মেহজাবীন চৌধুরী বাংলাদেশের একজন জনপ্রিয় মডেল ও অভিনেত্রী। তিনি ২০০৯ সালে লাক্স চ্যানেল আই সুপারস্টার থেকে বিজয়ী হয়ে মিডিয়া জগতে আসেন। বর্তমানে তিনি বিভিন্ন টিভি বিজ্ঞাপন ও নাটকে নিয়মিত অভিনয় করছেন।
১৯৯১ সালের ১৯ এপ্রিল জন্মগ্রহন করেছিলেন অসংখ্য পুরুষের হৃদয় কাঁপানো এই তারকা। মেহজাবিনের পৈতৃক নিবাস চট্টগ্রামে। জন্মের পরপর কথা শেখার আগে ৮/৯ মাস বয়সে বাবা মহিউদ্দিন চৌধুরীর চাকরির সুবাদে তার কোলে বসে পাড়ি দেয় মরুর দেশে ছোট্ট মেহজাবিন। সংযুক্ত আরব আমিরাতে। সেখানেই তার বড় হওয়া, কেটে গেছে শৈশব-কৈশোর। চাল-চলন কথা বলা সবই শিখেছেন মরুর দেশ, ওমানে। পরিবারের কেউই সংস্কৃতি জগতের সঙ্গে জড়িত ছিল না। তবে সবাই সংস্কৃতিমনা। চৌধুরী পরিবারের বড় মেয়েটির ঠিকানা হলো শোবিজ। টাইমস অব ওমান-এ নিয়মিত মডেল হয়েছেন। লেখাপড়ার পাশাপাশি মডেলিং। সঙ্গে ব্যালে নৃত্য। চলছিল জীবন। কেটে গেল ১৬টি বছর। তারপর ২০০৭ সালে পাড়ি দেন দেশে।
ছোট বেলায় বেশ ভোরে ঘুম থেকে ওঠার অভ্যাস ছিলো মেহজাবিনের। যত রাত করেই ঘুমানো হোক না কেন সুর্য ওঠার পর পরই ঘুম ভেঙ্গে যেতো মেহজাবিনের।মেহজাবিনের প্রথম স্কুল ছিলো ওমানে। ‘সোহার‘ নামের এই স্কুলের ছিলো বিশাল মাঠ। আর তাই পড়াশোনার চাইতে খেলাধুলাতেই বেশি আগ্রহ ছিলো তার। বিশেষ করে টিফিনের সময় খাওয়ার বদলে খেলাধুলা নিয়েই ব্যস্ত থাকতেন তিনি। খেলাধুলার পাশাপাশি তিনি পড়াশুনাতেও ভালো ছিলেন। তার ক্লাসের রোল নম্বর সবসময়েই ১ থেকে ১০ এর মধ্যেই থাকতো।
মেহজাবিনের রয়েছে আরও দুই ভাই ও দুই বোন। ভাইদের নাম রাজ ও আলিসান। মুকাদ্দেস ও কায়নাত হলো দুই বোন। তবে এই পাঁচজনের মধ্যে সবার বড় মেহজাবিন। জনপ্রিয় এই মডেল সান্তা মারিয়াম বিশ্ববিদ্যালয়ে ফ্যাশন ডিজাইনিং এ পড়াশোনা করেছেন। ২০০৯ সালে প্রায় ১০ হাজার প্রতিযোগীকে পেছনে ফেলে সেরা সুন্দরী নির্বাচিত হন মেহজাবীন চৌধুরী। এর পরের গল্পটা প্রায়ই সবারই জানা। একের পর এক নাটক, বিজ্ঞাপনে কাজ করে দর্শকদের প্রিয় মুখ হন তিনি। লাক্স চ্যানেল আই সুপারস্টার প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর মেহজাবীন অভিনীত প্রথম নাটক ছিল ইফতেখার আহমেদ ফাহমি পরিচালিত ‘তুমি থাকো সিন্ধুপারে’। এ নাটকে তার বিপরীতে অভিনয় করেছেন মাহফুজ আহমেদ। এরপর তিনি একে একে কাজ করেন মাঝে মাঝে তব দেখা পাই, কল সেন্টার, মেয়ে শুধু তোমার জন্য, আজও ভালোবাসি মনে মনে, হাসো আন লিমিটেডসহ, অধরা, অবশেষে অণ্যকিছু, মনের মত মন, তবুও অপেক্ষায়, একটি অনাকাঙ্ক্ষিত প্রেমের গল্প, একটি অসমাপ্ত ভালবাসা, রিটার্ন, প্রেম, ব্লাইন্ড ডেট সহ বেশকিছু নাটকে। ২০১৩ তে শিখর শাহনিয়াত পরিচালিত নাটক ‘অপেক্ষার ফটোগ্রাফি‘ ছিল মেহজাবীন এর জন্য বড় একটি টার্নিং পয়েন্ট। তার অভিনীত ধারাবাহিক নাটক গুলো হলো ‘ধান্দা‘, ‘ইউনিভার্সিটি’, ‘অ্যাবনরমাল‘।
সম্প্রতি ঈদুল আযহা ২০১৭ -এ মিজানুর রহমান আরিয়ানের পরিচালনায় বড় ছেলে’তে অভিনয় করে আবারও শীর্ষে চলে আসেন এই অভিনেত্রী। দেশ-বিদেশে ব্যাপক প্রশংসিত হয় মেহজাবীন ও জিয়াউল ফারুক অপূর্ব অভিনীত বড় ছেলে। এই নাটকে মেজবাজীনের চমৎকার অভিনয় দেখে অনেক দর্শক হুহু করে কেদেছেন। নাটকটি এতটাই জনপ্রিয় হয়েছিল যা ইউটিউবে এক সপ্তাহে ৪৫ লাখের ও বেশি বার দেখা হয়েছে।
২০১৫ সালে তিনি বড় পর্দায় পা রাখেন, স্বপন আহমেদের পরিচালনায় কল্প-কাহিনী নির্ভর চলচ্চিত্র ‘পরবাসিনী ছবিতে অভিনয়ের মাধ্যমে । এছাড়াও “ডুবোশহর“, “মায়াপুরের মায়া” চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। একে একে বিভিন্ন নাটকে অভিনয় করে জনপ্রিয়তা অর্জন করেন সমান তালে । এখন পর্যন্ত প্রায় ১৩০ টিরও বেশি নাটকে অভিনয় করেছেন তিনি এবং একাধারে টেলিফিল্ম, শর্টফ্লিম, মিউজিক ভিডিও এবং অনেকগুলো টিভিসিতে অভিনয় করেছেন। এখানে তার বিপরীতে অভিনয় করছেন নিরব। বাংলালিংক, লাক্স, এলিট গোল্ড মেহেদী, রানী গুড়া মসলা, ওমেরা এলপিজি ইত্যাদি ব্র্যান্ডের বিজ্ঞাপন করেছেন।
গ্ল্যামারকন্যা মেহজাবিন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও বেশ আলোচিত। তার ভক্ত ও ফলোয়ারও অনেক বেশি। এখন পর্যন্ত ফেইসবুকে তার অরিজিনাল পেজে প্রায় ১লক্ষ ৩৬ হাজার ফলোয়ার। ইস্টাগ্রামে ৫ লক্ষ ২৯ হাজার ফলোয়ার এবং টুইটারে ১৮ হাজরের অধিক লোক তাকে ফলো করেন। মোহজাবীনের পারিশ্রমিক নাটক প্রতি ৪০ হাজার থেকে ১ লক্ষ টাকা।
তিনি অবসরে গানশুনতে এবং বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে ভালোবাসেন। মেহজাবীনের প্রিয় অভিনেত্রী র্সূবনা মোস্তফা, মিমি। প্রিয় অভিনেতা টমক্রুজ, ফেরদৌস। প্রিয় মুভির তালিকায় রয়েছে টাইটানিক আর প্রিয় খেলোয়াড় মাশরাফি।
Information: www.tarokaloy.com/
One Comment
Nazrul Islam Nabil
Thanks