ইউক্রেনে ‘আনুষ্ঠানিক যুদ্ধ’ ঘোষণার জল্পনা উড়িয়ে দিলো রাশিয়া
আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ
ইউক্রেনে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ‘আনুষ্ঠানিক যুদ্ধ’ ঘোষণার জল্পনা উড়িয়ে দিয়েছে রাশিয়া। কয়েকদিন ধরে পশ্চিমা কর্মকর্তা ও বিশ্লেষকরা বলে আসছিলেন, আগামী ৯ মে ইউক্রেনে আনুষ্ঠানিক যুদ্ধ ঘোষণা করতে পারেন পুতিন। খবর রয়টার্সের।
বুধবার (০৪ মে) এক বিবৃতিতে পশ্চিমাদের এ বক্তব্যকে বাজে কথা বলে উড়িয়ে দিয়েছে মস্কো। প্রতিবছর ৯ মে’কে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে রাশিয়ার বিজয় দিবস হিসেবে উদযাপন করে মস্কো।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু করে রাশিয়া। ‘যুদ্ধ’ বলার পরিবর্তে একে ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ বলে অভিহিত করেন পুতিন। কিন্তু পশ্চিমা রাজনীতিকরা বলেন, পুতিন আগামী সোমবার (৯ মে) ইউক্রেনের বিরুদ্ধে পুরোদস্তুর যুদ্ধ ঘোষণা কিংবা জয় ঘোষণা করতে পারেন অথবা দুটোই করতে পারেন।
বুধবার বিষয়টি নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে রুশ প্রেসিডেন্টের কার্যালয় ক্রেমলিন মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, ‘এটা বাজে কথা।’
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে সোভিয়েত ইউনিয়নের বিজয় দিবস ৯ মে। ১৯৪৫ সালের এ দিনে জার্মান একনায়ক অ্যাডলফ হিটলারের নাৎসি বাহিনীর পরাজয় ঘটে। তারপর থেকেই দিনটিকে বিজয় দিবস হিসেবে স্মরণ করে আসছে রাশিয়া।
প্রতিবছর এ দিনটি মস্কোয় ব্যাপক সামরিক কুচকাওয়াজ ও রুশ বিপ্লবের নেতা ভ্লাদিমির লেনিনের সমাধিতে পুস্পস্তবক অর্পণের মধ্যদিয়ে পালন করা হয়। পশ্চিমা কর্মকর্তারা মনে করেন, দিনটির প্রতীকী তাৎপর্যকে কাজে লাগিয়ে ইউক্রেনে সামরিক অর্জন অথবা সর্বাত্মক যুদ্ধ কিংবা দুটোই ঘোষণা করতে পারেন পুতিন।
আনুষ্ঠানিক যুদ্ধ ঘোষণার অর্থ কী হতে পারে?
ইউক্রেনে দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে সামরিক অভিযান চললেও এখনও আনুষ্ঠানিক যুদ্ধ ঘোষণা করেনি রাশিয়া। আনুষ্ঠানিক যুদ্ধ ঘোষণা করলে রাশিয়া তার রিজার্ভ বাহিনীকে পুরোপুরি মোতায়েন করতে সক্ষম হবে।
এতে পুতিনের পক্ষে অভিযান জোরদার করার পথ সুগম হবে। ক্রাইসিস গ্রুপের রাশিয়া বিষয়ক বিশ্লেষক ওলেগ ইগনাতভের মতে, ‘পুতিনের হাতে অনেক বিকল্প আছে। এর মধ্যে যুদ্ধের ঘোষণা সবচেয়ে কঠিন পরিস্থিতির একটি।’
পুতিনের হাতে আরেকটি বিকল্প হলো ‘মোবিলাইজেশন ল’ চালু করা। এ আইনের অর্থ হলো, রুশ ফেডারেশনের বিরুদ্ধে কোনো আগ্রাসন বা আগ্রাসনের সরাসরি হুমকি কিংবা রুশ ফেডারেশনের বিরুদ্ধে সরাসরি সশস্ত্র সংঘাত শুরু হয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে সামগ্রিকভাবে বা আংশিক ভাবে সেনা সমাবেশ শুরু করার ক্ষমতা থাকা।
এ আইনের মাধ্যমে রুশ ফেডারেশন বহিঃশত্রুর আগ্রাসন বা হুমকির শিকার হলে রাশিয়ার সরকার কেবল সর্বাত্মকভাবে তার সামরিক বাহিনীকে ব্যবহার করাই নয়, বরং দেশের অর্থনীতিকেও যুদ্ধের কাজে লাগানোর সুযোগ পাবে।
