নিজস্ব প্রতিবেদক: ফেসবুকে সংবাদ শেয়ার করায় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ঢাকা জেলায় কর্মরত সাব ইন্সপেক্টর সালেহ ইমরান ও সাংবাদিকদের হাতের কবজি কেটে নেয়ার হুমকি দিয়েছেন ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার কাচিনা ইউনিয়নের ৪,৫,৬ নং ওয়ার্ডের নারী ইউপি সদস্যা হাজেরা খাতুন পারুল। এ বিষয়ে ভালুকা মডেল থানায় পৃথক দুটি সাধারন ডায়েরি করেছেন উক্ত পুলিশ সদস্য ও মামলার একজন স্বাক্ষী রইজ খান। এ বিষয়ে আজ শনিবার (১৬ জানুয়ারি) বিকাল পৌনে ৫টার দিকে ভালুকা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মাইন উদ্দিন নিউজনাউ টুয়েন্টিফোরকে জানিয়েছেন, এ ব্যাপারে থানায় দুটি সাধারণ ডায়েরি হয়েছে। শুক্রবার (১৫ জানুয়ারি) পুলিশের কর্মকর্তা মো. সালেহ ইমরান নিজে বাদী হয়ে ভালুকা মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি নং- ৬৯৭) করেন এবং ১৪ জানুয়ারি রইজ খান বাদী হয়ে সাধারন ডায়েরি (জিডি নং-৬৫৯) করেছেন। থানায় লিখিত সাধারণ ডায়েরি বিবরণে জানা যায়, উপজেলার কাচিনা ইউনিয়ন সংরক্ষিত মহিলা আসনের ৪, ৫ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোছা. হাজেরা খাতুন পারুল তার প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় ১০-১৫ জন লোক সালেহ ইমরানের গ্রামের অসহায় দরিদ্র কৃষকের ৯ একর জমি ১৬ বছর আগে মৃত ব্যক্তিকে জীবিত দেখিয়ে জাল-জালিয়াতির দলিল করার মাধ্যমে ঢাকা দিলকুশা শাখা অগ্রণী ব্যাংক থেকে ১৭ কোটি টাকার লোন অনুমোদন করে নেয়। পরে জালিয়াতির বিষয়টি নিয়ে এলাকার সাধারণ মানুষ সালেহ ইমরানের স্মরণাপন্ন হয়। তিনি বিষয়টি নিয়ে সামাজিক দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে মিডিয়া এবং প্রশাসনের সহযোগিতা চাইলে তাদের সহযোগিতায় ওই লোনটি অনুমোদন হওয়ার পরও ব্যাংক কর্তৃপক্ষ তা স্থগিত করে দেন। পরবর্তীতে ওই জালিয়াতি এবং দুর্নীতি নিয়ে কাদিগড় গ্রামের মো. সমর আলী এবং হাবিজুল ইসলাম বাদী হয়ে ময়মনসিংহ বিজ্ঞ আদালতে দুটি মামলা দায়ের করেন। মামলার নম্বর যথাক্রমে ভালুকা সিআর ৪২০/২০১৯ এবং ৫৩০/২০১৯। মামলা দুটি পিবিআই তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পেয়ে মোছা. হাজেরা খাতুন পারুলসহ ১০ জনের নামে একটি প্রতিবেদন দাখিল করে। ওই প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে বিজ্ঞ আদালত চলতি বছরের ৬ জানুয়ারি মোছা. হাজেরা খাতুন পারুলসহ আসামিদের নামে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। লোন বাতিল, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি এবং এসব খবর পত্রিকায় আসার জের ধরে সাব-ইন্সপেক্টর মো. সালেহ ইমরানের প্রতি মারাত্মকভাবে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন ইউপি নারী সদস্য মোছা. হাজেরা খাতুন পারুল। এরপর চলতি মাসের শুক্রবার (৮ জানুয়ারি) দুপুর ২টার দিকে কাচিনা বাজারে কবিরের চায়ের দোকানে কাচিনা ইউনিয়ন পরিষদের কাদিগড় গ্রামের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. আবু বক্কর সিদ্দিক, কাদিগর গ্রামের মোজাম্মেল ও হানিফসহ আনুমানিক ১৫ জন মানুষের সামনে প্রকাশ্যে সাব-ইন্সপেক্টর মো. সালেহ ইমরানের হাতের কব্জি কেটে ফেলার হুমকি দেন সংরক্ষিত ইউপি মহিলা সদস্য মোছা. হাজেরা খাতুন পারুল। তিনি উপস্থিত মানুষের সামনে এও বলেন, ‘ডরাইলেই ডরে খায় ঠেইল্লা দিলে কিছুই না।’ এ বিষয়ে সাব-ইন্সপেক্টর মো. সালেহ ইমরান বলেন, একজন জনপ্রতিনিধি যেখানে দুর্নীতির বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ার কথা সেখানে তিনি তা না করে বরং দুর্নীতির বিরুদ্ধে এলাকার সাধারণ মানুষের পাশে দাড়ানোয় প্রকাশ্যে যেভাবে আমাকে হুমকি দিয়েছেন, তাতে তার সহযোগী আসামিদের যোগসাজশে আমি এবং আমার পরিবারের যেকোনো ক্ষতি হতে পারে বলে আমি আশঙ্কা করছি। পুলিশ কর্মকর্তার হাতের কব্জি কাটার ব্যাপারে জানতে অভিযুক্ত হাজেরা খাতুন পারুল মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।