আজভস্টালের ভেতরে ভয়াবহ পরিস্থিতি!
আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ
ইউক্রেনের মারিওপোল শহরে অবস্থিত আজভস্টাল ইস্পাত কারখানায় অবরুদ্ধ যোদ্ধাদের মধ্যে গুরুতর জখম অনেকে আছেন বলে জানিয়েছেন সেখান থেকে রুশ বাহিনীর হাতে আটক হওয়া এক বন্দি। রুশ সংবাদমাধ্যম ইজভেস্তিয়ার সঙ্গে আলাপকালে তার বর্ণনায় উঠে এসেছে পরিস্থিতির ভয়াবহ চিত্র।
ইজভেস্তিয়ার প্রতিবেদক সেমিয়ন এরেমিনকে ওই বন্দি বলেন, এ মুহূর্তে গুরুতর জখম অনেকে আছে। মেঝেতে রেখেও অনেকের অপারেশন করা হচ্ছে। অপারেশনের সুবিধা বলতে আছে শুধু কাঠের পাটাতন ও একটা টয়লেট। স্বাভাবিক পরিস্থিতি বলতে কিছু নেই সেখানে। পরিখাগুলো সোভিয়েত আমলে নির্মিত।
তিনি জানান, ইস্পাত কারখানার নিচে রয়েছে রিইনফোর্সড সিমেন্টের অতিকায় কাঠামো। একটি বাঙ্কার থেকে অন্যটিতে যাবার জন্য রয়েছে সুড়ঙ্গপথ। প্রতিটি বাঙ্কার থেকে বেশ কয়েকটি বেরোনোর পথ রয়েছে। আমি দুটি বাঙ্কার কক্ষে ছিলাম। কক্ষের সামনে করিডর আছে। সবই ভূগর্ভে। করিডর দিয়ে কিছুটা এগোলে সামনে পড়ে নিচে নামার আরেক পথ। সে পথ দিয়ে নামলেই বড় পরিসরের কক্ষ। সেখানে বেশ কয়েকটি কাঠের পাটাতন আছে, তিন-তলা বিছানা আছে। এটুকুই। এছাড়া টয়লেট আছে। টয়লেটে পানি সরবরাহ আছে।
এর আগে রুশ সাংবাদিক মুরাদ গাজদিয়েভ তার ব্লগে জানান, আজভস্টাল শিল্প এলাকা সম্পূর্ণ অবরুদ্ধ করে রেখেছে রুশ বাহিনী। উত্তর দিক থেকে কারখানাটির মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছে রুশ সেনাবাহিনী, দোনেতস্ক পিপলস রিপাবলিক (ডিপিআর) মিলিশিয়া ও চেচেন যোদ্ধারা। দক্ষিণ দিক থেকে কারখানার উপর নিশিদ্র নজরদারি করছে রাশিয়ার পদাতিক বাহিনী, স্নাইপার এবং সাঁজোয়া যান ও গোলাবারুদসহ আর্টিলারি ফোর্সেস।
তিনি জানান, আজভস্টালের আবাসিক এলাকার ভবনগুলো থেকে নজরদারি এবং ড্রোনের সাহায্যে প্রতিনিয়ত পুরো শিল্প এলাকার উপরিভাগ দেখা হচ্ছে। মাঝে মাঝে সেখানে ইউক্রেনীয় সৈন্যদের চলাচলও নজরে আসছে। প্রতিদিন রুশ বাহিনী সেখানে নির্দিষ্ট সময় একতরফা যুদ্ধবিরতি পালন করছে। কখনো কখনো যুদ্ধবিরতির নির্দিষ্ট সময় ইউক্রেনীয় সৈন্যরা পালা করে অবস্থান পাল্টাচ্ছে।
জানা গেছে, ইউরোপের বৃহত্তম ইস্পাত কারখানাটিতে এখনো ইউক্রেনের যেসব সৈন্য ও মিলিশিয়া রয়েছে তারা ভূগর্ভস্থ সুড়ঙ্গে আশ্রয় নিয়েছে। প্রায় ৫৫ বর্গ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে অবস্থিত আজভস্টালে সুড়ঙ্গ রয়েছে ১১ বর্গ কিলোমিটারের মতো। সোভিয়েত আমলে কারখানাটি নির্মাণ করা হয়েছিল এমনভাবে যাতে পারমাণবিক হামলার সময় কারখানায় কর্মরতরা নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে পারে।
