সোহেল তালুকদার, দ. সুনামগঞ্জ: জেলার ১১টি উপজেলায় রয়েছে ছোট বড় অসংখ্য হাওর, নদী নালা, খাল, বিল। এরমধ্যে দেখার হাওর অন্যতম। হাওরটি দক্ষিণ সুনামগঞ্জ, সুনামগঞ্জ সদর, ছাতক, দোয়ারাবাজার উপজেলায় বিস্তৃত। এক সময় এ হাওরে রুই, কাতলা, বোয়ল, পাবদা, শিং, মাগুর, কৈ, সোল, গজার, কাইলা, ঘনিয়াসহ বিভিন্ন সু-স্বাদু মাছ পাওয়া যেত। বর্তমানে এ মাছগুলো আর তেমন পাওয়া যায় না। অসংখ্য সু-স্বাদু মাছ এখন বিলুপ্তির পথে। দেখার হাওরসহ দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলায় ছোট বড় মোট ১৭টি হাওর রয়েছে। এই হাওরগুলোতে অসংখ্য জলাশয় রয়েছে। সেই সাথে বিভিন্ন হাওরে সরকারের উদ্যোগে মাছের প্রজনন বৃদ্ধির লক্ষ্যে করা হয়েছে অসংখ্য অভয়াশ্রম। অভয়াশ্রমসহ হাওরগুলোতে প্রতি বছরের বৈশাখ, জ্যৈষ্ঠ্য, আষাঢ়, শ্রাবণ মাসে মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞা থাকলেও মাছের পোনা নিধন চলে।
মৎস্য ব্যবসায়ীরা জানান, কয়েক দশক আগেও এ অঞ্চলে অনেক প্রজাতির মাছ ছিল। কিন্তু মানুষ সৃষ্ট নানা প্রতিবন্ধকতার কারণে এসব মাছ এখন আর দেখা যায় না। তাছাড়া বর্ষা মওসুমে নদী-খাল-বিল থেকে কারেন্ট জালের মাধ্যমে ব্যাপক হারে ডিমওয়ালা মাছ ধরার কারণে মিঠাপানির বিভিন্ন প্রজাতির মাছের অস্তিত্ব বিলীন হয়ে যাচ্ছে।
জেলে আব্দুর রহিম জানান, মাছ না মারলে ফুয়া-ফুরি-বউরে কিতা খাবাইমো। মাছ মাইরা বাজারে বেইচা যেতা টেকা পাই ঐ টেকা দি কোন মতে সংসার চালাই।
দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার যুবলীগ নেতা হাসান মাহমুদ তারেক জানান, বর্ষা মৌসুমেও বাজারে দেশীয় মাছ পাওয়া যায় না। যেগুলো পাওয়া যায় সে গুলো অনেক দাম হাঁকেন মাছ ব্যবসায়ীরা।
অন্যদিকে বাজারে ছোট ছোট দেশীয় মাছের পোনা ব্যাপক ভাবে পাওয়া যাচ্ছে। এ গুলো আবার অনেক সস্তায় বিক্রি হয়। জেলেরা প্রতিদিন এই ছোট-ছোট মাছের পোনা বিভিন্ন বাজারে বিক্রি করেন। মৎস্য স¤পদ রক্ষায় প্রশাসনের এখনই উদ্যোগ নেওয়া উচিৎ।
দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান প্রভাষক নুর হোসেন জানান, বর্ষাকালে কর্মসংস্থানের কোন ব্যবস্থা না থাকায় অনেকেই জীবিকা নির্বাহের জন্য হাওরে মৎস্য শিকার করেন। তবে সবার উচিৎ একটু সচেতন হওয়া। কারণ এটা আমাদের স¤পদ দেশীয় মাছ সবাই মিলে রক্ষা করতে হবে।
দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা সহকারি মৎস্য কর্মকর্তা লিয়াকত আলী জানান, আমরা মৎস্য বিভাগের পক্ষ থেকে উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় মাসে ২-১টি মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে আসছি। অনেক সময় হাওর এলাকায় যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণেও ব্যাহত হচ্ছে আমাদের অভিযান।