সাইফুর রহমান সোহাগ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতীম সংগঠন ছাত্রলীগের ২৮ তম নির্বাচিত সভাপতি। তিনি ২৬ জুলাই ছাত্রলীগের জাতীয় সম্মেলনে ৩ হাজার ১৩৮ ভোটের মধ্যে ২ হাজার ৬৯০ ভোট পেয়ে সভাপতি নির্বাচিত হন।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উর্বর ভূমি খ্যাত মাদারীপুরের একটি আওয়ামী পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন বঙ্গবন্ধুর আদর্শ লালনকারী ছাত্র সমাজের এ নেতা।
আওয়ামী রাজনৈতিক পরিবারে জন্মগ্রহণ করার কারণে রাজনৈতিক গুণাবণবলি তার মধ্যে ছোট বেলা থেকেই লক্ষ করা গেছে বলে জানান তার ঘনিষ্ঠ সহচর মোহাম্মদ ইমরান খান। পাঠকদের বিপুল চাহিদার কথা মাথায় রেখে ছাত্রলীগ সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগের পূর্ণাঙ্গ জীবন বৃত্তান্ত নিচে দেওয়া হল।
জন্ম: ১৯৮৬ সালের ৩১ শে আগস্ট মাদারীপুর জেলার দক্ষিন দুধখালি ইউনিয়নের আদর্শ শিক্ষক এইচ এম আবদুর রহমান (কর্মক্ষেত্র: চন্দ্রপুর এ এইচ পি উচ্চ বিদ্যালয়, চন্দ্রপুর, শরীয়তপুর।) ও সমাজ সেবী মর্জিনা খানম (পেশা:অবসরপ্রাপ্ত পরিবার কল্যাণ সহকারী, কর্মক্ষেত্র: মাহমুদপুর ইউনিয়ন, শরীয়তপুর।) ঘরে জন্ম নেন বর্তমান সময়ের লাখো ছাত্রের অভিভাবক সাইফুর রহমান সোহাগ। তিনি তিন ভাইয়ের মধ্যে দ্বিতীয়।
সাইফুর রহমান সোহাগের পারিবারের রাজনৈতিক পরিচয়: সাইফুর রহামান সোহাগের বড় ভাই মাহবুবুর রহমান সোহেল সুইডেনের লিনিয়াস ইউনিভার্সিটি থেকে এমবিএ করেছেন। তিনি সুইডেন স্বেচ্ছাসেবকলীগের সাধারন সম্পাদক। সাইফুর রহমান সোহাগেরে আরেক ভাই আরিফ হোসেন সুমন সুইডেন ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি। তার নানা মরহুম আব্দুল গনি মাতবর ছিলেন শরীয়তপুর সদর উপজেলার বিনোদপুর ইউনিয়নের আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি। বর্তমানে তার মামা আনোয়ার মাতবর ওই ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি।সাইফুর রহমান সোহাগের চাচা ডা. রেজাউর আমিন মাদারীপুর জেলা স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক।
সোহাগের শিক্ষা জীবন: সাইফুর রহমান সোহাগ মাদারীপুর মাদারীপুর ইউনাইটেড ইসলামিয়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী।ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ২০০২ সালে মাধ্যমিক পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ ৩.৫০ পেয়ে উত্তর্ণী হন। তখন মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকে চতুর্থ বিষয়ে (অপসনাল) নম্বর যোগ হতো না। উল্লেখ্য জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ওই বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী থাকা কালীন সময়ে ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে যোগ দেন।এক কথায় বলতে গেলে এ বিদ্যালয়টি এখন বাংলার ইতিহাসে থাকা বিদ্যালয় গুলোর একটি।
মাধ্যমিকের গণ্ডি পেরোনোর পর সরকারী নাজিমুদ্দিন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে মানবিক বিভাগে ভর্তি হন।২০০৪ সালে ঢাকা বোর্ডের অধীনে অনুষ্ঠিত উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় সাফল্যর সঙ্গে উত্তর্ণ হন।এ নাজিমুদ্দিন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে অধ্যয়নকালেই ছাত্রলীগের সক্রিয় সদস্য ছিলেন সাইফুর রহমান সোহাগ।
উচ্চ মাধ্যমিক উত্তর্ণী হওয়ার পর প্রথম বছরেই তিনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন এবং পরবর্তী বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষাই নিজের মেধার স্বাক্ষর রাখেন।
image
তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০০৫-০৬শিক্ষাবর্ষে ভাষা বিজ্ঞান স্নাতক(সম্মোন) শিক্ষার্থী। তিনি ভাষা বিজ্ঞান থেকে সাফল্যর সঙ্গে সম্মান শেষ করেন ২০০৯ সালে। ২০১০ সালে স্নাতকোত্তর শেষ করার পর পরই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্টে মাস্টার্স করছেন।পাশাপাশি বিদেশী ভাষার প্রতি আগ্রহ থাকার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউটে বিশ্ববিদ্যালয় জাপানিজ ভাষা কোর্সে অধ্যয়ন করছেন।
সাইফুর রহমান সোহাগের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড:
১. ২০০২-২০০৪ সালে বিএনপি-জামায়াত দুঃশাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলন সংগ্রামে, মিছিল মিটিং এ নাজিম উদ্দিন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ ছাত্রলীগের একজন সক্রিয় কর্মী।
২. ১/১১(এক এগার-তে গণতন্ত্রের মানসকন্যা জননেত্রী দেশরত্ম শেখ হাসিনার মুক্তি আন্দোলনের সময় বিক্ষোভ মিছিলে এবং মানববন্ধন ও কালো পতাকা প্রদর্শন এবং বিভিন্ন ঘরোয়া আলোচনায় একজন সক্রিয় কর্মী হিসেবে অংশগ্রহণ।
৩. সাবেক সক্রিয় কর্মী সরকারী নাজিম উদ্দিন কলেজ ছাত্রলীগ এবং ১/১১ তে দেশরতড়ব শেখ হাসিনার মুক্তি আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা পালনের স্বীকৃতি স্বরূপ সর্বকনিষ্ঠ হিসেবে জিয়া হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব গ্রহণ করা।
৪. জিয়া হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন কালে সাধারণ ছাত্রদের দাবি আদায়ে সক্রিয় থেকে সফলভাবে জিয়া হল ছাত্রলীগকে সংগঠিত করা।
৫. প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত গণ শিক্ষাকার্যক্রমে সক্রিয়ভাবে দুটি স্কুল (পথ শিশুদের জন্য) সফলতার সাথে পরিচালনা করা।বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী এর উপর বিভিন্ন হল ছাত্রলীগের নেতাকর্মী ও সাধারণ ছাত্রদের নিয়ে পাঠ চক্র পরিচালনা করা ।
৬.পরিবেশ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পরে সারা বাংলাদেশের ৫০ এর অধিক জেলা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বৃক্ষরোপণ কার্যক্রম সফলভাবে সম্পাদন ও পরিবেশ বিষয়ক বিভিন্ন সভা ও সেমিনারে অংশগ্রহণ করা।
৭. জাতির জনক বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের আন্দোলনের সকল কর্মসূচিতে অগ্রগামী ভূমিকা পালন করা্।
৮. জামাত-শিবির নিষিদ্ধের দাবিতে ও হেফাজতের নৃশংসতার বিরুদ্ধে সর্বদা সক্রিয় অংশ গ্রহণ করা।
৯. ৫ জানুয়ারি ২০১৪ সালের নির্বাচনের পূর্ব ও পরে বিএনপি-জামায়াতের অপকর্মের বিরুদ্ধে ছাত্রলীগ ঘোষিত সকল কর্মসূচিতে উপস্থিত থেকে চলমান গণতন্ত্র রক্ষার আন্দোলনের অগ্রসৈনিক হিসেবে অংশগ্রহণ করা।বঙ্গবন্ধুর আদর্শকেবুকে ধারণ করে জননেত্রী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ম শেখ হাসিনার ভ্যানগার্ড হিসেবে আমি সর্বদা প্রস্তুত থাকা।
১০. সর্বশেষ বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ২৮ তম জাতীয় সম্মেলনে নির্বাচনের মাধ্যমে বিপুল ভোটে সভাপতির দায়িত্ব পালন(চলমান)।
ছাত্রলীগ সভাপতি হওয়ার আগে দায়িত্বপ্রাপ্ত পদ: সাইফুর রহমান সোহাগ ছাত্রলীগ সভাপতি হওয়ার আগে সংগঠনের বেশ গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেন। সর্বশেষ তিনি বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। একই সঙ্গে বাগেরহাট জেলা ছাত্রলীগের দায়িত্ব প্রাপ্ত নেতা ছিলেন। বিএনপি-জামাত শাসনামলে ছাত্রলীগের দুঃসময়ে কর্মী হিসেবে নিজেকে প্রমাণ করে ২০০৯ সালের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তি যোদ্ধা জিয়া হলের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন ।
রাজনৈতিক উদ্দেশ্য: সকল রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণের জন্য উদ্দেশ্য থাকা জরুরি।সেক্ষেত্রে ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগেরও উদ্দেশ্য রয়েছে।
সাইফুর রহমান সোহাগের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নিম্ন রুপ –
হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সোনার বাংলা গঠনে ছাত্র সমাজকে শিক্ষা শান্তি প্রগতির পতাকাতলে এনে গণতন্ত্রের মানস কন্যা বিশ্ব শান্তির অগ্রদূত বঙ্গবন্ধু তনয়া মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ম শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করা। দেশ ও জাতির অর্থনৈতিক ও গণতন্ত্রের মুক্তি, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য রক্ষা, অসাম্প্রদায়িক সমাজ প্রতিষ্ঠা এবং দারিদ্রমুক্ত বাংলাদেশ গঠনে রূপকল্প ২০২১ বাস্তবায়নে গণতন্ত্রের মানস কন্যা বিশ্ব শান্তির অগ্রদূত জননেত্রী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ম শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করা।
লেখকঃ বিল্লাল হাওলাদার
সভাপতি, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ সিঙ্গাপুর শাখা