ময়মনসিংহের ভালুকায় পুলিশের সর্বোচ্চ পদক প্রাপ্ত ও সরকারি চাকরিজীবী এক দম্পতিকে প্রভাবশালী একটি চক্রের মাধ্যমে নানাভাবে হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। এসব ঘটনায় তদন্তে অভিযোগগুলো মিথ্যা প্রমাণিত হওয়ার পরও চক্রটি ওই পরিবারের ক্ষতি করার চেষ্টা করে যাচ্ছে। ঘটনাটি উপজেলার কাদিগড় গ্রামের। সরেজমিনে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, উপজেলার কাদিগড় গ্রামের পুলিশের সর্বোচ্চ পদক প্রাপ্ত সালেহ ইমরান ও তার স্ত্রী ভালুকা উপজেলার কাদিগড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নূপুর আক্তারের বিরুদ্ধে স্কুলের জমি দখল ও স্কুলের পুরাতন ভবনের মালামাল আত্মসাতের বিষয় উল্লেখ করে স্থানীয় প্রভাবশালী ও ওই স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সভাপতি আবুল কালাম আজাদ তালুকদার নির্বাহী অফিসার বরাবর অভিযোগ করেন। পরে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয় থেকে সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিট্রেট সোমাইয়া আক্তারকে প্রধান ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সৈয়দ আহমদকে সদস্য সচিব করে ৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সোমাইয়া আক্তার কমিটির অন্য সকল সদস্যদের নিয়ে দিনব্যাপী সরেজমিন তদন্ত ও স্কুলের জমির মাপজোক করে স্কুলে উপস্থিত স্থানীয় শতাধিক মানুষের সামনে তদন্ত কমিটির প্রধান স্কুলের জমি স্কুল কর্তৃপক্ষকে বুঝিয়ে দিয়ে আসেন। এসময় ওই স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ও তার স্বামীর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের কোনো প্রমাণ পাননি বলে তিনি উল্লেখ করেন।
স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি, অভিভাবক ও কমিটির সাবেক কয়েক সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, তদন্তে অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন প্রমাণ হওয়ার পরও সাবেক সভাপতি কালাম তালুকদার, ছাইফুল ইসলাম, রমিজ খান, রিপন তালুকদার, জুয়েল ও আলামিন গংরা নতুন করে ওই প্রধান শিক্ষিককে অন্যত্র বদলির জন তদবির শুরু করেন। এদিকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে বদলি করার এ ষড়যন্ত্রের গুঞ্জন এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে স্কুলের অভিভাবক, কমিটির সদস্য এবং শিক্ষকগণ ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে বহাল রাখার জন্য উপজেলা শিক্ষা অফিসার বরাবর আলাদা তিনটি দরখাস্ত করেন।
স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নূপুর আক্তার জানান, স্কুলের ম্যানেজিং কমিটিকে কেন্দ্র করে সাবেক সভাপতি তাকেসহ তার স্বামীর ক্ষতি করার জন্য মিথ্যা ও বানোয়াট অভিযোগ দিয়ে হয়রানি করছেন। তদন্তে অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হলেও এখন তাকে বদলি করার জন্য উঠেপড়ে লেগেছে। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ও তদন্ত কমিটির সদস্য সচিব সৈয়দ আহমদ জানান, ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ও তার স্বামীর বিরুদ্ধে আনীত কোনো অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়নি, সবগুলো অভিযোগই ভিত্তিহীন।
