বঙ্গবন্ধুর চরিত্রে অভিনয়ের জন্য মাত্র “এক” টাকা পারিশ্রমিক নিয়েছেন আরেফিন শুভ। লোক দেখানোর জন্য নয় বরং জাতির পিতার প্রতি সম্মান দেখাতেই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানান এই অভিনেতা।
বাংলাদেশ-ভারতের যৌথ প্রযোজনায় বাংলা চলচ্চিত্রের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় বাজেটের এই ছবি নির্মাণ করছেন বলিউডের নির্মাতা শ্যাম বেনেগাল। সম্পাদনা শেষে এই বছরই মুক্তির কথা রয়েছে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে নির্মিত এই বায়োপিক।
শুরু থেকেই আলোচনার কেন্দ্র বিন্দুতে বঙ্গবন্ধুর বায়োপিক। কারা অভিনয় করছেন এই সিনেমায় এ নিয়ে দর্শকদের আগ্রহের যেনো কমতি ছিলোনা। বিএফডিসির প্রজ্ঞাপনে জানা যায় এই সিনেমার কেন্দ্রীয় চরিত্র অর্থাৎ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভূমিকায় দেখা যাবে আরেফিন শুভকে।
তদবির করে নয়, পাঁচ দফা অডিশন দিয়ে নির্বাচিত হয়েছেন বলে জানান আরেফিন শুভ। জানালেন কেমন ছিলো শুটিংয়ের সেই অভিজ্ঞতা। এ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য প্রতীকী হিসেবে মাত্র ১ টাকার পারিশ্রমিক নিয়েছেন শুভ। জানালেন বঙ্গবন্ধু কন্যার একটি বাক্য অনুপ্রেরণা যুগিয়েছিল তাকে এই চরিত্রে রুপদান করতে।
বাংলাদেশ ও ভারতের যৌথ প্রযোজনার এই চলচ্চিত্রটির জন্য বাজেট নির্ধারিত হয়েছে ৩৫ কোটি টাকা। যার ৬০ ভাগ দিচ্ছে বাংলাদেশ ও ৪০ ভাগ ভারত। সম্পাদনা শেষে এ বছরই মুক্তির সম্ভাবনা রয়েছে জাতির পিতার বায়োপিক।
কে এই আরেফিন শুভ
বাংলাদেশ চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় নায়ক আরিফিন শুভর গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার আংগারগারা গ্রামে। চলচ্চিত্র নিয়ে ব্যস্ত হওয়ার পর তিনি গ্রামে খুব কম যান। হঠাৎ হঠাৎ গ্রামে যাওয়া হলেও কয়েক ঘণ্টার মধ্যে আবার ফিরেও যান। এতে প্রিয় নায়ককে দেখতে না পারার একটা আক্ষেপ রয়েছে মানুষের মধ্যে।
আরিফিন শুভকে নিয়ে গ্রামের মানুষের অপার কৌতূহল। আংগারগারা গ্রামে পৈতৃক নিবাস হলেও তাঁর জন্ম ময়মনসিংহ শহরে। স্কুলে পড়াশোনা ও বেড়ে ওঠাও ময়মনসিংহ শহরেই। বাবা এস এম শামসুল হক ছিলেন সরকারি কর্মকর্তা। চাকরির সুবাদে তিনি দেশের বিভিন্ন জেলায় বদলি হলেও শুভ ময়মনসিংহ শহরেই বড় হয়েছেন।
গ্রামে কখনোই স্থায়ীভাবে বসবাস না করায় আরিফিন শুভর গ্রামে তেমন কোনো বন্ধু নেই। চাচাতো ভাইয়েরা তাঁর কাছের বন্ধু। এখনো গ্রামে গেলে প্রায় সমবয়সী চাচাতো ভাইদের সঙ্গেই শিশুসুলভ দুরন্তপনায় মেতে থাকেন। আংগারগারা বাজার থেকে বেশ গাছগাছালিতে ঢাকা একটা রাস্তা দিয়ে যেতে হয় আরিফিন শুভর বাড়ি। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে শুভর বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় সুনসান নীরবতা। চাচাতো ভাই সাইম আহমেদ ও পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ুয়া চাচাতো ভাই রাইয়ান কবীরের দেখা পাওয়া যায়। তাঁরা জানান, শুভ ভাই সময় পেলে হঠাৎ চলে আসেন গ্রামে। থাকেন খুব কম সময়। যদিও ওই অল্প সময়েই ভক্তরা ঘিরে ধরেন, তবু এর মধ্যে সময় বের করে সমবয়সী নির্ভর, রাকিব, তানভীর, শাওন আলামিন ও নোমাদের সঙ্গে কিছুটা সময়ই কাটিয়ে যান। গ্রামে গেলে শত ব্যস্ততার মধ্যে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ুয়া চাচাতো ভাই রাইয়ান কবীর আবিরের সঙ্গে কিছুটা সময় খুনসুটি করেনই।
গ্রামের মানুষেরা জানান, তাঁরা টিভিতে আরিফিন শুভর সিনেমা দেখেন। ছোটবেলায় শুভকে অনেকেই দুই-একবার দেখেছেন। ঈদে বা পারিবারিক কোনো অনুষ্ঠানে কেবল বাড়িতে যেতেন শুভ। এখন তিনি দেশে জনপ্রিয় চলচ্চিত্র নায়ক। তাঁকে দেখার সুযোগ না মিললেও সবাই তাঁর শুভাকাঙ্ক্ষী। শুভকে নিয়ে গর্ব করেন গ্রামের মানুষ। আংগারগারা ইউনাইটেড উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আতিক উজ্জামান বলেন, ‘আরিফিন শুভকে আমরা খুব একটা দেখতে পাই না। তিনি ব্যস্ত মানুষ। তবে আমরা তাঁর জন্য গর্ববোধ করি।’
