন সরাসরি প্রমোদতরী ‘বে ওয়ান’
বিশ্বের সোয়া তিনশ’ ক্রুজ শিপের একটি ‘বে ওয়ান’। ২ হাজার অতিথি ধারণক্ষমতার অত্যাধুনিক প্রমোদতরীটি ১০৫ কোটি টাকা খরচে বাংলাদেশে এনেছে কর্ণফুলী শিপইয়ার্ড।
বৃহস্পতিবার (১৪ জানুয়ারি) থেকে চট্টগ্রাম-সেন্টমার্টিন রুটে চলাচল করবে এটি। জনপ্রতি সর্বনিম্ন ভাড়া ৩ হাজার টাকা, সর্বোচ্চ ৫০ হাজার।
প্রাথমিকভাবে রাত ১১টায় চট্টগ্রাম থেকে প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনের উদ্দেশে ছেড়ে যাবে। পৌনে তিনশ’ কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে পরদিন সকাল ৭টায় সেন্টমার্টিন পৌঁছাবে।
সপ্তাহে তিন দিন এ রুটে চলবে জাহাজটি।
সরেজমিন দেখা গেছে, শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাছে কর্ণফুলী নদীর ওয়াটার বাস টার্মিনালে নোঙর করেছে ‘বে ওয়ান’।
৪৫০ ফুট লম্বা, ৫৫ ফুট প্রস্থের বিলাসবহুল জাহাজটিতে ১৭ জন ক্রু এবং যাত্রীসেবার জন্য দেড়শ’ স্টাফ আছেন। এখানে আছে তারকা হোটেলের মতো প্রেসিডেন্ট স্যুট, রয়েল স্যুট, বাংকার বেড কেবিন, টু ইন বেড কেবিন, অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য আরামদায়ক চেয়ারসহ আধুনিক ব্যবস্থা। জাপানের কোবে শহরের মিতসুবিশি হেডি ইন্ডাস্ট্রিজে নির্মিত জাহাজটির ইন্টেরিয়র ও আসবাবে নতুনত্ব এনেছে কর্তৃপক্ষ। বাইরে মেঝেতে বসানো হয়েছে কৃত্রিম ঘাসের গালিচা। দেশি-বিদেশি খাবার নিয়ে উন্নতমানের রেস্তোরাঁ, স্বয়ংক্রিয় ভেন্ডিং মেশিন, কয়েন পরিচালিত ঝর্না। করোনা সচেতনতায় মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজারও রয়েছে প্রতিটি ফ্লোরে।
কর্ণফুলী শিপ বিল্ডার্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমএ রশিদ গণমাধ্যমে বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে দেশের পর্যটন শিল্পের উন্নয়নে ‘বে ওয়ান’ জাহাজটি আনা হয়েছে। এটি পর্যটন শিল্পে নতুন মাত্রা যোগ করবে। দেশি-বিদেশি পর্যটকদের নজর কাড়তে সক্ষম হবে।
১৯৯৪ সালে আমাদের শিপ বিল্ডার্স যাত্রা শুরু করে। প্রথমে বন্দরের জন্য ৫টি টাগবোট তৈরি করেছি। ‘বাংলার সৌরভ’ জাহাজ মেরামত আমাদের বড় অর্জন। পৃথিবীর কেউ চিন্তাও করেনি জাহাজটি চলবে। পৌনে ২৯ কোটি টাকা জরিমানার ঝুঁকি নিয়ে জাহাজটির ১৫০ ফুট ফেলে দিয়ে নতুন ভাবে তৈরি করতে পেরেছি। ১৬ হাজার টনের জাহাজটি এখনো সচল রয়েছে।
এ পর্যন্ত ৪ হাজার কোটি টাকার ড্রেজার নির্মাণ করে সরকারকে দিয়েছি। এখনো ড্রেজার নির্মাণ করছি। আপনারা শুনে খুশি হবেন ‘কাটার সাকশন’ নির্মাণে বিশ্বে দ্বিতীয় অবস্থানে আছি আমরা। এটি আমাদের দেশের জন্য ভাগ্যের ব্যবহার। কাটার সাকশন বিদেশে রফতানির সক্ষমতা অর্জন করেছি ইনশাআল্লাহ। এ পর্যন্ত ১২শ’ জাহাজ তৈরি করেছি, ৭-৮শ’ জাহাজ রিপেয়ার করেছি গত ২৫-২৬ বছরে। জাহাজ চালানোর ব্যবসা আমাদের ছিল না। আমাদের তৈরি ‘কর্ণফুলী এক্সপ্রেস’ জাহাজ গত বছর জানুয়ারিতে কক্সবাজার-টেকনাফ রুটে চালু করেছি। এ রুটে জাহাজ জীবনেও চলাচল করেনি। মানুষ এত ভালোভাবে এটি নিয়েছে। এটি আমাকে দেশের জন্য ক্রুজ শিপ আনার প্রেরণা দিয়েছে। জাপান থেকে এ জাহাজটি নিয়ে এসেছি।
এক স্টার্টে জাহাজটি ৯ দিনে বাংলাদেশে চলে এসেছে। পৃথিবীর সব দেশে এ জাহাজটি চলাচল করতে পারবে। এটি অত্যাধুনিক প্রযুক্তির এ জাহাজ ঝড় তুফান কাত করতে পারে না। ২ হাজার যাত্রী নিয়ে এটি সৌদি আরব যেতে পারবে। গতিবেগ ঘণ্টায় ২৪ নটিক্যাল মাইল, প্রায় ৪৮ কিলোমিটার। সাড়ে ১১ হাজার হর্সপাওয়ারের ২টি ইঞ্জিন আছে। ৩ মেগাওয়াটের ৩টি জেনারেটর আছে। জাহাজটিতে ওয়েস্ট ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট আছে, জাহাজের কোনো পানি বা বর্জ্য সরাসরি সাগরে পড়বে না। নিরাপদে স্বাচ্ছন্দ্যে যাত্রীরা ভ্রমণ করতে পারবেন। এটি দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করবে।
তিনি জানান, জাহাজটিতে প্রতিদিন খরচ হচ্ছে ১৮-২০ লাখ টাকা। এ ধরনের জাহাজ দেশে আরও চললে পর্যটকদের কাছে ভাবমূর্তি বাড়বে। দেশের টাকা খরচ করে বিদেশে ক্রুজ শিপে চড়তে যেতে হবে না।
এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আবহাওয়া অধিদফতরের ১-৪ নম্বর সংকেত দেখালেও জাহাজটি নিরাপদে চলাচল করতে পারবে। তবে মহাবিপদ সংকেত দিলে অন্যান্য বড় জাহাজের মতো এটিও নিরাপত্তার জন্য বহির্নোঙরে বা গভীর সাগরে অবস্থান নেবে।
বাংলাদেশ সরকার আন্তর্জাতিক আদালতের মাধ্যমে সমুদ্রসীমা অর্জন করেছি। সমুদ্রভ্রমণের জন্য ‘কর্ণফুলী এক্সপ্রেস’ ছাড়া বড় প্যাসেঞ্জার জাহাজ দেশে নেই। ব্লু ইকোনমি, মেরিটাইম ট্যুরিজমকে এগিয়ে নিতে চাই আমরা। সরকার নিরলস কাজ করছে। কিন্তু সরকার একার পক্ষে সব করা সম্ভব নয়। বেসরকারি উদ্যোক্তাদের এগিয়ে আসতে হবে। আমরা দেশের মানুষের রিক্রিয়েশনের জন্য, দেশের উন্নয়নের স্বার্থে ‘বে ওয়ান’ ক্রুজ শিপটি এনেছি। সরকার টু সরকার চুক্তি থাকায় কলকাতা-আন্দামানসহ ভারতের বিভিন্ন জায়গায় আমরা যাত্রী নিয়ে যেতে পারবো। অনুমোদন পেলে ব্যাংকক, ফুকেট, ইন্দোনেশিয়া, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন দেশে সার্ভিস দেওয়ার চেষ্টা করবো আমরা।
যদি সরকার অনুমোদন দেয় প্রতিবছর ২০-৫০ হাজার হাজি জাহাজে নিতে মাত্র ৭ দিন লাগবে। দরকার হলে আরও ৪-৫টি প্যাসেঞ্জার জাহাজ চার্টার করে নিয়ে আসব।
গত ৯ সেপ্টেম্বর পূর্ব চীন সাগর পেরিয়ে ১৫ সেপ্টেম্বর সিঙ্গাপুর ছাড়ে ‘বে ওয়ান’। আন্দামান সাগরও বঙ্গোপসাগর পাড়ি দিয়ে ১৯ সেপ্টেম্বর জাহাজটি চট্টগ্রামে পৌঁছে।
ভালুকা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ব্লাড ট্রান্সফিউশন কার্যক্রম শুরুভালুকা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এ থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত রোগীদের জন্য ব্লাড ট্রান্সফিউশন শুরু করেছে ভালুকা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে।
জানা যায়, সোমবার (১৭ আগষ্ট) সকালে ভালুকা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এ থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত রোগীদের জন্য ব্লাড ট্রান্সফিউশন শুরু করেছে। এই কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন ভালুকা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার সোহেলী শারমিন মিতা। এ সময় ব্লাড ডোনেট করেছেন ব্লাড ডোনার্স সোসাইটি ভালুকা’র ( সহ সভাপতি) ছারোয়ার আহম্মেদ (অপু)। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেল ব্লাড ডোনার্স সোসাইটি ভালুকা এর (সভাপতি) এস এম ফিরোজ আহম্মেদ, সাধারণ সম্পাদক তোফায়েল আহম্মেদ ( টুটুল), সহ-সভাপতি শ্রী মন্ডল বিপুল, সহ নারী ও শিশু বিষয়ক সম্পাদিকা নওরিন ইসলাম, হৃদয় হাসান মন্ডল প্রমূখ।
ব্লাড ডোনার্স সোসাইটি ভালুকা এর (সভাপতি) এস এম ফিরোজ আহম্মেদ জানান, কিছুদিন আগে থেকে ব্লাড ডোনার্স সোসাইটি ভালুুকা পরিবারের পক্ষ থেকে একটি ফেসবুকে একেটি স্টেটাস দেয়া হয় যা ছিল-
সময়ের দাবি মানতে হবে মেনে নাও……..
ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অনতিবিলম্বে ব্লাড ট্রান্সফিউশন এর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক !ভালুকাতে প্রচুর থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত রোগী আছে! এরা প্রাইভেট ক্লিনিকে ১৫০০ শত বা দুই হাজার টাকা দিয়ে মাসে দুই থেকে তিনবার ব্লাড ট্রান্সফিউশন করেন !থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত পরিবারের পক্ষে এইভাবে আর বেসরকারি ক্লিনিকে ব্লাড ট্রান্সফিউশন করা সম্ভব না! কষ্টকর হয়ে যাচ্ছে দিন দিন ব্লাড ট্রান্সফিউশন করা কর্তৃপক্ষকে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করছি।
এই দাবির প্রেক্ষিতে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা বিভাগ আজ এই দাবি বাস্তবায়ন করেছে দেখে খুবই ভালো লাগছে।
ভালুকা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার সোহেলী শারমিন মিতা জানান, আজ থেকে ভালুকার থ্যালাসেমিয়া রোগীরা অতি অল্প খরচে ব্লাড ট্রান্সসফিউশন করতে পারবে ভালুকা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ। সামনে এই কার্যক্রমকে আরোও উন্নত করা হবে।
অনলাইন ডেস্ক :
রাশিয়ার তৈরি বিশ্বের প্রথম করোনাভাইরাস ভ্যাকসিন ‘স্পুটনিক-৫’ এর ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল ও উৎপাদনের একটি চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে ব্রাজিলের পারানা রাজ্য। সেখানকার কর্মকর্তারা বলছেন, প্রথমে ভ্যাকসিনটির কার্যকারিতা ও নিরাপত্তা পরীক্ষা করা হবে। পরে কার্যকারিতা প্রমাণিত হলে উৎপাদন করা হবে।
দক্ষিণাঞ্চলীয় পারানা রাজ্যের কর্মকর্তারা বলেছেন, ব্রাজিলে ভ্যাকসিনটি তৈরি শুরু হওয়ার আগে এটিকে সেখানকার নিয়ন্ত্রকদের অনুমোদন পেতে হবে এবং তৃতীয় ধাপের পরীক্ষা সম্পন্ন কিংবা ব্যাপক মানুষের ওপর পরীক্ষা করাতে হবে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে ২০২১ সালের দ্বিতীয়ার্ধ থেকে ব্রাজিলে এটির উৎপাদন শুরু হবে।
করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন উদ্ভাবনে বিশ্বজুড়ে তীব্র প্রতিযোগিতার মধ্যে গত ১১ আগস্ট বিশ্বের প্রথম ভ্যাকসিন হিসেবে ‘স্পুটনিক-৫’ অনুমোদনের ঘোষণা দেয় রাশিয়া। রাশিয়ার ঘোষণার পরই ভ্যাকসিনটির নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করতে শুরু করে বিভিন্ন দেশ। তবে ব্রাজিলের রাজ্য সরকার পরিচালিত পারানা টেকনোলোজি ইনস্টিটিউট ভ্যাকসিনটি তৈরি করতে রাশিয়ান ডাইরেক্ট ইনভেসমেন্ট ফান্ডের (আরডিআইএফ) সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করেছে।
পারানা টেকনোলোজি ইনস্টিটিউট এর প্রধান জর্জ কালাডো বুধবার এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘প্রাযুক্তিক বিনিময়ের ক্ষেত্রে এটি খুবই উদ্দেশ্যমূলক একটি সমঝোতা স্বারক। এতে কোনো বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়নি, খুব সাধারণভাবে আমাদের যৌথভাবে কাজের সুযোগ করে দিয়েছে।’
করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা ও নিরাপত্তা পরীক্ষার জনপ্রিয় ক্ষেত্র হয়ে উঠেছে ব্রাজিল। বর্তমানে করোনাভাইরাসের দুটি সম্ভাব্য ভ্যাকসিনের তৃতীয় ধাপের পরীক্ষা ব্রাজিলে চালানো হচ্ছে। এর মধ্যে একটি উদ্ভাবন করেছে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় এবং অপরটি চীনের সিনোভ্যাক বায়োটেক গবেষণাগার। এবার সেই তালিকায় যুক্ত হতে যাচ্ছে রাশিয়ার গামালিয়া রিসার্চ ইনস্টিটিউটের তৈরি বিশ্বের প্রথম অনুমোদিত করোনা ভ্যাকসিন ‘স্পুটনিক-৫’।
উল্লেখ্য, ব্রাজিলে করোনাভাইরাসের বিস্তার এখনো অব্যাহত রয়েছে। করোনা মহামারিতে বিশ্বে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আক্রান্ত ও মৃতের দেশ ব্রাজিল। দেশটিতে ৩১ লাখ ৭০ হাজারের বেশি আক্রান্ত ও এক লাখ চার হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
সূত্র : মস্কো টাইমস।
দেশীয় জনপ্রিয় অনলাইন কেনাকাটার প্ল্যাটফর্ম ও ই-কমার্স সাইট ‘ইভ্যালি’-তে কেনাকাটা বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে সতর্ক করেছেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ও জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব মাহবুব কবির মিলন। আজ মঙ্গলবার (২১ জুলাই) মাহবুব কবির মিলন তার নিজের ফেসবুক একাউন্টে ইভ্যালি বিষয়ে কিছু অভিযোগ তুলে ধরেন। অনলাইন কেনাকাটায় কোনো নীতিমালা না থাকায় গ্রাহক হয়রানির সুযোগ থাকছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
বর্ণমেলা নিউজ ২৪ ডটকম পাঠকদের জন্য তার স্ট্যাটাসটি হুবহু তুলে ধরা হল:
‘Evaly.com.bd নিয়ে ব্যাক্তিগত ইন্টারেস্ট নেই আমার। ১০০% বা ১৫০% ক্যাশ ব্যাক অফার কতটা নৈতিক বা অনৈতিক, সে প্রশ্নেও যাব না। মুফতে বা অতি সহজে পাওয়ার আগ্রহ আমাদের কতটা তা আমরা সবাই জানি। ক্যাশ ব্যাক অফার আর ডিসকাউন্ট এর পার্থক্য এখনো আমরা বুঝে উঠতে পারিনি। ব্যবসা করার অধিকার সবার আছে। তেমনি আছে ইভ্যালির।
ইভ্যালি বা এরকম ব্যবসার ধরণ কতটা যুক্তিযুক্ত বা নীতি বিরোধি তা দেখবে সরকার। ক্রেতার ভোগান্তি বা অধিকার লঙ্ঘন হলে তাঁরা অনায়াসেই অভিযোগ দায়ের করতে পারে। কাজেই ইভ্যালি প্রসঙ্গে আমি ব্যাক্তিগতভাবে পর্যবেক্ষকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছি। যদিও সমানে আমাকে ট্যাগ বা ইনবক্স করা হচ্ছে অসংখ্য অভিযোগের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য।
মজার বিষয় হচ্ছে কোন অভিযোগকারী নিয়মতান্ত্রিকভাবে অভিযোগ দায়ের করছেন না। শুধু কমেন্টে গালাগালি, বিরক্তি বা কটু কথা বলেই খালাস। কারণ, সবাই আশায় থাকেন, যদি এরকম ক্যাশ ব্যাকে পণ্য পেয়ে যাই শেষ পর্যন্ত। বড়ই তাজ্জব বিষয়!!
ইভ্যালির স্পেশাল অফারের ৫ নং শর্তে স্পষ্ট বলা আছে পণ্য সরবরাহ করা হবে ৭-৪৫ দিনের মধ্যে। কাজেই ৪৬ দিন হয়ে গেলেই অধিকার লঙ্ঘন হয়ে যায়।
৬ নং শর্তে বলা হয়েছে, পণ্যের স্টক থাকা পর্যন্ত অফার চলবে। এখানেই সবাই ধরা খেয়ে যাচ্ছেন। কেউ জানেন না পণ্যের সংখ্যা আসলে কয়টি। সাইক্লোন অফারে সবাই ছুটছেন সাইক্লোনের মত।
মনে করে নেই, পণ্য আছে মাত্র ৫টি। যেহেতু আমরা জানি না পাঁচটি, কাজেই টাকা জমা দিল হয়ত ১০০ জন। তাহলে দেখা যাচ্ছে পণ্য পাবেন মাত্র পাঁচজন। বাকি ৯৫ জনের টাকা ঝুলে থাকবে দিনের পর দিন।
সো, সবাই জেনেই যাচ্ছেন সেখানে। আপাতত আমাদের করার কিছুই নেই। যেহেতু অনলাইন ব্যবসা বা অনলাইনে এরকম ক্রয়-বিক্রয়ের কোন নীতিমালা বা নিয়ন্ত্রণ নেই সরকারের, তাই যা করবেন, বুঝে শুনেই করবেন।
আর ভোক্তা অধিকার লঙ্ঘন হলে আছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।
তবে ইভ্যালির পেজে কমেন্ট পড়ে বেশ মজা পাই। মাঝে মাঝে উত্তর দেয়ার চেষ্টা করে থাকি। যদিও গতকালের করা একটি কমেন্ট ডিলিট করে দিয়েছে ইভ্যালি।
আমার কমেন্টের ধাক্কা সামলাতে না পারলে অন্য ধাক্কা সামলানো যে কঠিন।
শুভকামনা ইভ্যালি এবং তার ক্রেতাদের।
*** এটা সবার বুঝা উচিৎ যে, বিক্রেতা বা কোম্পানি আপনাকে পণ্যের সাথে ১০০% বা ১৫০% টাকা ফেরত দিচ্ছে, নিশ্চয়ই তিনি পৈত্রিক সম্পত্তি বিক্রি করে বা পকেট থেকে নয়। নিশ্চয়ই অন্যকে ক্ষতিগ্রস্থ করে বা অন্য কোন অনৈতিক উপায়ে
মেহজাবীন চৌধুরী বাংলাদেশের একজন জনপ্রিয় মডেল ও অভিনেত্রী। তিনি ২০০৯ সালে লাক্স চ্যানেল আই সুপারস্টার থেকে বিজয়ী হয়ে মিডিয়া জগতে আসেন। বর্তমানে তিনি বিভিন্ন টিভি বিজ্ঞাপন ও নাটকে নিয়মিত অভিনয় করছেন।
১৯৯১ সালের ১৯ এপ্রিল জন্মগ্রহন করেছিলেন অসংখ্য পুরুষের হৃদয় কাঁপানো এই তারকা। মেহজাবিনের পৈতৃক নিবাস চট্টগ্রামে। জন্মের পরপর কথা শেখার আগে ৮/৯ মাস বয়সে বাবা মহিউদ্দিন চৌধুরীর চাকরির সুবাদে তার কোলে বসে পাড়ি দেয় মরুর দেশে ছোট্ট মেহজাবিন। সংযুক্ত আরব আমিরাতে। সেখানেই তার বড় হওয়া, কেটে গেছে শৈশব-কৈশোর। চাল-চলন কথা বলা সবই শিখেছেন মরুর দেশ, ওমানে। পরিবারের কেউই সংস্কৃতি জগতের সঙ্গে জড়িত ছিল না। তবে সবাই সংস্কৃতিমনা। চৌধুরী পরিবারের বড় মেয়েটির ঠিকানা হলো শোবিজ। টাইমস অব ওমান-এ নিয়মিত মডেল হয়েছেন। লেখাপড়ার পাশাপাশি মডেলিং। সঙ্গে ব্যালে নৃত্য। চলছিল জীবন। কেটে গেল ১৬টি বছর। তারপর ২০০৭ সালে পাড়ি দেন দেশে।
ছোট বেলায় বেশ ভোরে ঘুম থেকে ওঠার অভ্যাস ছিলো মেহজাবিনের। যত রাত করেই ঘুমানো হোক না কেন সুর্য ওঠার পর পরই ঘুম ভেঙ্গে যেতো মেহজাবিনের।মেহজাবিনের প্রথম স্কুল ছিলো ওমানে। ‘সোহার‘ নামের এই স্কুলের ছিলো বিশাল মাঠ। আর তাই পড়াশোনার চাইতে খেলাধুলাতেই বেশি আগ্রহ ছিলো তার। বিশেষ করে টিফিনের সময় খাওয়ার বদলে খেলাধুলা নিয়েই ব্যস্ত থাকতেন তিনি। খেলাধুলার পাশাপাশি তিনি পড়াশুনাতেও ভালো ছিলেন। তার ক্লাসের রোল নম্বর সবসময়েই ১ থেকে ১০ এর মধ্যেই থাকতো।
মেহজাবিনের রয়েছে আরও দুই ভাই ও দুই বোন। ভাইদের নাম রাজ ও আলিসান। মুকাদ্দেস ও কায়নাত হলো দুই বোন। তবে এই পাঁচজনের মধ্যে সবার বড় মেহজাবিন। জনপ্রিয় এই মডেল সান্তা মারিয়াম বিশ্ববিদ্যালয়ে ফ্যাশন ডিজাইনিং এ পড়াশোনা করেছেন। ২০০৯ সালে প্রায় ১০ হাজার প্রতিযোগীকে পেছনে ফেলে সেরা সুন্দরী নির্বাচিত হন মেহজাবীন চৌধুরী। এর পরের গল্পটা প্রায়ই সবারই জানা। একের পর এক নাটক, বিজ্ঞাপনে কাজ করে দর্শকদের প্রিয় মুখ হন তিনি। লাক্স চ্যানেল আই সুপারস্টার প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর মেহজাবীন অভিনীত প্রথম নাটক ছিল ইফতেখার আহমেদ ফাহমি পরিচালিত ‘তুমি থাকো সিন্ধুপারে’। এ নাটকে তার বিপরীতে অভিনয় করেছেন মাহফুজ আহমেদ। এরপর তিনি একে একে কাজ করেন মাঝে মাঝে তব দেখা পাই, কল সেন্টার, মেয়ে শুধু তোমার জন্য, আজও ভালোবাসি মনে মনে, হাসো আন লিমিটেডসহ, অধরা, অবশেষে অণ্যকিছু, মনের মত মন, তবুও অপেক্ষায়, একটি অনাকাঙ্ক্ষিত প্রেমের গল্প, একটি অসমাপ্ত ভালবাসা, রিটার্ন, প্রেম, ব্লাইন্ড ডেট সহ বেশকিছু নাটকে। ২০১৩ তে শিখর শাহনিয়াত পরিচালিত নাটক ‘অপেক্ষার ফটোগ্রাফি‘ ছিল মেহজাবীন এর জন্য বড় একটি টার্নিং পয়েন্ট। তার অভিনীত ধারাবাহিক নাটক গুলো হলো ‘ধান্দা‘, ‘ইউনিভার্সিটি’, ‘অ্যাবনরমাল‘।
সম্প্রতি ঈদুল আযহা ২০১৭ -এ মিজানুর রহমান আরিয়ানের পরিচালনায় বড় ছেলে’তে অভিনয় করে আবারও শীর্ষে চলে আসেন এই অভিনেত্রী। দেশ-বিদেশে ব্যাপক প্রশংসিত হয় মেহজাবীন ও জিয়াউল ফারুক অপূর্ব অভিনীত বড় ছেলে। এই নাটকে মেজবাজীনের চমৎকার অভিনয় দেখে অনেক দর্শক হুহু করে কেদেছেন। নাটকটি এতটাই জনপ্রিয় হয়েছিল যা ইউটিউবে এক সপ্তাহে ৪৫ লাখের ও বেশি বার দেখা হয়েছে।
২০১৫ সালে তিনি বড় পর্দায় পা রাখেন, স্বপন আহমেদের পরিচালনায় কল্প-কাহিনী নির্ভর চলচ্চিত্র ‘পরবাসিনী ছবিতে অভিনয়ের মাধ্যমে । এছাড়াও “ডুবোশহর“, “মায়াপুরের মায়া” চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। একে একে বিভিন্ন নাটকে অভিনয় করে জনপ্রিয়তা অর্জন করেন সমান তালে । এখন পর্যন্ত প্রায় ১৩০ টিরও বেশি নাটকে অভিনয় করেছেন তিনি এবং একাধারে টেলিফিল্ম, শর্টফ্লিম, মিউজিক ভিডিও এবং অনেকগুলো টিভিসিতে অভিনয় করেছেন। এখানে তার বিপরীতে অভিনয় করছেন নিরব। বাংলালিংক, লাক্স, এলিট গোল্ড মেহেদী, রানী গুড়া মসলা, ওমেরা এলপিজি ইত্যাদি ব্র্যান্ডের বিজ্ঞাপন করেছেন।
গ্ল্যামারকন্যা মেহজাবিন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও বেশ আলোচিত। তার ভক্ত ও ফলোয়ারও অনেক বেশি। এখন পর্যন্ত ফেইসবুকে তার অরিজিনাল পেজে প্রায় ১লক্ষ ৩৬ হাজার ফলোয়ার। ইস্টাগ্রামে ৫ লক্ষ ২৯ হাজার ফলোয়ার এবং টুইটারে ১৮ হাজরের অধিক লোক তাকে ফলো করেন। মোহজাবীনের পারিশ্রমিক নাটক প্রতি ৪০ হাজার থেকে ১ লক্ষ টাকা।
তিনি অবসরে গানশুনতে এবং বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে ভালোবাসেন। মেহজাবীনের প্রিয় অভিনেত্রী র্সূবনা মোস্তফা, মিমি। প্রিয় অভিনেতা টমক্রুজ, ফেরদৌস। প্রিয় মুভির তালিকায় রয়েছে টাইটানিক আর প্রিয় খেলোয়াড় মাশরাফি।
Information: www.tarokaloy.com/
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ বিশ্ব ব্যাপি ছড়িয়ে পরা করোনা ভাইরাস বাংলাদেশও আঘাত হানে। শেখ ঈশান চিন্তা করেন কিভাবে এই ভাইরাসের হাত থেকে মানুষকে মুক্ত রাখা যায়। কিভাবে সেবার হাত বারিয়ে দেওয়া যায়।তখন তিনি যোগাযোগ করেন শিশু প্রতিভা বিকাশ কেন্দ্রের চেয়ারম্যান সৈয়দ মিজানুর রহমানের সাথে। সাহায্যের হাত বড়িয়ে দেন সৈয়দ মিজানুর রহমান।
শিশু প্রতিভা বিকাশ কেন্দ্রে(SPBK) এর পক্ষ থেকে জিবানুনাশক স্প্রে করার মেশিন, পিপিই ড্রেস, হ্যান্ডগ্লাফস, মাস্ক ইত্যাদি প্রদান করেন। তখন থেকে শুরু। শেখ ঈশান গঠন করেন SPBK তারুণ্যের দল। এই দল নিয়ে নেমে পরেন কাজে। ইতি মধ্যে তিনি ময়মনসিংহের প্রতিটি পয়েন্ট SPBK তারুণ্যের দল নিয়ে জিবানুনাশক স্প্রে করছেন।
রাস্তা,বাসাবাড়ি, অফিস, মসজিদ,মন্দির,রাস্তায় চলমান প্রশাসনের গাড়ি,এম্বুলেন্স, অতি প্রয়োজনে বের হওয়া বিভিন্ন যানবাহন জিবানু মুক্ত করছেন “SPBK তারুণ্যের দল”
শিশু প্রতিভা বিকাশ কেন্দ্রের সহায়তায় শেখ খাইরুল ইসলাম ঈশান (শেখ ঈশান) ময়মনসিংহ শহরের বিভিন্ন জায়গা তথা প্রতিটি ওয়ার্ডকে জিবানু মুক্ত করে যাচ্ছেন এবং সুবিধা বঞ্চিত মানুষের মাঝে মাস্ক বিতরন করছেন।
তার টিমে কাজ করছে ১০/১২ জন তরুন, শেখ ঈশান বলেন আমরা ২০ লিটার পানির স্প্রের মেশিন কাঁধে করে, রোদে পুরে বিনা পারিশ্রমিকে শুধু মাত্র দেশের টানে মানুষের কল্যাণে এই জিবানু মুক্ত করন কার্যক্রম চালাচ্ছি। SPBK সর্বদা মানুষের কল্যাণে কাজ করে থাকেন এবারও করোনা দূর্যোগে মানুষের পাশে দাড়িয়েছেন। আর এজন্য SPBK ও সৈয়দ মিজানুর রহমান কে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান মানুষের সেবায় এগিয়ে আসার জন্য।
তাদের এ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে করোনা ভাইরাস মোকাবেলা না হওয়া পর্যন্ত এ আশা ব্যক্ত করেন। তাদের এ কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে ও লোকবল ও যন্ত্রপাতি বাড়াতে বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের অন্তরিক ভালোবাসা ও সহযোগিতা কামনা করেছেন।
করোনা ভাইরাস, যার পোশাকি নাম কোভিড-১৯, সেই রোগটিকে এখন বিশ্ব মহামারি ঘোষণা করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। এই ভাইরাস- যা পূর্বে বিজ্ঞানীদের অজানা ছিল- এর মধ্যেই চীনে অনেক মানুষের ফুসফুসের মারাত্মক রোগ সৃষ্টি করেছে এবং বিশ্বের শতাধিক দেশে এরই মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে।
ভাইরাসটা কী?
করোনা ভাইরাস এমন একটি সংক্রামক ভাইরাস – যা এর আগে কখনো মানুষের মধ্যে ছড়ায়নি। ভাইরাসটির আরেক নাম ২০১৯ – এনসিওভি বা নভেল করোনা ভাইরাস। এটি এক ধরণের করোনা ভাইরাস। করোনা ভাইরাসের অনেক রকম প্রজাতি আছে, কিন্তু এর মধ্যে মাত্র ছয়টি মানুষের দেহে সংক্রমিত হতে পারে। তবে নতুন ধরণের ভাইরাসের কারণে সেই সংখ্যা এখন থেকে হবে সাতটি। ২০০২ সাল থেকে চীনে মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়া সার্স (পুরো নাম সিভিয়ার এ্যাকিউট রেসপিরেটরি সিনড্রোম) নামে যে ভাইরাসের সংক্রমণে পৃথিবীতে ৭৭৪জনের মৃত্যু হয়েছিল আর ৮০৯৮জন সংক্রমিত হয়েছিল। সেটিও ছিল এক ধরণের করোনা ভাইরাস। নতুন এই রোগটিকে প্রথমদিকে নানা নামে ডাকা হচ্ছিল, যেমন: ‘চায়না ভাইরাস’, ‘করোনা ভাইরাস’, ‘২০১৯ এনকভ’, ‘নতুন ভাইরাস’, ‘রহস্য ভাইরাস’ ইত্যাদি। এ বছরের ফেব্রুয়ারি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা রোগটির আনুষ্ঠানিক নাম দেয় কোভিড-১৯ যা ‘করোনা ভাইরাস ডিজিজ ২০১৯’-এর সংক্ষিপ্ত রূপ।
রোগের লক্ষণ কী:
রেসপিরেটরি লক্ষণ ছাড়াও জ্বর, কাশি, শ্বাস প্রশ্বাসের সমস্যাই মূলত প্রধান লক্ষণ। করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব অনেককে সার্স ভাইরাসের কথা মনে করিয়ে দিয়েছে যা ২০০০ সালের শুরুতে প্রধানত এশিয়ার অনেক দেশে ৭৭৪ জনের মৃত্যুর কারণ হয়েছিলো । নতুন ভাইরাসটির জেনেটিক কোড বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে এটি অনেকটাই সার্স ভাইরাসের মতো।

“আমরা যখন নতুন কোনো করোনা ভাইরাস দেখি, তখন আমরা জানতে চাই এর লক্ষণগুলো কতটা মারাত্মক। এ ভাইরাসটি অনেকটা ফ্লুর মতো কিন্তু সার্স ভাইরাসের চেয়ে মারাত্মক নয়,” বলছিলেন এডিনবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর মার্ক উলহাউস।
লক্ষণগুলো কতটা মারাত্মক?
জ্বর দিয়ে ভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হয়, এরপরে শুকনো কাশি দেখা দিতে পারে। প্রায় এক সপ্তাহ পরে শ্বাসকষ্ট শুরু হয়ে যায়। অনেক রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দিতে হয়। প্রতি চারজনের মধ্যে অন্তত একজনের অবস্থা মারাত্মক পর্যায়ে যায় বলে মনে করা হয়। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে হালকা ঠাণ্ডা লাগা থেকে শুরু করে মৃত্যুর সব উপসর্গ দেখা দিতে পারে। ”যখন আমরা করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত কাউকে দেখতে পাই, আমরা বোঝার চেষ্টা করি লক্ষণগুলো কতটা মারাত্মক। এটা ঠাণ্ডা লাগার লক্ষণগুলোর চেয়ে একটি বেশি, সেটা উদ্বেগজনক হলেও, সার্সের মতো অতোটা মারাত্মক নয়,” বলছেন ইউনিভার্সিটি অফ এডিনবরার অধ্যাপক মার্ক উলহাউজ। বিশ্বজুড়ে জনস্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা জারির কথা ভাবছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, যেমনটি তারা করেছিল সোয়াইন ফ্লু এবং ইবোলার সময়।
কোথা থেকে এলো করোনাভাইরাস?
সবসময়েই নতুন নতুন ভাইরাস শনাক্ত হয়ে থাকে। কোন একটি প্রাণী থেকে এসে এসব ভাইরাস মানব শরীরে বাসা বাধতে শুরু করে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ধারণা ভাইরাসটি উৎস কোনো প্রাণী। যতটুকু জানা যায়, মানুষের আক্রান্ত হবার ঘটনাটি ঘটেছে চীনের উহান শহরে সামুদ্রিক মাছ পাইকারি বিক্রি হয় এমন একটি বাজারে। করোনাভাইরাস ভাইরাস পরিবারে আছে তবে এ ধরণের ছয়টি ভাইরাস আগে পরিচিত থাকলেও এখন যেটিতে সংক্রমিত হচ্ছে মানুষ সেটি নতুন। বেশিরভাগ করোনাভাইরাসই বিপজ্জনক নয় কিন্তু আগে থেকে অপরিচিত এই নতুন ভাইরাসটি ভাইরাল নিউমোনিয়াকে মহামারির দিকে ঠেলে দিতে পারে বলে আশংকা করা হচ্ছে।
কোন প্রাণী থেকে ছড়িয়েছে করোনাভাইরাস?
একবার যদি ভাইরাসের উৎস প্রাণীটি শনাক্ত করা সম্ভব হয়, তাহলে রোগটি মোকাবেলা করা অনেক সহজ হয়। করোনাভাইরাসের সঙ্গে সম্পর্ক আছে চীনের উহানের দক্ষিণ সমুদ্রের খাবারের পাইকারি বাজারের সঙ্গে। যদিও বেশ কিছু সামুদ্রিক প্রাণী করোনাভাইরাস বহন করতে পারে (যেমন বেলুগা তিমি), ওই বাজারটিতে অনেক জীবন্ত প্রাণীও থাকে, যেমন মুরগি, বাদুর, খরগোশ, সাপ- এসব প্রাণী করোনাভাইরাসের উৎস হতে পারে। গবেষকরা বলছেন, চীনের হর্সশু নামের একপ্রকার বাদুরের সঙ্গে এই ভাইরাসের ঘনিষ্ঠ মিল রয়েছে।
চীনে কেন?
অধ্যাপক উলহাউজ বলছেন, এর বড় কারণ চীনের বিশাল আকৃতি এবং জনসংখ্যার ঘনত্ব এবং যেসব প্রাণী ভাইরাসটি বহন করে, সেগুলোর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক। তিনি বলছেন, ”পরবর্তী বড় মহামারি চীন বা এই অঞ্চলে হলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।” মানুষের মধ্যে কত সহজে রোগটি ছড়িয়ে পড়তে পারে?
রোগটির প্রাদুর্ভাবের শুরুতে চীনের কর্তৃপক্ষ বলেছিল যে, ভাইরাসটি মানুষের মধ্যে ছড়াচ্ছে না- কিন্তু বর্তমানে এ ধরণের রোগী পাওয়া গেছে। বিজ্ঞানীরা এখন বলছেন, একেকজন সংক্রমিত ব্যক্তি রোগটি গড়ে ১.৪ থেকে ২.৫ জন ব্যক্তির মধ্যে ছড়িয়ে দিচ্ছেন। এই সংখ্যাকে বলা হয় ‘বেসিক রিপ্রোডাকশন নাম্বার অথবা মৌলিক প্রজনন সংখ্যা’- যা একের বেশি হওয়া মানে হলো রোগটি স্বনির্ভর হয়ে উঠেছে। সুতরাং আমরা এতদিনে জেনে গেছি যে, এটি এমন একটি ভাইরাস যা নিজে থেকে বিনষ্ট বা বিলুপ্ত হয়ে যাবে না। শুধুমাত্র চীনে গৃহীত সিদ্ধান্ত- যেমন শহরগুলো বন্ধ করে দেয়ার মতো কড়া পদক্ষেপের ফলেই শুধুমাত্র রোগটির বিস্তার ঠেকানো যেতে পারে। যদিও এসব সংখ্যা এখনো প্রাথমিক হিসাব, তারপরেও তারা করোনাভাইরাসকে সার্স ভাইরাসের সেঙ্গ তুলনা করছে। এখানে আরো উদ্বেগের ব্যাপার হলো, রোগে আক্রান্ত হওয়ার কোন লক্ষণ ছাড়া ব্যক্তিরাও ভাইরাসটি ছড়িয়ে দিতে পারেন। তবে কতো তাড়াতাড়ি বা কতো সহজে সেটা ঘটতে পারে, তা এখনো পরিষ্কার নয়, কিন্তু এর ফলে ভাইরাসটি সংক্রমণ ঠেকানো আরো কঠিন হয়ে পড়বে।
ভাইরাসটির কি পরিবর্তন ঘটতে পারে?
ভাইরাসটি কোন একটা প্রাণী থেকে মানুষের দেহে ঢুকেছে এবং একজন থেকে আরেকজনের দেহে ছড়াতে ছড়াতে আবার নিজের জিনগত গঠনে সবসময় পরিবর্তন আনছে – যাকে বলে মিউটেশন। তাই এ ভাইরাস হয়তো আরো বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে, এমন আশংকা রয়েছে। কিন্তু এ ভাইরাসটির প্রকৃতি এবং কিভাবেই বা তা রোধ করা যেতে পারে – এ সম্পর্কে এখনো বিজ্ঞানীরা বিশদভাবে জানার চেষ্টা করছেন। সার্স বা ইবোলার মতো নানা ধরণের প্রাণঘাতী ভাইরাসের খবর মাঝে মাঝেই সংবাদ মাধ্যমে আসে। এই করোনাভাইরাস তার মধ্যে সর্বশেষ। বিজ্ঞানীরা বলছেন, ভাইরাসটি হয়তো মানুষের দেহকোষের ভেতরে ইতিমধ্যেই ‘মিউটেট করছে’ অর্থাৎ গঠন পরিবর্তন করে নতুন রূপ নিচ্ছে এবং সংখ্যাবৃদ্ধি করছে – যার ফলে এটি আরো বেশি বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে। এই ভাইরাস মানুষের ফুসফুসে সংক্রমণ ঘটায় এবং শ্বাসতন্ত্রের মাধ্যমেই এটি একজনের দেহ থেকে আরেক জনের দেহে ছড়ায়। সাধারণ ফ্লু বা ঠান্ডা লাগার মতো করেই এ ভাইরাস ছড়ায় হাঁচি-কাশির মাধ্যমে ।
ভাইরাসটি কিভাবে ঠেকানো যেতে পারে?
ভাইরাস প্রতিরোধক করতে কোন ভ্যাকসিন বা টিকা এখনো আবিষ্কৃত হয়নি। এই রোগ থেকে রক্ষার একমাত্র উপায় হলো অন্যদের মধ্যে ভাইরাসের সংক্রমণ হতে না দেয়া। যার মানে হলো:
মানুষজনের চলাচল সীমিত করে দেয়া।
হাত ধুতে সবাইকে সবাইকে উৎসাহিত করা। স্বাস্থ্যকর্মীরা প্রতিরক্ষামূলক পোশাক পরে রোগীদের আলাদা আলাদা করে চিকিৎসা সেবা দেয়া

রোগীদের ভাইরাস রয়েছে কিনা তা জানতে এবং রোগীদের সংস্পর্শে আসা লোকদের শনাক্ত করার জন্যও গোয়েন্দা কর্মকাণ্ড বা নজরদারি ব্যবস্থার প্রয়োজন।
মাস্ক পরে কি ঠেকানো যায়?
ভাইরাস সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার যেকোনো খবরের জন্য একটি দারুণ প্রতীকী ছবি হচ্ছে মাস্ক বা মুখোশ পরা কোন মানুষের মুখচ্ছবি। বিশ্বের বহু দেশেই সংক্রমণ ঠেকানোর একটি জনপ্রিয় ব্যবস্থা হচ্ছে মাস্ক ব্যবহার। বিশেষ করে চীনে, যেখান থেকে শুরু হয়েছে করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার ঘটনা, সেখানেও মানুষ বায়ুর দূষণের হাত থেকে বাঁচতে হরহামেশা নাক আর মুখ ঢাকা মুখোশ পরে ঘুরে বেড়ায়।

অবশ্য বায়ুবাহিত ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে এই মাস্ক কতটা কার্যকর সে ব্যাপারে যথেষ্টই সংশয়ে আছেন ভাইরাস বিশেষজ্ঞরা, যাদেরকে বলা হয় ভাইরোলজিস্ট। তবে হাত থেকে মুখে সংক্রমণ ঠেকাতে এই মাস্ক ব্যবহার করে সুফল পাওয়ার কিছু নজির আছে। আঠারো শতকে প্রথম সার্জিক্যাল মাস্কের চল শুরু হয়। কিন্তু ১৯১৯ সালে স্প্যানিশ ফ্লু মহামারির আগ পর্যন্ত এই মাস্ক আমজনতার হাতে এসে পৌঁছায়নি। ওই মহামারিতে ৫ কোটির মত মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। ইউনিভার্সিটি অব লন্ডনে সেন্ট জর্জেসের ডঃ ডেভিড ক্যারিংটন বিবিসিকে বলেন, “সাধারণ সার্জিক্যাল মাস্ক বায়ুবাহিত ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে সুরক্ষা দিতে যথেষ্ট নয়”। “বেশিরভাগ ভাইরাসই” বায়ুবাহিত, তিনি বলেন, এবং এই মাস্কগুলো এতই ঢিলেঢালা থাকে যে এটা বায়ুকে ফিল্টার করতে পারেনা ঠিকঠাক। তাছাড়া যিনি এই মাস্ক ব্যবহার করছেন, তার চক্ষু থাকছে উন্মুক্ত। তবে হাঁচি বা কাশি থেকে ভাইরাসের সংক্রমণের ঝুঁকি কিছুটা কমাতে সাহায্য করতে পারে এই মাস্ক। আর হাত থেকে মুখের সংক্রমণের বিরুদ্ধেও কিছু সুরক্ষা এটা দেয়। ২০১৬ সালে নিউ সাউথ ওয়েলসের একটি সমীক্ষায় বলা হয়, মানুষ প্রতি ঘণ্টায় গড়ে ২৩ বার হাত দিয়ে মুখ স্পর্শ করে। ইউনিভার্সিটি অব নটিংহ্যামের মলিক্যুলার ভাইরোলজির অধ্যাপক জোনাথন বল বলেন, হাসপাতালের মধ্যে একটি নিয়ন্ত্রিত সমীক্ষায় দেখা গেছে রেসপিরেটর হিসেবে তৈরি ফেস মাস্ক ইনফ্লুয়েঞ্জা ঠেকাতে পারে।

শামিম ইশতিয়াকঃ স্মার্টফোনে ইনস্টল থাকা একটি এপ্স যদি আপনাকে জানিয়ে দেয় কিছুক্ষনের মাঝেই হতে চলছে প্রাকৃতিক দুর্যোগ ভূমিকম্প তবে তা যেমন আপনার ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে সাহায্য করবে তেমনি আপনার নিরাপদ অবস্থানে থাকাটাকেও আরো জোড়দার করবে।
ভূমিকম্পের আগাম বার্তা, ভূমিকম্পের তিব্রতা এবং এপ্স ব্যাবহারকারী কে সতর্ক করার এমনি এক যন্ত্র উদ্ভাবন করেছেন ময়মনসিংহের আনন্দ মোহন কলেজের উচ্চ মাধ্যমিকের তিন শিক্ষার্থী।
“আবাস” নামে এই যন্ত্রটি দুই মিনিট আগে মোবাইলে এলার্ম দিবে ভূমিকম্পের, এবং ভূমিকম্প চলাকালীন দেখাবে এর তিব্রতা, যাতে নিরাপদ অবস্থা নিশ্চিত করে প্রাকৃতিক দুর্যোগের ক্ষয়ক্ষতি হতে নিজেদের কে নিরাপদ রাখতে পারে ব্যাবহারকারীরা।
নাহিদ হাসান শুভ্র, রনৎ দাস প্রাঙ্গন ও সাজিদ হাসান নাঈম নামে তিন তরুণ শিক্ষার্থীর উদ্ভাবন করা এই যন্ত্র তৈরি হয়েছে নির্ধারিত সময় মোতাবেক আপডেট হওয়া রিয়েল টাইম সম্পৃক্ত সার্ভার ও কিছু সেন্সর দ্বারা, যা কাজ করবে মোবাইল এপ্স এর মাধ্যমে এবং ভূমিকম্পের আগে বার্তা পাঠাবে ব্যাবহারকারীকে।
বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী এলাকায় স্থাপন করা হবে এই সেন্সর, যা সতর্কতা জানাবে প্রাকৃতিক দুর্যোগের আগের মূহুর্তে, যাতে ভূমিকম্পের সময় ঝুকিপূর্ণ স্থান ত্যাগ ও নিজেদের নিরাপদ স্থানে নিয়ে যেতে সক্ষম হবে ব্যাবহারকারী সহ দুর্যোগ প্রবণ সকল মানুষ।
উচ্চমাধ্যমিকে অধ্যয়নরত এমন তিন শিক্ষার্থীর উদ্ভাবন করা এই যন্ত্র বাংলাদেশের দুর্যোগ সতর্কতায় অগ্রণী ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন অনেক গবেষকেরা.
প্রশাসনের যথেষ্ট সহযোগিতায় এই উদ্ভাবন বাংলাদেশের দুর্যোগ ও দুর্যোগে ক্ষয়ক্ষতি মোকাবেলায় এক অন্যতম মাধ্যম হয়ে উঠবে বলেও দাবি করেছেন অনেকেই।।
জাহিদুর রহমান তারিক,ঝিনাইদহঃ ঝিনাইদহে কিশোর-কিশোরীদের মোবাইলের ইন্টারনেট গেমে আসক্ত হওয়ার ভয়ঙ্কর প্রবনতা লক্ষ করা যাচ্ছে। বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী সহ কর্মজীবি শিশু কিশোররাও এই মোবাইল ইন্টারনেটর নেটের গ্রুপ গেমে আসক্ত হতে দেখা যাচ্ছে। এ উপজেলার প্রতিটা গ্রাম-গঞ্জেও এই মোবাইল ইন্টারনেট গ্রুপ গেম মহামারি আকার ধারন করেছে। প্রতিটি জিনিসের একদিকে যেমন সুবিধা আছে, আবার অনেক অসুবিধাও আছে, তেমনি ইন্টারনেট ও মোবাইল বিশ্বকে হাতের মুঠোয় নিয়ে এসেছে। অন্যদিকে এর অবাধ ব্যবহারে কিশোররা আজ বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। গেমসের নেশায় রাতে তাদের ঘুম বন্ধ হওয়ার উপক্রম। অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরা অনেকে আজ পড়ার টেবিল ছেড়ে কখনো মোবাইল গেমস, কখনো ইন্টারনেটের খারাপ সাইটে বিভিন্ন ছবি দেখছে। তারা নৈতিক মূল্যবোধ হারিয়ে ফেলছে। লেখাপড়ায় অমনোযোগী হয়ে পড়ছে। এতে একদিকে তাদের ভবিষ্যৎ বাধাগ্রস্থ হচ্ছে, অন্যদিকে অপরাধ প্রবণতা বাড়ছে। তাই এই কিশোর-কিশোরীদের দিকে যথাযথ কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি রাখা দরকার। এসব কিশোর-কিশোরীদের মা-বাবাসহ সমাজের সবারই খেয়াল রাখতে হবে, যেন তারা মোবাইলের অতিরিক্ত ব্যবহার না করে। জাতির ভবিষ্যৎ এই কিশোর ছেলে-মেয়েরা যাতে অল্প বয়সেই ইন্টারনেটের অবাধ ব্যবহার না করতে পারে ও মোবাইল আসক্ত না হতে পারে, সেদিকে সবার দৃষ্টি দেওয়া আশু প্রয়োজন। কিশোর-কিশোরী ইন্টারনেট গেমে আসক্ত হয়ে পড়েছে তারা সাধারণ ভাবে নিজেদের সব সময় লুকিয়ে রাখে। স্বাভাবিক আচরণ তাদের মধ্যে দেখা যায় না। দিনের বেশির ভাগ সময় তারা কাটিয়ে দেয় সোস্যাল মিডিয়ায়। থাকে চুপচাপ। কখনো আবার আলাপ জমায় অপরিচিত ব্যক্তির সঙ্গে। গভীর রাত পর্যন্ত ছাদে ঘুরে বেড়ায় আবার একা একটা বন্ধ ঘরে থাকতে পছন্দ করে। বারবার ডাকাডাকি করেও তাদের সাড়া মেলেনা। আবার ফেসবুক ব্যবহার করে বিভিন্ন ছেলে-মেয়েরা ম্যাসেঞ্জারের চ্যাট বক্সের আলাপ চারিতায় প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। অথচ কেউ কাউকে সামনা সামনি কোনদিন দেখেনি। একটা সময়ের পর নিজের শরীরকে কেটে ক্ষত-বিক্ষত করে।এই সব ক্ষতিকর মোবাইল ইন্টারনেট গেম থেকে এইসব কিশোর-কিশোরীকে বের করে আনতে হবে। খেয়াল রাখেতে হবে আমাদের সন্তান, ভাই-বোন বা নিকটজনকে মোবাইলে ও কম্পিউটারে অধিক সময়ে একাকী বসে থাকতে দেখলে সে কী করছে, তার খোঁজ-খবর নিতে হবে। সন্তানকে কখনও একাকী বেশি সময় থাকতে না দেয়া এবং এসব গেমের কুফল সম্পর্কে তাদের ধারনা দিতে হবে। সন্তানদের মাঝে ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলার মানসিকতা সৃষ্টি করা। যাতে তারা আত্মহত্যা করা বা নিজের শরীরকে ক্ষতবিক্ষত করা অনেক বড় পাপ-এটা বুঝতে পারে। সন্তান ও পরিবারের অন্য কোনো সদস্য মানসিকভাবে বিপর্যস্ত কিনা-সেদিকে বিশেষ লক্ষ্য রাখা। কেউ যদি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয় তাকে সঙ্গ দেওয়া। কৌতূহলি মন নিয়ে কেউ যেন এই ধরনের গ্রুপ গেমটি খেলার চেষ্টা না করা। কৌতূহল থেকে এটি নেশাতে পরিণত হয়। আর নেশাই হয়তো ডেকে আনতে পারে আপনার বড় ধরনের অপুরনীয় ক্ষতি। কথা হয় মোবাইল গ্রুপ গেমে আসক্ত এক অবিভাবকের সাথে তিনি জানান, তার সন্তান ছোট বেলা থেকেই পড়া শোনায় খুব ভালো ছিলো। কিন্তু বছর দুয়েক আগে যখন সে এন্ডুরয়েড মোবাইল ব্যবহার করতে লাগলো তারপর থেকেই সে পড়াশোনায় অমনোযোগী হতে লাগলো। এখন সে একেবারেই পড়াশোনা করতে চায় না। কিছু দিন আগে তার বাম হাতের নিচে ব্লেড দিয়ে কমপক্ষে ১৫/২০ জায়গায় কাটছে। তাহলে চিন্তা করতে হবে সে কি পরিমান আসক্ত হয়েছে। এখন সে ঘরে একা একা থাকে, কানে হেডফোন লাগিয়ে অন্যান্য বন্ধু বান্ধবের সাথে ভিডিও গ্রুপ গেম খেলে এবং কথা বলে। ঠিকমত খাওয়া দাওয়া করে না। খাবার চাহিদা তার নেই বললে চলে। শরীর ভেঙে পড়ে বয়স্ক মানুষের মত চেহারা হয়ে গিয়াছে। অনেকবার ডাকার পরে একবার খুব রাগান্বিত হয়ে উত্তর দেয়। তিনি আরো জানান তার সন্তান এই মোবাইল ইন্টারনেটের ভিডিও গ্রুপ গেমে আসক্ত হয়ে তার ভবিষ্যত অন্ধকার হয়ে গিয়াছে। তাকে আর কোনদিন আগের অবস্থায় আনা সম্ভব হবে না। এটাকে তিনি মাদকদ্রব্যর নেশার চেয়ে ভয়ংকর বলে উল্লেখ করে বলেন, এই সমস্যা থেকে আমাদের সস্তান, ভাই-বোনদের বাচাঁতে হলে অবিভাবকদের পাশাপাশি সমাজের সচেতন মহল, শিক্ষক-শিক্ষীকা, জনপ্রতিনিধি এবং প্রশাসনের প্রয়োজন আশু হস্তক্ষেপ।